সরস্বতী পুজোর কথা এলেই, বাঙালির মনে ভেসে ওঠে হাজারো স্মৃতি। এইদিন পুজো, প্রেম, সহ আরও নানান কিছু মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। এমনই স্মৃতির পাতা থেকে কিছু কথা Hindustan Times Bangla-র সঙ্গে ভাগ করে নিলেন টেলি পর্দার ‘জগদ্ধাত্রী’ অঙ্কিতা মল্লিক।
অঙ্কিতা মল্লিকের কথায়, 'সরস্বতী পুজোর কথা মনে এলে প্রথমেই তো স্কুলের কথা মনে পড়ে যায়। আমি যদিও এখনও খুব বেশিদিন সেই সবকিছু ফেলে আসিনি। কলেজের গণ্ডি পার করেছি সবে ২-৩ বছর হল। তাই সরস্বতী পুজোর কথা মনে পড়লে সেইসব কথাই মনে পড়ে। আমি বিনোদিনী গার্লস হাইস্কুলে পড়তাম। আর স্কুলে পড়ার সময় কার্ড নিয়ে অন্যস্কুলে নিমন্ত্রণ করতে যাওয়ার বিষয়টা আমার কাছে বেশ মজার ছিল। স্কুলের ঠাকুর আনা, আল্পনা দেওয়া, সাজানো, এইসব নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম পুজোর আগে থেকে বেশ কয়েকটা দিন। তখন তো ক্লাস কামাই করার একটা বাহানা চাই। (হাসি)
এছাড়াও পুজোয় সব টিউশনে যেতে হবে, সবার সঙ্গে দেখা করতে হবে, সেই দিনগুলো একটা অন্যরকম আনন্দ ছিল। গতকালই (মঙ্গলবার) ভাবছিলাম, এবার তো শ্যুটিং করছি। ভাবছিলাম, সরস্বতী পুজো বিষয়টা আর আগের মতো নেই। এখন আর সেই উৎসাহটাও নেই। এবার তো পুরোটাই কাজের মধ্যে দিয়ে কাটছে, তবে সেটাও মন্দ অভিজ্ঞতা নয়। তবে আগে পুজোর আগের দিন থেকেই বন্ধুদের ফোন করতে শুরু করতাম, কোথায় কোথায় যাব, কী পরব বা করব! স্কুলে পড়ার সময় হোয়াটসআপের চলটা অতটাও ছিল না, তাই কনফারেন্স কলেই সব আলোচনা হত।
স্কুলে আবার খাওয়াদাওয়ারও বিষয় থাকত। আমাদের বাড়িতেও যেহেতু পুজো হত, তাই স্কুলে যখন পৌঁছাতাম, তখন বাকি বন্ধুদের খাওয়া হয়ে যেত। খাওয়ার জন্য কুপন সিস্টেম ছিল। পুজোর আগের দিন সেটা দিয়ে দেওয়া হত। খেতে হলে ওটা নিয়ে যেতে হত। আমাদের প্রশ্ন ছিল, কুপন না নিয়ে গেলে কি খেতে দেবে না! এমনই অসংখ্য স্মৃতি জড়িয়ে আছে।'
পুজোর সঙ্গে মিশে থাকা প্রেমের স্মৃতি প্রসঙ্গে অঙ্কিতা বলেন, 'পুজোর কথাতে একটা প্রেম প্রেম বিষয়ও জড়িয়ে যায়। হয়ত কেউ একসঙ্গে বেরিয়েছে ওই দিন, কেউ সিঙ্গল, তো একজনের সঙ্গে আরেকজনকে জুড়ে দেওয়া। এমনই নানান মজা হত। বাঙালির কাছে পুজো মানেই তো বন্ধু-বান্ধব, প্রেম আনন্দ, এই সব মিলেমিশে থাকে।
আর সরস্বতী পুজোতে আমার প্রেম নিয়ে অভিজ্ঞতাটা বড়ই অদ্ভুত। স্কুলে পড়ার সময় ফেসবুকে দেখে একটা ছেলেকে খুব ভালো লাগত। পুজোর দিন যখন ওকে দেখালম, খুব হতাশ হয়েছিলাম। দেখলাম, ছেলেটা আমার থেকে খুবই বেঁটে! (হাসি) কাউকে ছোট করছি না, কেউ বেঁটে হতেই পারে। তবে সেদিন আমার কাছে ওটা অপ্রত্যাশিত ছিল। যেমনটা কল্পনা করেছিলাম, তেমনটা ছিল না। আবার ওর সঙ্গে বান্ধবীও ছিল, সবমিলিয়ে হতাশ ছিলাম।
তবে কলেজের পুজো আমি সেভাবে উপভোগ করিনি। যেবার আমি কলেজে ভর্তি হই, সেবারই লকডাউন হয়ে যায়। তাই কলেজের সেভাবে কোনও স্মৃতি নেই। তারপর লকডাউন পার করে আমি কাজ শুরু করে দিয়েছিলাম, তাই নিয়মিত আর কলেজ যাওয়া হয়নি। কলেজটা তখন ডিসট্যান্সেই করেছি।'