খড়্গপুরের জনসভা থেকে বাংলার উন্নয়নকে কটাক্ষ করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম ডাউনের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। দু’দিন আগেই প্রায় ৫৫ মিনিট ডাউন হয়ে গিয়েছিল। সেই প্রসঙ্গকে সামনে রেখে বাংলার উন্নয়ন ৫৫ বছর পিছিয়ে গিয়েছে বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে তুলোধনা করেন তিনি। যার জবাব ঠিক একইদিনে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দাসপুরের সভা থেকে ফিরিয়ে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভা নির্বাচন শুরুর আর ৬ দিন বাকি থাকতে এই আক্রমণ ও তার জবাব রাজনৈতিক উত্তাপকে বাড়িয়ে দিয়েছে।
ঠিক কী বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী? জনসভা থেকে তৃণমূল কংগ্রেস সরকারকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘শুক্রবার রাতে ৫০–৫৫ মিনিটের জন্য হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ডাউন হয়ে গিয়েছিল। মানুষ বিপাকে পড়ে গিয়েছিলেন। আর বাংলায় তো ৫০–৫৫ বছর ধরে উন্নতিই আটকে রয়েছে। পরিবর্তন আনার জন্য আপনাদের অস্থিরতা আমি বুঝি। দিদি বলছেন খেলা হবে। কিন্তু বাংলা বলছে খেলা শেষ হবে। এবার খেলা শেষ হবে, উন্নয়ন শুরু হবে। দিদির কাছে হিসেব চাইলে তিনি শুনতে পান না। আমফানের হিসেব চাইলে দিদি রেগে যান। প্রতিবাদ করলেই জেলে ভরে দেন। কেন্দ্রের প্রকল্প রাজ্যে চালু করতে দিচ্ছেন না দিদি।’
এই আক্রমণের জবাব দিতে সময় নেয়নি তৃণমূল কংগ্রেস। সরাসরি পশ্চিম মেদিনীপুরের রোড–শো থেকে প্রধানমন্ত্রীকে পাল্টা উত্তর দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক ডাউন হওয়ার খবর প্রধানমন্ত্রীর কাছে থাকে। অথচ অনাহারে দেশে লোক মরলেও তাঁর কাছে খবর থাকে না। সারা দেশের ১৪ শতাংশ নারী নির্যাতন হয় বিজেপি শাসিত রাজ্যে, এই খবর তাঁর কাছে থাকে না। অপরিকল্পিত লকডাউনের জন্য শ’য়ে শ’য়ে মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ট্রেনে ফেরার সময় জল–খাবার না পেয়ে মানুষের মৃত্যু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে খবর নেই। দলিত মেয়ের মৃত্যুর খবরও রাখেন না নরেন্দ্র মোদী। কারণ তাঁদের লড়াইটা হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুকে। আর আমাদের লড়াইটা মানুষকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে–ময়দানে।’
উল্লেখ্য, ভারতীয় সময় শুক্রবার রাত ১০টা ৫৫ মিনিটে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার পরিষেবা সারা বিশ্বে প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে সাময়িক ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। সেটাকেই কাজে লাগিয়ে আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রী। আর তার প্রেক্ষিতে অভিষেকের কথায়, ডবল ইঞ্জিন সরকার মানে বিজেপির আরও চুরি। বিজেপির সভায় লোক হচ্ছে না। আর তারা মানুষের খবর রাখে না। দেশে বহু মানুষ অনাহারে মারা যাচ্ছেন। খবর নেই প্রধানমন্ত্রী কাছে।