নাম সব্যসাচী চৌধুরী, অভিনেতা হিসাবেই তাঁর পরিচিতি। টেলিপর্দার দর্শকদের কাছে তাঁর পরিচিতি ‘সাধক রামপ্রসাদ’ বা ‘সাধক বামাক্ষ্যাপা’ হিসাবে। সব্যসাচীর এধরনের চরিত্রে অভিনয়ে মুগ্ধ দর্শক। এরই মাঝে সামনে এসেছে তাঁর আরও এক চরিত্রের কথা। আর ইনি হলেন 'লেখক সব্যসাচী'।
হ্য়াঁ, সব্যসাচী বই লেখেন। এর আগেও বইমেলায় তাঁর বই প্রকাশিত হয়েছে। আর এবার বইমেলায় বের হয়েছে সব্যসাচী চৌধুরীর তৃতীয় বই। চলতি বইমেলায় আসছে ‘পরাশরের ডায়েরি’। সেই বইয়ের বিষয়েই Hindustan Times Bangla-র সঙ্গে কথা বললেন সব্যসাচী চৌধুরী।
সব্যসাচী বলেন, ‘এই বই-এর বিষয়বস্তু কিছুটা মনস্তাত্বিক, কিছুটা তন্ত্রভিত্তিক। একজন সাদাসিধে চাকুরিজীবী মানুষ, দুর্ঘটনায় যাঁর জীবন ওলটপালট হয়ে যায়। সে যখন মূল জীবনস্রোতে ফিরে আসে, তখন সে দেখে এতদিন সে যা যা করত, তাতে আর তাঁর আগ্রহ নেই। ক্রমশ সে জীবন স্রোতের বিপরীত দিকে যেতে থাকে। অজানা বিষয় তাঁকে হাতছানি দেয়। সাধুসঙ্গ করতে আগ্রহ জন্মায়। ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস বাড়ে। সবথেকে বড় বিষয় আধিভৌতিক বা অলৌক বিষয়ে তাঁর বিশ্বাস জন্মায়, সে বিভিন্নরকম এক্সপিরিমেন্ট করতে শুরু করে। নানান ঘটনার মধ্যে জড়িয়ে পড়ে। তাতে ওর যে অভিজ্ঞতা হয়, সেটা পড়তে পড়তে পাঠক হয়ত ভাববেন আদৌ কি এটা ওঁর সঙ্গে ঘটেছে, নাকি সবই কল্পনা। এমনই একটা বই হল পরাশরের ডায়েরি।’
সব্যসাচী জানান, এখানে তিনটি গল্প আছে, একটা ‘কড়াঝোড়ার শশ্মানে’, দ্বিতীয় হল 'মায়াবেড়ি', তৃতীয়টি হল 'জন্ম জলাশয়'। ১৮ জানুয়ারি বইমেলার শুরু দিনেই মিলবে এই বই।
তবে এধরনের প্যারানরম্যাল বা আধিভৌতিক গল্প কি নিজের কোনও অভিজ্ঞতা থেকে লেখা? এমন প্রশ্ন সব্যসাচী জানান, ‘না, আমার জীবনের কোনও অভিজ্ঞতা নয়। আমাদের যে ইউটিউব চ্যানেল আছে, সেখানে আমরা বিভিন্ন গল্প পাঠ করি। আমিও নিজের লেখা কিছু গল্প সেখানে পাঠ করেছি। আমাদের এডিটর সৌম্যই প্রথম আমায় ভূতের গল্প লেখার কথা বলেছিল। তখনই লিখতে শুরু করেছিলাম। লিখতে গিয়ে বুঝলাম, সাধারণ ভূতের গল্পের থেকে এধরনেগল্প সৃষ্টি করা বেশি আকর্ষণীয়। সেই তখনই পরাশরের গল্প লেখা। প্রথম গল্প সকলের ভালো লাগলে, দ্বিতীয়, তৃতীয় গল্পও আমি লিখে ফেলি।’
প্যারানরম্যাল বা আধিভৌতিক বিষয়ে বিশ্বাস করেন? ‘নাহ, সেভাবে যে আমার খুব বিশ্বাস রয়েছে, বা এসব খুব মানি তা ঠিক নয়। তবে আমার এই বইয়ে ‘চক্রের জাগরণ’, তন্ত্রের বিভিন্ন ভাগ নিয়ে বেশকিছু বিষয় উল্লেখ আছে, সেগুলি আমি কিছুটা পড়াশোনা করেছি, তা খুবই সামান্য। (হাসি)’
লেখালিখির অভ্যাস কবে থেকে? আগে বই তো লিখিনি, তবে ফেসবুকে লিখতাম, সেখান থেকেই এক প্রকাশক আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তাঁরা আমার বেশকিছু সংকলন ছাপেন, সেটা ২০২২ থেকে। তবে ছোট থেকে ওই টুকিটাকি লেখালিখি করতাম, তবে জনসাধারণের জন্য লিখব, এমনটা কখনও ভাবিনি। যেমন অনেকেই টুকটাক লেখেন তেমনই। লিখতাম, বাড়িতেই সেগুলি রাখতাম, বা কখনও ফেলেও দিয়েছি, এমনই…(হাসি)'