একুশের নির্বাচন থেকে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন। এই বড় সময় ধরে রাজ্য–রাজনীতি এবং জাতীয় রাজনীতিতে দলবদল করতে দেখা গিয়েছে বহু নেতাকে। তবে এই দলবদলের ক্ষেত্রে এবং ঠেকাতে সংবিধান সংশোধন করতে চায় তৃণমূল কংগ্রেস। তাই লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি হেরে গেলে এবং ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় এলে এই বদলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও এই বিষয়টিকে নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকেই পাল্টা কটাক্ষ করেছে সিপিএম–বিজেপি। আসলে দলবদল করতেই পারেন যে কেউ। কিন্তু সেক্ষেত্রে মানতে হবে নিয়ম। সেটাই সংবিধানে আইন করে নিয়ে আসতে চায় তৃণমূল কংগ্রেস।
এদিকে বহু বিধায়ক–সাংসদকে দেখা গিয়েছে দল ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। আবার তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়েও বেশ কিছু বিধায়ক–নেতা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। ২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার রাজ্যে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর সিপিএম, কংগ্রেস এবং বিজেপি ছেড়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। তবে এবার লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে দলবদল বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। পার্টির নির্বাচনী ইস্তেহার ‘দিদির শপথ’ বলে যা উল্লেখ করা হয়েছে তাতে বিষয়টি রয়েছে। ‘দলত্যাগ বিরোধী আইনের নিয়মগুলি আরও সুস্পষ্ট এবং কাযর্কর করে তুলতে আমরা দশম তফসিল সংশোধন করব।’ এই কথা লেখা রয়েছে। তবে বিজেপি এভাবেই অপারেশন লোটাসের মাধ্যমে একাধিক রাজ্যে সরকার গঠন করার পই সংবিধান সংশোধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
আরও পড়ুন: অন্ধকারে ডুবছে ব্যস্ততম গড়িয়াহাট ব্রিজ, ১৫ দিন ধরে আলো জ্বলছে না, কারণ কী?
অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসে যাঁরা এসেছেন তাঁদের আসা–যাওয়ার উপর সরকার গঠন করার বিষয় ছিল না। এই দলবদলে তৃণমূল কংগ্রেসের শক্তিবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র। কিন্তু বিজেপির ক্ষেত্রে তা ঘটেনি। বিজেপি বিধায়ক–সাংসদ ভাঙিয়ে অন্য রাজ্যে সরকার গঠন করেছে। সুতরাং পার্থক্য একটা আছেই। তিনবার যথেষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তারপরেও বিরোধী বিধায়কদের দলে নিয়েছে ঘাসফুল শিবির। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বিজেপির বহু বিধায়ক আছেন যাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। এবারের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হওয়ায় বিজেপির তিনজন বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়েছেন।
এই নিয়ে জোর চর্চা সুরু হয়েছে। যার জন্য রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘স্বাধীন ভারতের রাজনীতিতে সবচেয়ে বড় তামাশা তৃণমূল কংগ্রেসের এই বক্তব্য। এই আইন চালু হলে বাকি দলটাই থাকবে না।’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা দমদম লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী সুজন চক্রবর্তীর কথায়, ‘তৃণমূল এ কথা বলছে শুনলে ঘোড়াও হাসবে। এ রাজ্যে পঞ্চায়েত থেকে সংসদ পর্যন্ত সর্বত্র লোভ আর ভয় দেখিয়ে দল ভাঙিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসই। আমাদেরই এক বিধায়ক তৃণমূল কংগ্রেসে যাওয়ার পর ২৫ বার শুনানিতে গিয়েছিল। কিন্তু তাঁর সাজা হয়নি।’