'মুম্বই, দিল্লিতে গিয়ে বাংলায় কথা বলে দেখো তো কেউ সাড়া দেয় কিনা, এখানে অবাঙালিরা এলে তাহলে কেন হিন্দিতে কথা বলব?', 'বাংলায় থাকতে হলে বাংলা বলতে হবে', ইত্যাদি প্রভৃতি। এমন কথা, তরজা নতুন নয়। আগেও বহুবার শোনা গিয়েছে। উসকেছে বিতর্ক। চলেছে চর্চা। এমনকি বাংলা একটি দল পর্যন্ত গঠিত হয়েছে হিন্দির আগ্রাসন আটকাতে, বাংলা পক্ষ। এবার এসবকে ছাপিয়ে একেবারে অন্যরকম একটি ঘটনা ঘটে গেল।
জলপাইগুড়ি বইমেলায় একজন শিল্পী বলিউডি গানে নাচতে শুরু করেন। তাঁর নাচ মাঝপথে থামিয়ে দেওয়া হয়। এবং আয়োজকরা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেওয়া হয় কোনও হিন্দি গান এখানে চলবে না। আরও পাঁচদিন অনুষ্ঠান আছে। তিনি তার মধ্যে একদিন যেন এসে বাংলা গানে পারফর্ম করে যান। তবে হিন্দি গান নৈব নৈব চ। আর এটার জেরেই উসকে গিয়েছে বিতর্ক। কেউ সমর্থন করেছেন বিষয়টাকে, কেউ আবার বিরোধ করেছেন।
আরও পড়ুন: সিনেমা করতে গেলে অভুক্ত থাকেন অভিনেত্রীরা! শাহরুখের সঙ্গে শুটিংয়ের স্মৃতি হাতড়ে বললেন টুইঙ্কল
আরও পড়ুন: শীতের নরম আলো মেখে সৌরভের বুকে দর্শনা, বিয়ের পর প্রথম বড়দিনে কোথায় গেলেন নবদম্পতি?
এক ব্যক্তি এই ভিডিয়ো পোস্ট করে লেখেন, 'হিন্দি গানে নাচায় শিল্পীকে স্টেজ থেকে নামিয়ে দেওয়া হল, হিন্দির দাসত্বের বিরুদ্ধে গর্জে উঠল জলপাইগুড়ি বইমেলা কর্তৃপক্ষ। হিন্দি গানে নাচায় নাচ থামিয়ে শিল্পীকে স্টেজ থেকে নামিয়ে দিল কর্তৃপক্ষ। বাঙালির মেরুদণ্ডের জয়। জয় বাংলা।' তাতে একজন এটার বিরোধিতা করে লেখেন, 'ভাষা বিভেদ কেন। এটা একটা নৃত্য শিল্পীর অপমান। আগে থেকে কি এমন কোন নিয়ম কানুন করে দিয়েছিল যে হিন্দি গানে নাচ অ্যালাও না ?।' কেউ আবার ইংরেজদের সঙ্গে তুলনা টেনে বলেন, 'ইংরেজ ২০০ বছর আমাদের উপর অত্যাচার করল অথচ কথায় কথায় ইংরেজি বলতে কারও কোন সমস্যা নেই। এদিকে নিজের দেশের হিন্দি-বাংলা ভাষা নিয়ে এত সমস্যা কেন? হিন্দি হোক বা বাংলা, এটা আমার দেশের ভাষা।' তৃতীয় ব্যক্তি লেখেন, 'অশিক্ষিত। মূর্খ লোকজন। শিল্পের আবার ভাষা। আপনারা বইমেলায় তাহলে ইংরেজি বই বিক্রি বন্ধ করে দিন। ভাষা একটা মাধ্যম, আপনি অন্য ভাষাকে ছোটো করলে সেই জিনিসটাই ফিরে পাবেন। সব কিছুকে গ্রহণ করতে শিখুন তবেই ভালো সংস্কৃতি এগোবে। এইধরণের সংকীর্ণ-রুচিশীল বইমেলাকে বয়কট করা উচিত। ছিঃ এটা লজ্জা বাঙালির।'