দাদা বরকতদার বাড়িতে যাব?
আসুন, আসুন। এই সোজা রাস্তা ধরে যান। সেখান থেকে কিছুটা গিয়ে রথবাড়ি মোড়। এরপর সোজা এগোতে থাকুন। কোতোয়ালি…
আসলে মালদায় আপনি যেখানেই যান না কেন আজও সর্বত্র ভীষণভাবে যে মানুষটা আছেন তিনি আর কেউ নন গনি খান চৌধুরী। এখনও অনেকেই বরকতদার নাম শুনলে কপালে হাত ঠেকান। আসলে বরকত দা কে ঘিরে বছরের পর বছর ধরে একটা মিথ যেন আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলেছে মালদাকে। এই মধুর ও শ্রদ্ধার বন্ধন ছিন্ন হওয়ার নয়।
আবু বরকত আতাউর গনি খান চৌধুরী। মালদা আর বরকতদা এই নামদুটো যেন একে অপরের পরিপূরক। এবারও ভোট এসেছে ভোটের মতোই। কংগ্রেসের একদা গড় বলে পরিচিত মালদায় এখন পতপত করে উড়ছে তৃণমূল আর বিজেপির পতাকা।
মালদায় ভোট আর কয়েকদিন বাদে। কোতোয়ালি ভবনে সেই আগের মতো ভিড় নেই। কংগ্রেসের পার্টি অফিস আর গমগম করে না। একাধিক গ্রাম রয়েছে যেখানে হাত চিহ্ন আর চোখে পড়ে না। কিন্তু তবুও বরকত গনি খান চৌধুরীর নাম শুনলে এখন রাজনীতির উর্ধে উঠে কথা বলেন অনেকেই।
টোটো চালক থেকে ফাস্ট ফুড বিক্রেতা, বিড়ি বাঁধছেন যে মহিলা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, কিংবা প্রবীন কংগ্রেস কর্মী সবার মুখে আজও সেই বরকত গনি খান চৌধুরী।
২০০৬ সালের ১৪ এপ্রিল প্রয়াত হয়েছিলেন বরকত গনিখান চৌধুরী। কিছু সময়ের জন্য তিনি রেলমন্ত্রী ছিলেন। বলা ভালো তাঁকে প্রথম বাঙালি রেলমন্ত্রী বলেও গণ্য করা হয়। আর গনি খান রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মালদা যে উন্নয়নের ছোঁয়া পেয়েছিল যত মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছিল তা আজও মানুষের মুখে মুখে ফেরে।
চৌদুয়ারে গ্রামে কথা হচ্ছিল একাধিক প্রবীণ কংগ্রেস নেতার সঙ্গে। কথায় কথায় উঠল গনি খান চৌধুরী। উজ্জ্বল হয়ে ওঠে মুখগুলো। কংগ্রেসের প্রাক্তন প্রধানের স্বামী বলেন, জানেন তো বরকতদা কখনও বলতেন না আমার মুখ দেখে ভোট দাও। বলতেন প্রার্থী দেখে ভোট দাও। ব্লক কংগ্রেস সভাপতি নিমাই বসাক হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে বলেন, বরকতদা যে পথ দেখিয়েছেন সেই পথের অনুসারী আমরা।
গ্রাম থেকে বেরোবার পথেই তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে কয়েকজন। বরকত গনি খান চৌধুরীর বাড়ির কথা জিজ্ঞাসা করতেই এগিয়ে আসেন কয়েকজন যুবক। এরপরই গড়গড় করে বলে চলেন কোতোয়ালি ভবনের ঠিকানা। আসলে গনি খানের মৃত্যুর পরে মহানন্দা দিয়ে অনেক জল গড়িয়ে গিয়েছে। মোদী হাওয়াও বয়েছে মালদা জুড়ে। কিন্তু ভোট এলেই কোথাও যেন বইতে থাকে গনি হাওয়া। সেই হাওয়া কংগ্রেস তরী ভাসাতে পারবে কি না, ইভিএম ভরবে কি না সেটা পরের কথা। কিন্তু গনির অবদান মানতে দুবার ভাবেন না মালদহবাসী।