লোকসভা নির্বাচন এখন দুয়ারে। ১ এপ্রিল থেকে রাজ্যের মা–বোনেদের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে মাসিক ভাতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে গতকাল ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকায় টাকা ঢোকেনি। আজ, মঙ্গলবার বাংলার মা–বোনেরা এই প্রকল্পের টাকা পেয়ে গিয়েছেন। আর টাকা হাতে আসতেই মেতে উঠেছেন মা–বোনেরা। কারণ এবার থেকে মাসিক হাজার টাকা পাচ্ছেন সাধারণ মহিলারা। আর তফসিলি জাতি–উপজাতির মহিলারা ১২০০ টাকা করে ভাতা পাচ্ছেন। আর তাই আজ লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে অর্থ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে অকাল হোলিতে মেতে উঠল সন্দেশখালি। যেখানে একমাস আগেই নারী নির্যাতনের অভিযোগ তুলে বিজেপি পথে নেমেছিল। এমনকী এখান থেকেই গৃহবধূ রেখা পাত্রকে টিকিট দিয়ে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী করেছে বিজেপি। সেখানে ওই গ্রামের মহিলারা আবির খেলে আনন্দে মাতলেন।
এদিকে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট লোকসভার অন্তর্গত সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতো, সন্দেশখালি দু’নম্বর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য দিলীপ মল্লিক, দু’নম্বর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সহ–সভাপতি মহেশ্বর সর্দার, আদিবাসী নেত্রী অষ্টমী সর্দারদের কাছে পেয়ে শঙ্খধ্বনি–সহ নাচ–গানের মধ্য দিয়ে সবুজ আবিরে একে অপরকে রাঙিয়ে দিলেন। একদা এরাই ছিলেন প্রতিবাদী। আর আজ, মঙ্গলবার বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে জিতলে টাকিতে থমকে থাকা কাজগুলি সম্পূর্ণ করবো বললেন, বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র। কিন্তু তাতে থামেনি অকাল হোলি।
আরও পড়ুন: বাংলায় বিশেষ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করল নির্বাচন কমিশন, আর কোথায় একই পদক্ষেপ?
অন্যদিকে এই অকাল হোলি খেলার ছবি ধরা পড়ে সন্দেশখালি গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তরদ্বাড়ির জঙ্গল, কর্ণখালির গ্রামগুলিতে। প্রতিবাদীরা জানান, আমাদের তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আন্দোলন ছিল না। দলের তিন নেতা শেখ শাহজাহান, শিবপ্রসাদ হাজরা, উত্তম সর্দারের বিরুদ্ধে আন্দোলন ছিল। ওরা অত্যাচার করে আমাদের জমি নিয়ে নিত। লিজের বকেয়া টাকা দেয়নি। এখ জেলে শাস্তি পাচ্ছে। আর এখানে শান্তি ফিরেছে। আমরা আগেও তৃণমূলের পাশে ছিলাম, এখনও আছি। একদিন আগেই তাই এখানে দাঁড়িয়ে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলাম বলেছিলেন, শাহজাহান চ্যাপ্টার ক্লোজড। এখন সেটা স্পষ্ট হল।
এখানে গ্রামের মহিলারা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের দ্বিগুণ টাকা পেয়ে খুব খুশি। কয়েকদিন আগেই দু’বছরের বকেয়া ১০০ দিনের কাজের টাকাও পেয়েছেন তাঁরা। তাই সন্দেশখালি এলাকার মহিলাদের বক্তব্য, ‘তৃণমূলের সঙ্গে আগেও ছিলাম, এখনও আছি, ভবিষ্যতেও থাকবো। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে কথা দিয়েছিলেন, সেই কথা রাখলেন। তাই আজ সবাই আনন্দ উৎসবে মেতে উঠেছি। আমরা শান্তিতে আছি।’ বিধায়ক সুকুমার মাহাতোর বক্তব্য, ‘সন্দেশখালি–সহ বসিরহাটের যেখানেই আমরা প্রচার করতে যাচ্ছি, আমাদের সাদরে গ্রহণ করা হচ্ছে। আজকে থেকে বর্ধিত লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা মিলছে। তাই এখানে গ্রামের মহিলারা আবির খেলে এটাকে উদযাপন করলেন।’ আজ উত্তর ২৪ পরগনা টাকির প্রাচীন কুলেশ্বরী কালী মন্দিরে পুজো দিয়ে জনসংযোগের কাজ শুরু করেন রেখা পাত্র। তাঁর কথায়, ‘সন্দেশখালিতে দিনের পর দিন মা–বোনেরা অত্যাচারিত হয়েছে। সারাজীবন আমি তাঁদের পাশে থাকব।’ যদিও তাঁর স্বাস্থ্যসাথী কার্ড আছে।