ভারতীয় সিনেমার অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্র তিনি। স্পষ্টবক্তা হিসাবেও ইন্ডাস্ট্রিতে নামডাক রয়েছে নাসিরুদ্দিন শাহের। প্রকাশ্যে শাসকদলের সমালোচনায় মুখর হন তিনি, দেশের ধর্মীয় হিংসা নিয়ে গর্জে ওঠেন। নিজের সাম্প্রতিক ওয়েব সিরিজ ‘তাজ— ডিভাইডেড বাই ব্লাড’-এর প্রচারে মুঘলদের প্রশংসা করে বারবার সমালোচনার শিকার হয়েছেন তিনি, তবুও অবস্থান বদল করেননি।
দিন কয়েক আগে ফেসবুকে পাকিস্তান নিয়ে মন্তব্যের জেরে ফের আলোচনায় বর্ষীয়ান অভিনেতা। নাসিরুদ্দিন শাহ দাবি করেছিলেন, ‘সিন্ধি ভাষা এখন পাকিস্তানে বিলুপ্ত’। তাঁর এই বক্তব্য নিয়ে নেটপাড়ায় সমালোচনার ঝড়, ‘খুদা কে লিয়ে’ অভিনেতার নিন্দে শুরু হয় সরহদের ওপারে। অবশেষে নিজের ‘অজ্ঞানতা’র জন্য পাকিস্তানের সমস্ত সিন্ধি-ভাষী মানুষজনের কাছে ক্ষমা চাইলেন নাসিরুদ্দিন শাহ।
ক্ষমা চাইলেন নাসিরুদ্দিন
রবিবার ফেসবুকের দেওয়ালে ক্ষমা চেয়ে তিনি লেখেন, ‘আচ্ছা, আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি পাকিস্তানের সমস্ত সিদ্ধি-ভাষী মানুষজনের কাছে, যাঁরা আমার ভুল মন্তব্যের জন্য অত্যন্ত মর্মাহত হয়েছেন। আমি মেনে নিচ্ছি আমার এই বিষয়ে ভ্রান্ত ধারণা ছিল, কিন্তু এর জন্য কি আমাকে শূলে চড়ানো জরুরি?’ এখানেই থেমে থাকেননি জাতীয় পুরস্কার জয়ী অভিনেতা। তিনি বলেন, ‘আমার বেশ মজা লাগছে এটা দেখে যে এত বছর ধরে লোকে আমাকে বুদ্ধিজীবী বলে এসেছে, এখন আমাকে তাঁরা অজ্ঞ এবং ভুয়ো বুদ্ধিজীবী বলছে। এটা পরিবর্তন বটে'।
সিন্ধি-ভাষী পাকিস্তানিদের নিয়ে কী লিখেছিলেন নাসিরুদ্দিন শাহ?
‘তাজ— ডিভাইডেড বাই ব্লাড ২’-এর প্রচারে নাসিরুদ্দিন শাহ কথা বলছিলেন বর্তমান পাকিস্তানে প্রচলিত ভাষা সম্পর্কে। তখনই অভিনেতা দাবি করেন, আজকাল সিন্ধি ভাষার চল একেবারেই নেই প্রতিবেশি দেশে। ট্রাইড অ্যান্ড রিফিউজড নামের এক ইউটিউব চ্যানেলকে অভিনেতা জানান, ‘সেখানে বালুচি, বারি, সিরাইকি, পুস্ততেই বেশি মানুষ কথা বলেন, সিন্ধি কেউই বলে না’।
নাসিরুদ্দিন শাহের এই মন্তব্যে খেপে ওঠে পাক নেটিজেনরা। অভিনেতাকে ‘অজ্ঞ’, ‘মূর্খ’-এর তকমা দেওয়া হয়। জানানো হয়, ‘সিন্ধি আজও পাকিস্তানের অন্যতম প্রধান ভাষা’। পাক অভিনেতা মানসা পাশা নিজেকে ‘গর্বিত সিন্ধি’ হিসাবে উল্লেখ করে নাসিরুদ্দিন শাহের বিরুদ্ধে সুর চড়ান।
নাসিরুদ্দিন শাহ ক্ষমা চেয়ে নেওয়ার পর বিতর্কের আঁচ এখন অনেকটাই কমেছে। পাক অভিনেতা আদনান সিদ্দিকি টুইটে ভারতীয় অভিনেতার তারিফ করে লিখেছেন, ‘ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়াটা প্রকৃতপক্ষে একজন ব্যক্তির চরিত্রের গভীরতা প্রমাণ করে। নাসির সাহেবের সাম্প্রতিক আচরণে আমি মুগ্ধ। ভুল স্বীকার করতে শক্তি এবং নম্রতা প্রয়োজন।’