মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক কোন দল কতটা নিজেদের দিকে নিয়ে আসতে পারে সেটা নিয়ে প্রতিবারই প্রতিযোগিতা চলে। রীতিমতো দড়ি টানাটানি চলে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্য়ে। তবে এবার কিছুটা ভিন্ন ছবি। শ্রী শ্রী শান্তিহরি গুরুচাঁদ মতুয়া ফাউন্ডেশন নামে একটি সংগঠন রাজ্যের তিনটি আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে।
বনগাঁ, বারাসত ও কৃষ্ণনগর এই তিন আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে শ্রী শ্রী শান্তিহরি গুরুচাঁদ মতুয়া ফাউন্ডেশন। ওই তিন কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থী হিসাবে লড়বেন তাঁরা। ওই তিন কেন্দ্রে যাঁদের প্রার্থী দেওয়া হচ্ছে তাঁরা হলেন সুমিতা পোদ্দার, সইফুদ্দিন মণ্ডল ও সঞ্জিত বিশ্বাস। ইতিমধ্য়েই তাঁরা প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে। তবে এখানেই শেষ নয়, রানাঘাট ও বর্ধমান পূর্ব আসন থেকেও প্রার্থী দেওয়ার কথা ভাবছেন তারা।
বাংলার বিভিন্ন এলাকাতেই মতুয়া ভোট রয়েছে। সেই মতুয়া ভোট কোনদিকে যাবে তা নিয়ে নানা সময়ে নানা দড়ি টানাটানি চলে। তবে এবার সিএএ লাগু হয়েছে। এর জেরে মতুয়া সমাজও এনিয়ে কিছুটা দ্বিধায় রয়েছেন। তবে এবার একেবারে তাৎপর্যপূর্ণভাবে মতুয়া সংগঠন প্রার্থী দিচ্ছে। কিন্তু ভোটবাজারে তারা কতটা প্রভাব ফেলতে পারে সেটাও দেখার।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুকেশ চৌধুরী সংবাদমাধ্য়মে জানিয়েছেন, ভোট উৎসবের সময় বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপির আমাদের কথা মনে পড়ে। উৎসব পেরিয়ে গেলে আর আমাদের কথা মনে পড়ে না। সেই সঙ্গেই তিনি জানিয়েছেন, ঠাকুর পরিবারের সদস্যরা তৃণমূল ও বিজেপিতে গিয়ে দলদাসে পরিণত হয়েছেন…
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, নানা ঘটনা পরম্পরায় ঠাকুরনগরও কার্যত দ্বিধাবিভক্ত। সেখানেও রাজনৈতিক চাপানউতোর একেবারে চরমে ওঠে প্রতিবারই। আর সেই পরিস্থিতিতে এবার আলাদা করে প্রার্থী দেওয়ার কথা জানিয়েছে শ্রী শ্রী শান্তিহরি গুরুচাঁদ মতুয়া ফাউন্ডেশনের। কিন্তু মূল স্রোতের রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে এই শ্রী শ্রী শান্তিহরি গুরুচাঁদ মতুয়া ফাউন্ডেশন কতটা পেরে উঠবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। সেই সঙ্গেই প্রশ্ন উঠছে তারা প্রার্থী দেওয়ার জেরে ভোট কাটাকুটি হতে পারে। যার জেরে কাদের কতটা সুবিধা হবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
এদিকে সম্প্রতি হাতুড়ি দিয়ে তালা ভেঙে বড়মা বীণাপানিদেবীর ঘরে ঢোকার অভিযোগ উঠেছিল বনগাঁর বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে। তিনি দাবি করেছিলেন, বড়মার ঘর যেন হেরিটেজ ঘোষণা করা হয়। নাম না করে মমতাবালা ঠাকুরকে তোপ দেগে শান্তনু অভিযোগ করেছিলেন, এই ঘর কারও একার অধিকারে থাকা ঠিক নয়। শান্তনুর বক্তব্য, 'এই ঘরের সঙ্গে ঠাকুরনগরের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে। এটা হেরিটেজ হওয়া উচিত, কারও কুক্ষিগত থাকা ঠিক নয়। যদি ভক্তরা চান, তাহলে এই ঘরকে আমরা হেরিটেজ হিসেবে মান্যতা দেব। সেই সময় সবার জন্যেই এই ঘর খোলা থাকবে। আমরা চাই এই ঘর হেরিটেজ হোক।'
এসবের মধ্য়ে এবার নির্দল প্রার্থী দেবে মতুয়াদের সংগঠন।