আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে রাজস্থান। এই আবহে শাসকদল কংগ্রেসকে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানালেন বিজেপি নেত্রী তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে। কংগ্রেসকে 'মহিলা বিরোধী দল' আখ্যা দিয়ে শনিবার বসুন্ধরা বলেন, 'রাজস্থানের মহিলারা কংগ্রেসকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য অপেক্ষা করছেন।' এখানেই থেমে না থেকে বসুন্ধরা রাজে মহাভারতের উদাহরণ তুলে ধরে আরও বলেন, 'দ্রৌপদীর মতো কৌরবরা ঘিরে ধরেছে আমায়। তবে কৃষ্ণ আমাকে রক্ষা করবেন।' এদিকে ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে বসুন্ধরা দাবি করেন, 'আমি রাজস্থান ছেড়ে কোথাও যাব না। এই রাজ্যের মানুষের সেবা করতে থাকব আমি।' উল্লেখ্য, রাজস্থানে গত বিধানসভা নির্বাচনে হারের পর থেকেই রাজ্য রাজনীতি থেকে বসুন্ধরাকে 'সরানোর' চেষ্টা করেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এমনকী এবারের নির্বাচনের জন্য গঠিত কমিটি থেকেও 'ব্রাত্য' থেকেছেন বসুন্ধরা। তবে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
গতকাল বসুন্ধরা রাজে নিজের বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ হওয়ার পরে জয়পুরে তাঁর বাসভবনে রাজ্যের মহিলাদের একটি সভার আয়োজন করেছিলেন বসুন্ধরা। সেখানে রাজের হাতে রাখি বেঁধে দেন মহিলারা। নারী সংরক্ষণ বিল পাশ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ধন্যবাদ জানিয়ে রাজে বলেন যে মহিলাদের সংরক্ষণ দিয়ে মোদী দেখিয়ে দিয়েছেন যে নারীদের অংশগ্রহণ ছাড়া দেশ গড়ার স্বপ্ন অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। রাজে বলেন, 'এখানে উপস্থিত মহিলাদের উদ্দীপনা দেখে এটা স্পষ্ট যে মহিলারা নারীবিরোধী কংগ্রেস সরকারকে উৎখাত করবে।'
মহাভারতের উল্লেখ করে রাজে বলেন যে যখন ভগবান কৃষ্ণের আঙুল কেটে যাওয়ার পর দ্রৌপদী তাঁর শাড়ি ছিঁড়ে তাঁর আঙুলে বেঁধেছিলেন। পরে কৃষ্ণ তাঁকে কৌরবদের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন। আমিও কৃষ্ণের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে আপনাদের সেবা করব এবং প্রতিটি রাজস্থানীর অধিকারের জন্য লড়াই করব। এমন রাজস্থান তৈরি করব, যেখানে মহিলারা একসঙ্গে কাজ করতে পারবেন।
এদিকে সম্প্রতি রাজস্থানে বসুন্ধরার সঙ্গে গেহলটের একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। তা নিয়ে বসুন্ধরা দাবি করেন, জয়পুরে সংবিধান ক্লাবের উদ্বোধনের পর সেই ছবি তোলা হয়। এদিকে দীর্ঘদিন ধরেই গেহলট-বসুন্ধরার গোপ আঁতাতের অভিযোগ তুলে এসেছিলেন কংগ্রেস নেতা সচিন পাইলট। এই আবহে সেই ছবি নিয়ে বেশ জল্পনা তৈরি হয়েছিল। তবে সেই ছবির সঙ্গে রাজ্য রাজনীতির সমীকরণের কোনও যোগ নেই বলেই দাবি করেছেন বসুন্ধরা। পাশাপাশি দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন, রাজস্থানে থেকেই দলকে নেতৃত্ব দিতে চান তিনি। বসুন্ধরার মতো বর্ষীয়ান এক নেতাকে নিয়ে তাই মাথা ব্যথা শুরু হবে মোদী-নড্ডাদের।