তারকাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আগ্রহ থাকে বৈকি। তারকাদের পারিবারিক জীবনে উঁকি-ঝুঁকি দেওয়ার সুযোগ ছাড়েন না অনেকেই। আর তিনি যদি রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো ব্যক্তিত্ব হন তাহলে তো কথা-ই নেই। সম্প্রতি আজতক বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ব্যক্তিগত জীবনের নানান টুকিটাকি বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন রূপা।
আজতক বাংলা-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের স্বাকীর করে নেন যে তিনি 'বদরাগী', 'ঠোঁটকাটা'। রূপার কথায়, ‘অনেক সময়ই আমি ভাবি কিছু বিষয় বলব না, হয়ত ৬ মাস ধরে ভাবছি বলব না। তারপর একদিন হয়ত বিরক্ত হয়ে বলে দি। তখন মনে হয় বেশ করব, বলব।’
সাক্ষাৎকারে নিজের ডেইলি রুটিনের কথা জানান রূপা। বলেন, তিনি 'আর্লি রাইজার'। কোনও দিন সাড়ে ৬, কোনওদিন আবার সাড়ে ৭টায় ওঠেন। সংসারের নানান কাজ থাকে, সেগুলি সারেন। খুব ঘুমোতে ইচ্ছা করলে সাড়ে ৮টায় ওঠেন। বছরে এক আধবার সাড়ে ৯টাও হয়। সাক্ষাৎকারে নিজের ছোটবেলার স্মৃতিতে ফিরে গিয়েছিলেন রূপা। জানান, ছোটবেলা আর্থিক কষ্টে কেটেছে, তবে ভালভাবেই কাটিয়েছেন। রূপা জানান, তাঁর জন্ম রাসবিহারীতে মাতৃসদন হাসপাতালে। জানান জীবনে প্রায় ২০ বার তাঁর বাসস্থান বদল হয়েছে। খুব ছোটতে যাদবপুর সুলেখার কাছে একটা বাড়িতে তাঁরা ভাড়া থাকতেন। পরে একডালিয়া রোডে একটা বাড়ির একটা ঘরে তাঁরা ভাড়া থাকতেন। সেখানে তিনি আর তাঁর মা। তাঁর বাবা বাংলাদেশে থাকতেন সেসময়। পরে একসময় কল্যাণীতে থাকতেন। রূপার কথায়, 'আর্থিক সামর্থ্য এক্কেবারেই ছিল না, তাই বারবার খোঁজা হত কত কমে বাড়ি পাওয়া যায়। কম করে ২০ বার ঘর বদল হয়েছে। যাকে বলে কিনা পারফেক্ট উদ্বাস্তু'।
রূপা বলেন, একসময় তিনি পাঠভবনে ভর্তি হয়েছিলেন, তবে আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় সেই স্কুল ছাড়তে হয়। পরে ৭০-এর দশকে তাঁর বাবা কল্যাণীর একটা কারখানায় কাজ করলে সেখানে তিনি কিছুদিন পড়াশোনা করেছেন। পরে বাবা বাংলাদেশে ফিরে গেলে আবার যোধপুর পার্ক গার্লস হাইস্কুলে ভর্তি হন। সেখানে তাঁর মা বাড়ি ভাড়া করে থাকতেন। তাঁর মায়ের রোজগার ছিল তখন ২০০ টাকা। তাঁর মা জামাকাপড় সেলাই করতেন। রূপার কথায়, ‘আার মা বড়বাজার থেকে কাপড় কিনে এনে সায়া, পর্দা, কুশন কভার, বালিশের কভার এসব বানাতেন। আমায় মায়ের হাতের কাজ খুব সুন্দর ছিল। আমিও মায়ের কাছে শিখে গিয়েছিলাম, মাকে সাহায্য করতাম। একটা ছোট্ট ঘরে থাকতাম। সেখানে একটা চৌকি আর সেলাই মেশিন থাকত। সেখানেই আমরা খাওয়া-দাওয়া, রান্না থেকে শুরু করে সব করতাম। আমি তখন ছোট ক্লাস থ্রি-ফোরে পড়ি। জানালার গরাদে পা ঝুলিয়ে গান করতাম, খুব আনন্দে থাকতাম, পড়াশোনা করতাম। ভাবতাম বড় হয়ে কিছু একটা করব।’
রূপা গঙ্গোপাধ্যায় জানান, তাঁর মা কাপড়ের পুতুলও বানাতেন। যেটা তাঁর ভীষণ পছন্দের ছিল। আত্মীয়-পরিজন সকলের সায়া-ব্লাউজ তাঁর মা-ই বানাতেন। সেখান থেকেই তাঁদের সংসার চলত। এবং তাঁরা খুব ভালোভাবেই বেঁচেছেন সেসময়। সাক্ষাৎকারে এমনই নানান কথা শেয়ার করেন অভিনেত্রী, গায়িকা, রাজনীতিবিদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়।