অফিসপাড়ার ভাইরাল নন্দিনীদিদিকে কে না চেনে! ডালহৌসিতে পাইস হোটেল চালানো এই কন্যে সোশ্যাল মিডিয়া সেনসেশন। রাস্তার ধারে গানে ব্লু টুথ গুঁজে, জিনস-প্যান্ট পরে রান্না করছেন সুন্দরী। এই দৃশ্য চোখ টেনেছিল নেটিজেনদের। এরপর ইউটিউবারদের সুবাদে সুপার ভাইরাল নন্দিনী গঙ্গোপাধ্যায়। আরও পড়ুন-'নোংরা জায়গা, ফ্রি-তে দিলেও খাব না!', ড্রেন দখল করে তৈরি নন্দিনীদির হেঁশেল? হইচই কাণ্ড
অনেকেই নন্দিনীকে পছন্দ করেন না, কিন্তু তাঁকে উপেক্ষা করাটা বেশ কঠিন। নতুন বছরে নিউটাউনে নতুন দোকান খুলেছেন স্মার্ট দিদি। নিউটাউন আকাঙ্খা মোড়ে নতুন দোকান খুলেছেন নন্দিনী। গত ১২ই জানুরায়ি শুভ উদ্বোধন হয়েছে ‘নন্দিনীদিদির হেঁশেল’-এর। ২৪-র শুরুতেই স্বপ্নপূরণ হয়েছে নন্দিনী দিদির। সেই হোটেলে রয়েছে টিনের ছাদ। ঘেরা জায়গায় বসে খাওয়ার সুযোগ। নতুন দোকান খোলবার পরেই অনেকের মনে প্রশ্ন, ‘নন্দিনীদি যদি ডালহৌসির হোটেল সামলান, তাহলে এই হোটেল কে চালাবে?’ এমনও শোনা গিয়েছে বোন সঙ্গীতার কাঁধে এই হোটেলের গুরু দায়িত্ব দিয়েছেন নন্দিনী।
স্মার্ট দিদির মতোই সুন্দরী তাঁর বোন সঙ্গীতা। দিদি তাঁর অনুপ্রেরণা। দিদির কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সব দায়িত্ব সামলান সঙ্গীতা। ইউটিউবারদের প্রশ্নের জবাবে তাঁকে বলতে শোনা গেল, ‘নতুন দোকান খুব ভালো লাগছে। খুব ভাল্লাগছে’। মেনুতে কী কী থাকছে
‘দিদির ওখানে যা পাওয়া যায়, বাঙালি থালি আইটেম। ভেজ থালি, চিকেন থালি, ফিশ থালি, পোলাও-আলুরদম, পোলাও-মটনকারি, সবই থাকবে। ডালহৌসির দোকানে যা পাওয়া যায়, তাই এখানে পাওয়া যাবে। তবে এক্সট্রা কিছু হয়ত যোগ করা হবে, বিশেষত সন্ধ্যের দিকে’। সঙ্গীতা স্পষ্ট জানান, এটা তাঁর দিদির দোকান এবং নন্দিনী একাই এই দোকান সামলাবেন। তিনি বলেন, ‘না, এটা দিদিরই দোকান। দুই বোনের হোটেল নয়, এটা নন্দিনীদিরই হোটেল থাকবে। তবে দোকান তো নিজেদের, নিশ্চয় আমিও সাহায্য করব।’ শেষে তাঁর সংযোজন, ‘তোমরা এইভাবেই আর্শীবাদ করতে থাকো, তিন-চারটে দোকান তো আমরা খুলেই নেব’।
বুধবার ছিল নন্দিনীর জন্মদিন। এদিন দিদিকে আগলে মিষ্টি ছবি পোস্ট করেন সঙ্গীতা, সঙ্গে লেখেন- ‘তুই আমার দিদি, এর জন্য আমি কতটা গর্বিত বলে বোঝাতে পারব না, শুভ জন্মদিন’।
নন্দিনী জানিয়েছেন, সকাল থেকে দুপুর তিনটে পর্যন্ত ডালহৌসির হোটেলে থাকবেন তিনি। সেই হোটেল বন্ধ করে চলে আসবেন নিউ টাউনের এই হোটেলে। ডালহৌসির ভাতের হোটেল শুধু অফিসের সময়ই খোলা থাকে, তবে এই হোটেল রাত ১১টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
বাবার ব্যবসার হাল ধরতে স্থায়ী মাস মাইনের চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন নন্দিনী। করোনা লকডাউনের পরপরই বাবার পাশে এসে দাঁড়ান, হাতে হাতে শুরু করেন ডালহৌসির হোটেল সামলানো। হয়তো তখনও ভাবেননি এত জলদি বদলাবে ভাগ্যের চাকা।
দিদি নম্বর ১-এ এসে নিজের জীবন লড়াই তুলে ধরেছিলেন তিনি রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েছিলেন তাঁরা ৩ বোন। দিদি আর বোন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েছেন। তিনি নিজেও ফ্যাশন ডিজাইনিং নিয়ে পড়াশোনা করেন। একসময় বাড়ির অবস্থাও ছিল বেশ ভালো। তবে নোটবন্দির সময় বাবার ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। ডালহৌসিতে একটি দোকানে রুটি বানানোর কাজ নেন তাঁর বাবা। পরে রাস্তার ধারে শুরু তাঁর পাইস হোটেল। গত বছরই আইনি বিয়ে সেরেছেন নন্দিনী। সঙ্গে পা রেখেছেন অভিনয়ের দুনিয়ায়।