প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় যে বাংলা ইন্ডাস্ট্রি এ কথা তো প্রমাণিত। বাংলা সিনে জগতে রাজ করার পর তিনি এখন বলিউডে নিজের প্রভাব দেখাচ্ছেন। ‘জুবিলি’ থেকে ‘স্কুপ’ একটার পর একটা কাজ করছেন তিনি। তবে, বুম্বাদা একা নন। সম্প্রতি বলিউডে একাধিক আঞ্চলিক তারকাদের দেখা যাচ্ছে। হিন্দি ছবি থেকে ওয়েব সিরিজে তাঁরা জমিয়ে কাজ করছেন। শুধু কাজ করছেন বললে ভুল হবে রীতিমত নজর কাড়ছেন, প্রশংসা কুড়াচ্ছেন সবার। কিন্তু কিছুদিন আগে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে অভিনেতা বলেন বলিউড আঞ্চলিক শিল্পীদের তেমন কাজ দেয় না। এ কথা ঠিক, এখন অনেক আঞ্চলিক অভিনেতাদের বলিউডে পসার জমাতে দেখলে অনেকেই বলি পাড়াকে এই কারণে কটাক্ষ করে থাকেন। আর প্রসেনজিতের এই মন্তব্য যেন তাতে ঘৃতাহুতি দিল। বুম্বাদা মুখ খোলার পর অনেকেই তাঁকে সমর্থন করেছেন এবং জানিয়েছেন তাঁদেরও একই ঘটনার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে এখানে কাজ পাওয়ার জন্য।
গুজরাটি অভিনেতা প্রতীক গান্ধী এই বিষয়ে বলেন, 'কোনও প্রজেক্টের জন্য রিজেকশন তো ছেড়ে দিন, গুজরাটি অভিনেতারা তো পর্যন্ত অডিশন দেওয়ার সুযোগটুকু পান না। আর যদিও বা কোনও মতে অডিশন দিল, প্রজেক্ট পাওয়া হয় না। আঞ্চলিক অভিনেতার এই ট্যাগ থাকলে বলিউডে কাজ পাওয়া সত্যি দুষ্কর হয়ে যায়। এমনকি যে গুজরাটি অভিনেতারা সুযোগ পান কোনও প্রজেক্টে তাঁদের বেছে বেছে সবসময় এমন চরিত্র দেওয়া হবে যাঁরা চিৎকার করে কথা বলবে, অদ্ভুত সুরে কথা বলবে, ইত্যাদি। আমি কিছু প্রজেক্টে কাজ করেছি, সেই যে ছবিটা ওদের মাথায় গেঁথে থাকে ওটা বদলানো খুব চাপের। নিজেকে ভার্সেটাইল প্রমাণ করা সহজ হয় না। যদিও স্ক্যাম ১৯৯২ ছবিটির পর আমার অবস্থান খানিকটা বদলেছে।'
প্রায়ই একই ধারণা পোষণ করেন রাইমা সেনও। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, 'আমি অন্যান্য অঞ্চলের অভিনেতাদের কথা বলতে পারব না। তবে বাঙালিরা সুযোগ পায় না তেমন বলিউডে। একমাত্র যখন কোনও ছবির গল্প বাংলা বা বাঙালিদের উপর ভিত্তি করে বানানো হয় তখন কেবল অল্প বিস্তর সুযোগ পায়। তাছাড়া বলিউড এমনটা একটা জায়গা যেখানে প্রতিদিন কেউ না কেউ নিজেকে প্রমাণ করার চেষ্টা করছে। তাই এখানে সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট দেখা যায়।'
তেলুগু অভিনেতা সিরত কাপুর বলেন 'আপনি যদি নিজে বোঝেন আপনি অভিনেতা হিসেবে কেমন, কেমন কাজ উপহার দিতে পারেন দর্শকদের তাহলে তাড়াতাড়ি হোক বা দেরি করে মানুষের দৃষ্টি আপনার উপর পড়বেই। আমি কখনও রিজেকশনকে খারাপ ভাবে দেখি না। যদি সুযোগ না পাই তাহলে ভাবি কেন কাঁটা পেলাম না। কেন আমি সেই চরিত্রে ফিট করলাম না।'
মারাঠি অভিনেতা সিদ্ধার্থ যাদব অবশ্য অন্য কথা বললেন। তিনি জানালেন, 'আমি জানি বলিউডে কাজ পাওয়া সহজ নয়। আমি তাই গিয়ে বলিউড ছবির জন্য অডিশন দিতে থাকি না। বরং আমি আমার আঞ্চলিক ইন্ডাস্ট্রিতে খুশি। যখন বলিউড থেকে কেউ আমায় যেচে কাজ অফার করে তখন সেগুলোকে গ্রহণ করি। আমি বলিউডে যা যতটা কাজ করেছি পুরোটাই আমার মারাঠি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের কাজের জন্য।'