টোকিয়ো অলিম্পিকে রুপো জিতে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছিলেন মীরাবাই চানু। বার্মিংহ্যাম কমনওয়েলথ গেমসে তাঁকে ঘিরে ভারতের ‘সোনার’ প্রত্যাশা ছিল। সেই প্রত্যাশার দাম দিয়েছেন চানু। সোনা জিতেই ভারতকে গর্বিত করেছেন এই অভিজ্ঞ ভারোত্তলক।
ইম্ফলের এই ‘ধাকড়’ কন্যা মহিলাদের ভারোত্তোলনের ৪৯ কেজি বিভাগে স্বর্নপদক জয় করেছেন বার্মিংহ্যামে চলতি কমনওয়েলথ গেমসে। প্রতিপক্ষদের ধারেকাছেও ঘেঁষতে দেননি, স্ন্যাচে তিনি তুলেছিলেন ৮৮ কেজি, ক্লিন অ্যান্ড জার্কে চানু কাঁধে চাপান ১১৩ কেজি। সব মিলিয়ে ২০১ কেজি ভারোত্তোলন করে শুধু সোনা জেতাই নয়, বরং গেমস রেকর্ড গড়ে চানু গোল্ড মেডেল গলায় ঝোলান বার্মিংহ্যামে। এই ঘটনায় এমনিতেই থরহরিকম্প গোটা দেশ। তার মাঝেই হলিউড সুপারস্টার ক্রিস হেমসওয়ার্থ (Chris Hemsworth)-এর একটি টুইট ঘিরে শোরগোল তুঙ্গে।
অজি অভিনেতা ক্রিস হেমসওয়ার্থ 'থর'-এর চরিত্রে অভিনয় করে জগতজোড়া খ্যাতি পেয়েছেন। আচমকা কেন মীরাবাইয়ের প্রশংসা ‘থর’-এর মুখে? আসলে চানুর এক অনুরাগী টুইটারে ক্রিস হেমসওয়ার্থকে ট্যাগ করে বলেন, এবার থরের উচিত নিজের হাতুড়িটা মীরাবাইয়ের হাতে তুলে দেওয়া। এর জবাবে এই সুপারস্টার লেখএন, ‘সাইখম আপনাকে শুভেচ্ছে, আপনি কিংবদন্তি। আপনি পুরোপুরিভাবে এর যোগ্য।’
ক্রিস হেমসওয়ার্থের এই টুইট এখন ভাইরাল। এমনিতেই ‘থর’-এর ভক্ত সংখ্যা ভারতে কম নয়, তার উপর ভারতীয় ভারোত্তলকের প্রশংসায় তাঁর এই টুইট নিঃসন্দেহে তাঁর ফলোয়ার সংখ্যা আরও খানিকটা বাড়িয়ে দিল। মার্বেল সিনেমাটিক ইউনিভার্সে ২০১১ সাল থেকে থরের চরিত্রে দেখা যাচ্ছে ক্রিস হেমসওয়ার্থকে। এর পাশাপাশি থরকে নিয়ে নির্মিত মার্বেলের একক ছবিরও কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন তিনি। অ্যাভেঞ্চার্স সিরিজের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ থর।
মীরাবাই ইতিমধ্যেই দেশের বহু ক্রীড়াবিদের অনুপ্রেরণা। বাংলার সোনার ছেলে অচিন্ত্য শিউলি জানিয়েছিলেন, মীরাবাই তাঁর আদর্শ। ভারোত্তলনকে জনপ্রিয় করে তুলতে মীরাবাইয়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য, এখন তিনি ভারতীয় ভারোত্তনের অন্যতম প্রধানমুখ এমনটা বলাই যায়। এই নিয়ে একটানা তিনবার কমনওয়েলথ গেমসে দেশকে পদক এনে দিলেন চানু। ২০১২ সালে রুপো জিতেছিলেন চানু, এরপর গোল্ড কোস্ট এবং বার্মিংহামে ঝুলিতে এল সোনা।
আসলে ইতিহাস লিখতে বরবার ভালোবাসেন চানু। কর্নম মালেশ্বরীর পর মীরাবই দেশের দ্বিতীয় ভারোত্তোলক হিসেবে অলিম্পিক্সে পদক জিতে বিরল নজির গড়েছিলেন গত বছর। ২০০০ সালের সিডনি অলিম্পিকে সোনা জিতেছিলেন মালেশ্বরী। এরপর দীর্ঘ ২১ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটান মীরাবাই চানু।