লোকসভা নির্বাচনের তারিখ যত এগিয়ে আসছে ততই আগ্রাসী হয়ে উঠছে শাসক এবং বিরোধী শিবির। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতারা যেমন চড়া সুরে আক্রমণ করছেন তেমনই বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলির নেতা–নেত্রীরাও সুর চরমে তুলছেন। এবার সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঠিকানা জেল হবে বলে মন্তব্য করলেন লালুপ্রসাদ যাদবের বড় মেয়ে মিসা ভারতী। ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রীকে জেলে পাঠানো হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মিসা। আর তা নিয়ে জাতীয় রাজনীতির অলিন্দে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে এই মন্তব্যে।
কোনও সাধারণ নেতাকে নয়। একেবারে প্রধানমন্ত্রীকে এমন হুমকি দেওয়ায় চটেছে বিজেপিও। কারণ ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় এলে একেবারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জেলে পাঠানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেডি) নেত্রী তথা লালুপ্রসাদ যাদবের কন্যা মিসা ভারতী। বিহারের পাটলিপুত্র লোকসভা কেন্দ্রের এই প্রার্থী সাধারণ মানুষের উদ্দেশে বার্তা দিয়ে বলেন, ‘একবার বিরোধী ইন্ডিয়া জোটকে ক্ষমতায় আসার সুযোগ দিন। বিজেপির সব নেতারাই একে একে জেলে যাবেন। আর শুরুটা হবে মোদীকে দিয়ে।’
আরও পড়ুন: একের পর এক মহিলার বুকে ছুরির আঘাত আততায়ীর, বারাসতের ঘটনায় গ্রেফতার এক
এই মিসা ভারতী এখন রাজ্যসভার সদস্য। কিন্তু ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে মিসা ভারতী বিহারের পাটলিপুত্র লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গত দু’বারের লোকসভা নির্বাচনে মিসা এই একই আসন থেকে পরাজিত হয়েছিলেন। তবে খুব সামান্য ব্যবধানে। মিসার বক্তব্য, ‘প্রধানমন্ত্রী ক্রমাগত আমাদের পরিবারকে নিশানা করে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন। কিন্তু তাঁকে নীরব থাকতে দেখা যায় ইলেক্টরাল বন্ড নিয়ে। জানেন এটা কত বড় দুর্নীতি? যদি দেশের মানুষ ইন্ডিয়া জোটকে সুযোগ দেয় তাহলে প্রধানমন্ত্রী এবং সমস্ত বিজেপি নেতা জেলে থাকবেন।’
মিশার এই মন্তব্যের পরই বিজেপি নেতারা রে রে করে নেমে পড়েছেন। বিজেপির বহু নেতাই দাবি করেন, মিশার এই আত্মবিশ্বাস আসলে ‘ছোট মুখে বড় কথা’। বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক বিনোদ তাওড়ে বলেন, ‘প্রচারে বেরিয়ে এভাবে আক্রমণ করা একেবারেই উচিত নয়। মিসা প্রচারের ভাবধারাকে ক্ষুণ্ণ করছেন। যাঁদের নেতারা দুর্নীতি মামলায় জেলে, তাঁরা আবার প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কথা বলেন। আসলে বিরোধীদের প্রচারের আর কোনও জায়গা নেই। তাই তাঁরা মোদীর নাম নিয়ে এবার সামনে আসার চেষ্টা করছে।’ প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেছেন, ‘যদি আপনি ভেবে থাকেন এই হুমকিতে প্রধানমন্ত্রী এবং বিজেপি নেতারা ভয় পেয়ে যাবেন তাহলে মনে রাখবেন তদন্ত চলবে আর বড় আকারে চলবে। সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’