গানে গানে সুরের খেলাই ওঁদের বেঁধে রেখেছে। আর এই সুরের জাদুই তাঁদের গত দশ বছর ধরে একসঙ্গে এক সুতোয় বেঁধে রেখেছে। তাই তো কখনই মাইলের পর মাইল দূরত্ব তাঁদের মধ্যে দূরত্ব আনতে পারেনি। কাদের কথা বলছি? শাহানা বাজপেয়ী এবং স্যমন্তক সিনহার কথা। পেশার কারণ শাহানা লন্ডনে থাকেন। সেখানেই তিনি কলেজে পড়ান। অন্যদিকে স্যমন্তক থাকেন ভারতেই। ফলে গায়িকা দেশে এলেই তাঁর শান্তিনিকেতনের বাড়িয়ে বসে গানের আসর। আবার কখনও পেশার খাতিরেই তাঁরা জুটি বেঁধে দেশে বিদেশে ঘুরে শো করেন। এই তো নববর্ষ উপলক্ষ্যেই তাঁদের শো আছে। কোন রসায়নে তাঁরা একসঙ্গে এত বছর কাটিয়ে দিলেন?
নিজেদের জুটির বিষয়ে আনন্দবাজারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্যমন্তক বলেন, 'আমি শাহানাকে আগে থেকেই চিনতাম। তবে জ্যামিং সেশনের মাধ্যমে বুঝি যে আমরা জুটি বাঁধতে পারি। আসলে এই মাধ্যমে খুব ভালো করে ভাবের আদান প্রদান করা যায়। একবার ইন্দোনেশিয়ার একটি অনুষ্ঠানে একসঙ্গে গাওয়ার সুযোগ হয়। সেখানেই শুরু।' গায়িকা এই বিষয়ে বলেন, 'আমরা একসঙ্গে ফ্রান্স, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া সহ অনেক জায়গায় শো করেছি। আমরা তো এক্স=প্রেম ছবিতেও একসঙ্গে গান গেয়েছি। সেই বায়নাবিলাসি গানটি বেশ জনপ্রিয় হয়েছে।'
শুধু তাই নয়, শাহানা জানান তাঁর এই সঙ্গী নাকি তাঁকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে গান গাওয়ার। একটা সময় নাকি তিনি কাজের চাপে প্রায় গান গাওয়া ছেড়ে দিয়েছিলেন। তখন সম্যন্তক তাঁকে অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ' আসলে ওর সঙ্গে আমার গান বাজনার ভাবনা মেলে। আমরা একসঙ্গে শিকড় বলে একটি অ্যালবাম বের করেছিলাম। তারপর এভাবেই চলতে থাকে।'
এই জুটির ইউএসপি কী? উত্তিরে গায়িকা বলেন, 'আমাদের সঙ্গীতের পছন্দ এক। আমাদের শ্রোতা এক। আমরা কেউই হিন্দি গান গাই না। বাংলা গান আর বাংলা গানের শ্রোতারা হলেন আমাদের লক্ষ্য।'
আজ তো নববর্ষ, তাহলে তাঁদের কাছে এই বিশেষ দিনটির অর্থ কী? তাঁরা বাঙালিয়ানা বলতে কী বোঝেন? উত্তরে শাহানা বলেন তাঁর কাছে বাঙালিয়ানার অর্থ হল, 'বাংলায় কথা বলা, বাংলায় গান শোনা, আর সবার কাছে গলা ফাটিয়ে বলা যে আমি বাঙালি।' অন্যদিকে স্যমন্তক কিন্তু অন্য কিছু ভাবেন। তাঁর মতে বাঙালিয়ানার অর্থ হল, 'পার্ক স্ট্রিটের কোনও রেস্তরাঁয় স্টেক খাওয়া বা বাড়িতে বিউলির ডাল ভাত খাওয়া এক, অন্য ভাষায় গান শোনা আর বাংলা গানকে ভালোবাসা দুই বাঙালিয়ানা। ইংরেজির সঙ্গে গর্ব ভরে সঠিক বাংলা বলাটাও।'