মার্কিন মুলুকে গান গাইতে গিয়ে চূড়ান্ত অপমানিত হয়েছেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী। হোটেল থেকে শুরু করে খাবার, গাড়ি, সাউন্ড চেক- প্রতি পদে পদে অব্যবস্থার মধ্যে পড়েন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী। বিপদে পড়লেও দেখা মেলেনি আয়োজক অভীক দাশগুপ্তের। এখানেই শেষ নয়, নর্থ আমেরিকা বেঙ্গল কনফারেন্সে গিয়ে চূড়ান্ত অপানিত হতে হয় তাঁকে। কমিয়ে দেওয়া হয় অনুষ্ঠানের সময়সীমা। অজয় চক্রবর্তী নিজেই মেইল করে গোটা ঘটনা জানিয়েছিলেন।
ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন জয়তী চক্রবর্তী, লোপামুদ্রা সিনহা, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়রা। এছাড়াও আরও অনেকেই এই ঘটনায় মুখ খুলেছেন। একজোট হয়েছেন সকল শিল্পীরা। থুড়ি! সকলে হয়ত হননি। আর তাই ঘটনা ঘিরে কিছু প্রশ্ন তুললেন সঙ্গীতশিল্পী লোপামুদ্রা মিত্র। নিজের ফেসবুকের পাতায় বেশকিছু প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। ঠিক কী লিখেছেন লোপামুদ্রা সিনহা?
লোপামুদ্রা লেখেন, এরপরও পশ্চিমবাংলার গায়ক-গায়িকা, ব্যান্ড, ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজেদের সম্মান রক্ষা করবে না। ‘আমরা’ হয়ে উঠতে পারবে না, ‘আমি’ হয়েই থাকবে।অদ্ভুত অপমান সহ্য করে চলতেই থাকবে, বছরের পর বছর। গা বাঁচিয়ে চলবে।আসলে আমরা নিজেরা কেউ আমাদের নিজেদের ভাষা, নিজেদের কাজকে আর শ্রদ্ধা করি না। শুধুমাত্র জায়গা হারানোর ভয়। এই করতে করতে বিন্দুও যে থাকবেনা, সে চিন্তা কারোর নেই। নাটক, সিনেমার কথা বলতে পারবো না। ওটা আমার বিষয় নয়। আজকাল নিজেকে তথা নিজেদের ঘেন্না করে আমার। দিন গালাগালি আমাকে। মনের জ্বালা থেকে বললাম। আর কিছুতে কিছু এসে যায় না। ** শুধু বিদেশের জন্য বলছি না, স্বদেশে , স্ব-শহরে কি হয়, সেটাও ভেবে দেখো, গানের বন্ধুরা।
আরও পড়ুন-কাবোর কোলে সদ্যোজাত মেয়ে, সদ্য চলে যাওয়া এভিলিনের উজ্জ্বল ছবি দেখে চোখে জল নেটপাড়ার
লোপামুদ্রার এই পোস্টের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করেছেন নেটপাড়ার অনেকেই। এক ব্যক্তি লোপামুদ্রাকে সমর্থন করে লেখেন, 'অত্যন্ত সঠিক ভাষ্য। আজকাল MIM মানে Me, I and Myselfএর যুগ। 'আমরা' কোথায় মিলিয়ে গেছে।' আরও একজন লেখেন, ‘এটাই আমাদের অর্থাৎ বাঙালিদের দুর্ভাগ্য! কেউ নিজের স্বার্থটাও ঠিক মতো রক্ষা করতে পারে না। নিজের বলতে "আপনি আর কোপনি (কৌপিন)" ছাড়া কিছুই বুঝতে চায় না।’ কারোর মন্তব্য, ‘স্পষ্ট উচ্চারণ। তবু অনেকেই এই লেখা বুঝতে পারবে না,চাইবেও না। দুদিন পরে আবার সব ভুলে যাবে।’ এমনই নানান মন্তব্য উঠে এসেছে।
এদিকে নর্থ আমেরিকা বেঙ্গল কনফারেন্সে গিয়ে অপমানিত হওয়ার পর অজয় চক্রবর্তী যখন মেইল করে গোটা ঘটনা জানান। তখন ফেসবুকে লাইভ করে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন সঙ্গীতশিল্পী জয়তী চক্রবর্তী। ক্ষোভ প্রকাশ করে অজয় চক্রবর্তীর মেইলের স্ক্রিনশট নিয়ে ফেসবুকের পাতায় গায়ক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় লিখেছিলেন, ‘ভারতের সিনিয়র-মোস্ট কিংবদন্তি শিল্পীকে যদি এমন চিঠি লিখতে হয়,তাহলে বেঙ্গলি কনফারেন্স করে লাভ কি? এই অসম্মানটুকু পন্ডিত অজয় চক্রবর্তীর প্রাপ্য বুঝি!! বাঙালি আর কত নীচে নামবে?’