লোকসভা ভোটের আগে সন্দেশখালির ঘটনা নিসন্দেহে অস্বস্তিতে ফেলেছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। সঙ্গে নুসরত জাহানও বারবার আসছেন সমালোচনায়। বিশেষ করে, তাঁর এলাকাই যখন মাসখানেক ধরে অশান্ত, সেখানকার মহিলারা যৌন নিপীড়নের মতো অভিযোগ আনছেন, সেখানে নুসরতর একবারও সন্দেশখালিতে পা না রাখা, বিতর্কের আগুনে ঘি দিয়েছে। তবে এবার, নুসরত হচ্ছেন ট্রোল। তাঁর বলা, সন্দেশখালিতে ‘১৭৪ ধারা’ জারি আছে কথাটার জন্য।
মঙ্গলবার সন্দেশখালি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এক বৈদ্যুতিন মাধ্যমে নুসরত হঠাৎই বলে বসেন ‘১৭৪ ধারা’। তারপর থেকে তিনি নতুন করে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছেন। একজন কমেন্ট করলেন, ‘১৪৪ ধারাটা জানতাম, ১৭৪টা কি নতুন করে তৈরি হল?’ আরেকজন লিখলেন, ‘উনিও কি দিদির দেখানো পথেই হাঁটছেন নাকি, ভুলভাল মন্তব্য করছেন!’
কী বলেছেন নুসরত?
সন্দেশখালি যখন জ্বলছিল, নুসরত তখন ব্যস্ত ছিলেন তাঁর সিনেমা সেন্টিমেন্টালের প্রচারে! এরপর ভ্যালেন্টাইন্স ডে-ও উদযাপন করতে দেখা যায়। শুধু একবারও যাননি নির্বাচনে জিতেছেন যেই এলাকায়, সেখানেই। সেই নিয়ে হওয়া কটাক্ষের বিরুদ্ধেই মুখ খুলেছিলেন একটি ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার কাছে।
বলেন, ‘আমি বেশিদিন ক্যামেরা থেকে লুকিয়ে থাকতে পারি না, কারণ আমি কিছু ভুল করিনি। প্রতি দিনই তো আমি ক্যামেরার মুখোমুখি হচ্ছি। আমি এই বিষয়ে ইতিমধ্যে আমার মনে কথা বলেছি। আমি সবসময় দলের নির্দেশ মেনে চলি। রাজ্য সরকার প্রতিদিন সাহায্য পাঠাচ্ছে সন্দেশখালির স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে। সেখানকার মানুষের জন্য যা যা দরকার, সবই করা হচ্ছে। আমিও ক্রমাগত স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।’
নুসরত এরপর আরও বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছি না, আমার এলাকায় না যাওয়া নিয়ে কেন এত কথা হচ্ছে। সেখানে ১৭৪ ধারা আছে। আমি সেখানে গেলে সঙ্গে পাঁচ জনকে নিয়ে যাব এবং এটা আইন শৃঙ্খলার বিরোধী হবে। মনে রাখতে হবে, আমরা কেউই আইন শৃঙ্খলার উপরে নই। আমাদের প্রশাসনে উপর আস্থা রাখতে হবে। জনগণ ন্যায়বিচার পাবে ঠিক।’
জানুয়ারির শুরু থেকেই উত্তপ্ত সন্দেশখালি। রেশন দুর্নিতী তদন্তে তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে অভিযানে গিয়ে, মারধর খেতে হয় ইডি অফিসারদের। এরপর থেকে ক্রমশ উত্তপ্ত হতে থাকে পরিস্থিতি। এখন শুধু আর রাজ্যের আভ্যন্তরীন ব্যাপার নয় এটি, গোটা দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে এই আঁচ। সেই এলাকা থেকে ফেরার একাধিক হেভি ওয়েট তৃণমূল নেতা। সেখানকার মহিলারা যৌথভাবে তুলেছেন যৌন নিপীড়নের অভিযোগ। কিছুদিন আগে এক সংবাদিককে গ্রেফতার করা নিয়ে ফের উত্তাল হয়েছিল পরিস্থিতি।
নুসরতের ‘১৭৪ ধারা’ মন্তব্যের পর অস্বস্তিতে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলও। তবে প্রশাসন সূত্রে খবর, সন্দেশখালির সব গ্রামে এখন আর ১৪৪ ধারা বলবৎ নেই। দুটি গ্রামের কিছু জায়গায় শুধু জারি রয়েছে এটি।