বৃহত্তর ঐক্যের স্বার্থে বড় শরিককে নমনীয় হয়ে আসন–রফার অনুরোধ করল বাকি শরিকরা। হ্যাঁ, সিপিএমকে এই কথাই জানিয়েছে বাকি শরিকরা। বিশেষ করে জোটের স্বার্থে তাদের পুরনো ভাগের আসন ছাড়তে রাজি বামফ্রন্টের শরিকরা। কিন্তু সংখ্যার দিক থেকে ‘নমনীয়’ হলেও নিজেদের পুরনো ঘাঁটি থেকে একেবারে হাত তুলে নিতে তারা নারাজ। সেখানে দলের সাংগঠনিক অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার দায় রয়েছে। এই যুক্তিতে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন–রফার অনুরোধ জানালেন শরিক নেতারা।
সূত্রের খবর, এবারের বিধানসভা নির্বাচনে ১৩০টি আসনে লড়তে চেয়ে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে তালিকা পাঠিয়েছে কংগ্রেস। তাদের যুক্তি, পাঁচ বছর আগে বিধানসভা ভোটের সময়ে বিজেপির প্রবল অস্তিত্ব ছিল না। ইদানিং বিজেপির কাছে অনেকটা জমি হারিয়েছে বামেরা। তাই বামেরা আরও বেশি আসন ছেড়ে কংগ্রেসকে লড়তে দিক। আর বামফ্রন্ট নেতৃত্বের যুক্তি, ভোটের নিরিখে বাম–কংগ্রেস উভয় পক্ষই গত কয়েক বছরে ধাক্কা খেয়েছে। কিন্তু জেলাস্তরে আন্দোলনের ধারাবাহিকতার প্রশ্নে বামেরা কংগ্রেসের চেয়ে বহু এগিয়ে। আসন-রফার সময়ে এই বাস্তবতাও মাথায় রাখা উচিত।
শুক্রবার আলিমুদ্দিনে ফব, আরএসপি, সিপিআই নেতৃত্বের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বসেছিলেন বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্ররা। বৈঠক হয়েছে সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের সঙ্গেও। শরিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠকে জানানো হয়েছে, গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ৯২টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল। তার মধ্যে ১৭টি আসনে কোনও না কোনও বাম দলেরও প্রার্থী ছিল। এবার কংগ্রেসের ১৩০ আসনের দাবি যদি কম করে ১১০ আসনও করা যায়, তাহলে আগের ১৭ এবং এবারের বাড়তি ১৮ মিলে এমন ৩৫টি আসন থাকবে, যেখানে দু’পক্ষেরই দাবি আছে।
উল্লেখ্য, আলিপুরদুয়ার, মুর্শিদাবাদ বা পুরুলিয়ার মতো জেলায় বরাবর বাম শরিকরা বেশি আসনে লড়াই করে। ওই জেলাগুলিতেই সাংগঠনিক শক্তির কথা বলে কংগ্রেস প্রায় সব আসন দাবি করে বসেছে। ফব, আরএসপি, সিপিআই নেতারা বিমানবাবুর কাছে দাবি জানান, ওই জেলাগুলিতে বামেদের অল্প কিছু আসন ছাড়ার জন্য রাজি করাতে তিনি কংগ্রেসের সঙ্গে কথা বলুন। বিমানবাবু তাঁদের জানান, বৈঠকে গোটা বিষয়টিই আনা হবে।