এই মুহূর্তে বাংলা বিনোদন জগতের অতি পরিচিত মুখ অনির্বাণ চক্রবর্তী। ‘একেন বাবু’ হিসাবে দর্শকদের অঢেল ভালোবাসা কুড়িয়েছেন তিনি। ওটিটির পাশাপাশি রুপোলি পর্দাতেও সফল একেন বাবু। তবে মঞ্চের প্রতি টান এখনও ছিন্ন করতে পারেননি। মঞ্চে দাঁড়িয়ে অভিনয় আর দর্শকদের লাইভ রি-অ্যাকশন দেখার সুযোগ, এই দুইয়ের লোভ সামলানোটা বড় কঠিন রঙ্গমঞ্চের অভিনেতাদের পক্ষে।
অভিনেতারা সব সময়ই নিজের সেরাটা উজার করে দিতে তৈরি থাকেন। রঙ্গমঞ্চে অ্যাকশন-কাটের জায়গা থাকে না। রি-টেক নেই বলেই এখানে ভুল-চুক করার কোনও জায়গা নেই। মনসংযোগ থাকাটা খুব জরুরি। দর্শকরা টিকিট কেটে হলে এসেছেন, তাঁরা যাতে নিরাশ না হন,সেটাই একমাত্র উদ্দেশ্য় হয় অভিনেতাদের।
সারি সারি দর্শকের সামনে সংলাপ বলার সময় যদি অন্ধকার প্রেক্ষাগৃহে দর্শকাসনে কারুর মোবাইল বেজে ওঠে…নিঃসন্দেহে তাল কাটে মঞ্চে। মাঝেমধ্যে পরিস্থিতি এমনই বিগড়ে যায় যে থামাতে হয় নাটক। যেমনটা ঘটেছে অনির্বাণ চক্রবর্তীর সঙ্গে।
রবিবার একবার নয়, দু-বার নয় লাগাতার সাতবার বন্ধ করতে হয়েছে নাটক, কারণ হলে বাজছে মোবাইল ফোন। বিষয়টা মোটেই মেনে নিতে পারেননি অভিনেতা। ক্ষোভ উগরে দেন একরাশ। সুজন মুখোপাধ্য়ায়ের পরিচালনায় অ্য়াকাডেমি অফ ফাইন আর্টসে মহাত্মা বনাম গান্ধী নাটক উপস্থাপন করছিলেন অনির্বাণ ও তাঁর দলের লোকজন। গোটা বিষয় নিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ উগরে অভিনেতা লেখেন, ‘আজ সকালে অ্যাকাডেমিতে নাটকের শো ছিল। কিছু ‘—’ দর্শক সমস্ত অনুরোধ উপেক্ষা করে মোবাইল চালু রাখলেন। ৬/৭ বার নাটক বন্ধ রাখতে হল। ফলে যা হওয়ার তাই হল।'
নাটক বা সিনেমা দেখতে এসেও মোবাইল আসক্তি কাটিয়ে উঠতে পারছেন না মানুষজন। এই প্রসঙ্গে টিভি নাইন বাংলাকে অভিনেতা বলেন, ‘এই অসুবিধা বা এই দায়বদ্ধতার অভাবটা কিন্তু শুধু তরুণ প্রজন্মের মধ্যেই রয়েছে এমনটা নয়, বর্তমানে সব প্রজন্মের মধ্যেই রয়েছে। এদের একশ্রেণিতে ভাগ করা যেতে পারে, প্রজন্মে নয়। এটা বলা খুব সহজ যে, ‘এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা এটা করছে’, আমি বলব এই সৌজন্যের অভাব, সভ্যতার অভাব, শালীনতার অভাব, এই বিষয়গুলো যাঁরা লাইফ পারফরম্যান্সের সময় নজরে রাখতে পারেন না, সমস্যাটা তাঁদের নিয়ে।’
রুচিবোধ ও দায়বদ্ধতার প্রশ্ন টেনে অনির্বাণ বলেন,'রিলস একটা রুচির বিষয়, আমার ভাল না লাগলে আমি করব না। তেমনই তো থিয়েটার, যাঁর ভাল লাগবে, সে আসবে, যার ভাল লাগবে না, সে আসবে না। কেউ তো জোর করে না। কিন্তু আমি যখন দর্শক হিসেবে উপস্থিত হচ্ছি, তখন আমাকে সেই দায়িত্ববোধ ও দায়বদ্ধতাটা নিয়ে আসতে হবে।'
তবে সব দর্শকই দায়বদ্ধহীন এমনটা নয়। দিন তিনেক আগেই কল্যাণীতে নাটক করতে পৌঁছেছিলেন অনির্বাণ। সেখানে হলে একটা মোবাইলও বাজেনি। সেই কথাও নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় উল্লেখ করতে ভোলেননি অভিনেতা।