কিছুদিন আগেই NABC তথা নর্থ আমেরিকা বেঙ্গলি কনফারেন্সের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন একের পর এক বাংলার শিল্পীরা। চরম অব্যবস্থা এবং অসহযোগিতার মধ্যে পড়েছিলেন জয়তী চক্রবর্তী, অজয় চক্রবর্তী, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়রা। আমেরিকাতে বসেই ফেসবুক লাইভ করে ক্ষোভ উগড়ে দেন জয়তী চক্রবর্তী। দীর্ঘ একটি মেইল করে অভিযোগ জানান খোদ পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী। প্রতিবাদে সরব হন তেজেন্দ্র নারায়ণ মজুমদার, ইমন চক্রবর্তী, রূপম ইসলাম, অঞ্জন দত্ত, নীল দত্ত, শ্রীজাত, ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত, প্রমুখ শিল্পীরা। এবার এই গোটা ঘটনায় নিঃশর্ত ক্ষমা চাইল আমেরিকার কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল।
বাংলার শিল্পীদের তরফে যে অভিযোগ তোলা হয়েছিল সেটাকে স্বীকার করে নিয়ে কালো তালিকাভুক্ত করল নর্থ আমেরিকা বেঙ্গলি কনফারেন্সের এবারের আয়োজক নিউ জার্সির একটি বাঙালি সংগঠনকে।
সিএবির তরফে জানানো হয়েছে 'আগামীতে যদি আবার এমন কোনও ঘটনা ঘটে তাহলে বাংলা এবং বাংলার সংস্কৃতিকে রক্ষার জন্য তাঁদের পাশে থাকব আমরা।'
এই বিষয়ে বলে রাখা ভালো, NABC -এর যে মূল ভাবনা এবং পরিকল্পনা সেটা কিন্তু এই আমেরিকার কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলের। কিন্তু প্রতি বছর এক একটি রাজ্যের বাঙালি সংগঠনকে এই অনুষ্ঠানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। যেহেতু এটি একটি বিরাট মাপের অনুষ্ঠান তাই প্রতি বছরই ছোটখাটো ভুল হয়। কিন্তু এবার যেন সমস্ত কিছুকেই ছাপিয়ে গিয়েছে ‘ভুলের’ সংখ্যা। রীতিমত অপমানিত হয়েছেন বাংলার শিল্পীরা। পেমেন্ট না পাওয়া থেকে খাবার না পাওয়ার মতো অভিযোগ উঠেছে। ঘরের দরজা লক হয়ে যাওয়া, হোটেলে না থাকতে পারার মতো অভিযোগ করেন জয়তী চক্রবর্তী। অজয় চক্রবর্তী তো তাঁর চিঠিতে লেখেন যে কেন ‘এই বয়সে এসে এই শো নিলাম তাই ভাবছি।’
আরও পড়ুন: NABC-এর অব্যবস্থা নিয়ে সরব, রাত পোহাতেই হ্যাক জয়তীর ফেসবুক পেজ!
আরও পড়ুন: 'আসছে বছর আবার হবে', শিল্পীদের প্রতিবাদকে কটাক্ষ, NABC নিয়ে কী বলছে ঋত্বিকের পুতুল
এবার যে যে শিল্পীরা এই অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন তাঁরা সকলেই সমস্যায় পড়েছিলেন। তাই এবার তাঁদের সকলেই এই অব্যবস্থা এবং অপমানের হেস্তনেস্ত চাইছিলেন। এবার তাতে হস্তক্ষেপ করল সিএবি। তাঁরা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিল গত ৩৪ বছর ধরে এই সংগঠন একটু একটু করে যে ইমেজ তৈরি করেছে সেটা তাঁরা এভাবে ভেঙে যেতে দিতে পারে না। তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে এই সংগঠনের তরফে জানানো হয়। তবে একই সঙ্গে সিএবির তরফে বাংলার শিল্পীদের অনুরোধ করা হয়েছে তাঁরা যেন এই সংগঠনের প্রবীণ সদস্য যেমন অভীক দাশগুপ্ত, প্রবীর রায়দের বিরুদ্ধে খারাপ মন্তব্য না করেন।
তবে শিল্পীদের একাংশের মতে আজ এই ঘটনা ঘটেছে তাঁদের জন্যই। এমন অনেক শিল্পী আছেন যাঁরা ভাবেন NABC থেকে ডাক পেলেই তাঁদের জীবন ধন্য হয়ে যায়। তাঁদের এই হ্যাংলামোর জন্যই নাকি এই ঘটনা ঘটেছে।