১৯৫৪ সালে ৪ এপ্রিল নবাব পরিবারে জন্ম হয়েছিল পারভিন ববির। বেঁচে থাকলে আজ প্রায় সত্তর বছর বয়স হতো বলিউডের অভিনেত্রীর। ৭০-৮০ এর দশকে বলিউড কাঁপিয়ে বেড়িয়েছেন। আজ অভিনেত্রীর জন্মবার্ষিকী।
সালটা ১৯৭২। সেই সময় মডেল হিসাবে কেরিয়ার শুরু করেন পারভিন। মডেলিং করতে করতেই রুপোলি পর্দায় নিজেকে মেলে ধরার সুযোগ পেয়ে যান তিনি। পরের বছর, ১৯৭৩ সালে ‘চরিত্র’ সিনেমার হাত ধরে বলিউডে হাতেখড়ি হয় পারভিনের। বক্স অফিসে ওই ছবি না চললেও পারভিনের উপস্থিতি নজর কাড়ে। এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। আরও পড়ুন: ফের বনশালির নায়িকা, 'লাভ অ্যান্ড ওয়ার'-এ কেমন চরিত্রে দেখা যাবে আলিয়াকে
২০০৫ সালের ২২ জানুয়ারি ফ্ল্যাটে পারভিন ববির দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশের সন্দেহ প্রায় তিন ধরে ফ্ল্যাটের ভিতরে মৃত অবস্থায় পড়েছিল অভিনেত্রীর দেহ। তাঁর মৃত্যু রহস্য, মানসিক অবসাদ এবং মহেশ ভাটের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে নানা কথা উঠেছিল। কিন্তু পারভিন মানেই শুধু এমন মুচমুচে রোম্যান্টিক গল্প নয়। পারভিন ববির জন্মবার্ষিকীর বিশেষ দিনে ফিরে দেখা যাক জিনাত আমনের শেয়ার করা একটি পুরনো পোস্ট।
প্রায় একই সময়ে মুম্বই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছিলেন জিনাত এবং পারভিন। ‘অশান্তি’ ও ‘মহান’ সিনেমায় তিনি পারভিনের সঙ্গে কাজ করেছিলেন। দু’জনের স্টাইল সেন্সও প্রায় এক ছিল। জিনাত জানান, খুবই বুদ্ধিমতী ছিলেন পারভিন। বই পড়তে খুবই ভালোবাসতেন। শ্যুটিংয়ের মাঝেও বই পড়তেন। ধার্মিক বিষয়ে নাকি বিশেষ আগ্রহ ছিল প্রয়াত অভিনেত্রীর। জিনাত আরও জানান, ইন্টিরিয়র ডিজাইনও করতেন পারভিন। শেষ সময় পর্যন্ত তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব ছিল। কোনওদিন রেষারেষি ছিল না।
উল্লেখ্য, বলিপাড়ায় প্রথমে অভিনেতা-পরিচালক ড্যানি ডেনজংপার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন পারভিন। ড্যানির পরে অভিনেতা কবীর বেদীর প্রেমে পড়েছিলেন পারভিন। তবে সেই প্রেমও টেকেনি। এরপর পরভিনের প্রেম হয়েছিল মহেশ ভাটের সঙ্গে। মহেশ তখন বিবাহিত। ১৯৭৭ সালে একে-অপরের সঙ্গে ডেট শুরু করেন তাঁরা। মহেশ এবং পরভিনের প্রেমকাহিনি ছিল সেইসময় বলিপাড়ার অন্যতম চর্চিত বিষয়। সেই সময় লিভ ইনও করছিলেন তাঁরা। স্কিৎজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন পারভিন। প্রেমিকার শেষযাত্রাতেও সঙ্গ দিয়েছিলেন মহেশ ভাট।
পরভিনকে সামলাতে সেই সময় কম হিমশিম খাননি মহেশ। তবে একসময় ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। মানসিক রোগ আরও বেশি করে ঘর করে পরভিনের মনে। একসময় গোটা বলিউড সম্পর্ক ত্যাগ করেছিল পরভিনের সঙ্গে।
২০০৫ সালের ২২ জানুয়ারি মুম্বইয়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় অভিনেত্রীর দেহ। বাড়ির দরজায় ৩ দিন ধরে খবরের কাগজ পড়ে থাকতে দেখে সন্দেহ হয় সকলের। পরে পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে যে, ৩ দিন আগেই মৃত্যু হয়েছে পরভিনের। অবশ্য তদন্তে কোনও অস্বাভাবিকতা খুঁজে পায়নি পুলিশ।
পরভিনের মৃত্যুর পর তাঁর জীবন নিয়ে একটি ছবিও বানান মহেশ। এই ছবিটি প্রযোজনাও করেছিলেন তিনি। ২০০৬ সালে মুক্তি পায় সেই ছবি। যার নাম ‘ও লমহে’। ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন কঙ্গনা রানাওয়াত।