শ্রাবণ মাসে আমিষ খেয়ে ভিডিয়ো দেখান বিরোধীরা। একটি অংশের ভোটব্যাঙ্ক নিশ্চিত করতে 'দেশের মানুষের' ভাবাবেগে আঘাত দেন তাঁরা। এমনই অভিযোগ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার জম্মু ও কাশ্মীরের উধমপুরের জনসভা থেকে মোদী বলেন, ‘কাউকে কোনও কিছু খাওয়ার ক্ষেত্রে আটকায় না আইন। মোদীও কাউকে কিছু খেতে বারণ করেন না। প্রত্যেকেরই স্বাধীনতা আছে যে যখন ইচ্ছা হবে, তখন নিরামিষ খাবেন; যখন ইচ্ছা হবে, তখন আমিষ খাবেন। কিন্তু এইসব লোকেদের উদ্দেশ্য আলাদা হয়।’
কী উদ্দেশ্য হয়, সেটাও ব্যাখ্যা করেন মোদী। তিনি দাবি করেন যে বিরোধীদের মানসিকতা মুঘলদের মতোই। মুঘলরা যেমন মন্দির না ভাঙলে তৃপ্তিলাভ করতেন না, তেমনই বিরোধীরা শ্রাবণ মাসে আমিষ খাওয়ার ভিডিয়ো দেখাতে না পারলে সন্তুষ্ট হন না। তাঁর কথায়, যখন মুঘলরা এখানে আক্রমণ করত, তখন স্রেফ রাজাকে পরাজিত করে ওরা সন্তুষ্ট হতে পারত না। যতক্ষণ না মন্দির ভাঙত, যতক্ষণ না ভক্তির জায়গার হত্যা করত, ততক্ষণ ওরা সন্তুষ্ট হতে পারত না। ওটাতেই ওরা মজা পেত।'
মোদী আরও বলেন, ‘সেরকমভাবেই শ্রাবণ মাসে ভিডিয়ো দেখিয়ে মুঘল আমলের লোকজনের মানসিকতা তুলে ধরে দেশের মানুষকে বিরক্ত করতে চান এবং নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক মজবুত করতে চান। ভোটব্যাঙ্কের জন্য (মানুষকে) বিরক্ত করতে চান। আপনারা কাদের বিরক্ত করতে চান? এই মানসিকতা থেকে নবরাত্রির সময় আমিষ খাওয়ার ভিডিয়ো দেখিয়ে মানুষের ভাবাবেগে আঘাত দিয়ে কাকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করছেন?'
প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, তিনি আজ যে কথাগুলো বললেন, সেটার জন্য তাঁকে বিরোধীরা আক্রমণ শানাবেন। ‘গালিগালাজ’ করবেন। কিন্তু সেটার পরোয়া করেন তিনি। মোদী বলেন, 'আমি জানি, আমি এটা বলার পরে গালিগালাজের বোমাবর্ষণ শুরু করবেন এইসব লোকজন। আমরা পিছনে লেগে পড়বেন। কিন্তু কোনও বিষয় যখন সীমা অতিক্রম করে যায়, তখন গণতন্ত্রে আমার দায়িত্ব থাকে যে দেশকে সঠিক জিনিসটা বলি। আমি সেই দায়িত্ব পালন করছি।’
মোদী এমন একটা সময় সেই মন্তব্য করেছেন, যখন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের মাছ খাওয়া নিয়ে আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি। গত ৮ এপ্রিল একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন তিনি। তাতে মাছ খেতে দেখা যায়। আর তা নিয়ে তেজস্বীকে আক্রমণ শানায় বিজেপি। পালটা কমলালেবু খাওয়ার ভিডিয়ো পোস্ট করে প্রশ্ন করেন বিহারের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী।
যদিও আরজেডি নেতাদের দাবি, যেদিন মাছ খেয়েছিলেন তেজস্বী, সেদিন নবরাত্রি শুরু হয়নি। অন্যদিকে, গত বছরে তেজস্বীর বাবা লালুপ্রসাদ যাদবের বাড়িতে গিয়ে স্পেশাল খাসির মাংস খেয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। আর ‘শ্রাবণ মাসে’ খাসির মাংস খাওয়ায় আক্রমণ শানিয়েছিল বিজেপি।