' শোলে ' এবং ' দিওয়ার ' বলিউডে আমাদের সবচেয়ে প্রিয় সিনেমাগুলির মধ্যে একটি । বছরের পর বছর ধরে এই সিনেমাগুলি মানুষকে বিনোদনের খোরাক জুগিয়ে আসছে। যাই হোক, আপনি কি জানেন যে শত্রুঘ্ন সিনহার সঙ্গেই প্রথমে এই দুটি ছবির জন্য যোগাযোগ করা হয়েছিল?
হ্যাঁ, আপনি ঠিকই পড়েছেন! একটি সাক্ষাত্কারে, শত্রুঘ্ন প্রকাশ করেছিলেন যে তাকে 'শোলে'-তে অমিতাভ বচ্চনের চরিত্রে অভিনয় করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল । যাই হোক, নিজের ব্যস্ত শিডিউলের জন্য সিনেমায় পর্যাপ্ত ডেট দেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব ছিল না। তাই হাতছাড়া হয় কাজ। পরবর্তীতে তিনি 'শোলে'কে অগ্রাধিকার না দেওয়ার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। সঙ্গে অমিতাভের জন্য আনন্দও প্রকাশ করেছিলেন, যিনি পরবর্তীকালে চলচ্চিত্রে তার যুগান্তকারী প্রভাব বিস্তার করে একজন আইকনে পরিণত হন।
শত্রুঘ্ন জানিয়েছিলেন 'দিওয়ার'-এর মতো আইকনিক ছবিও ফিরিয়েছিলেন তিনি। অনুশোচনার ফলস্বরূপ এই সিনেমাগুলি কখনই দেখেননি। নিজের এই সিদ্ধান্তকে তিনি ‘ত্রুটি’ হিসেবে দেখলেও, অমিতাভ বচ্চনের সাফল্যে আনন্দিত ছিলেন। কিন্তু মনের মধ্যে থাকা অনুশোচনাবোধের কারণেই আজ অবধি দেখেননি সিনেমাগুলি।
প্রসঙ্গত, 'শোলে' এবং 'দিওয়ার' ছিল অমিতাভ বচ্চনের কেরিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, যা তাঁর পথ স্টারডমের দিকে প্রসারিত করেছিল। এবং তাকে ভারতের 'অ্যাংরি ইয়ং ম্যান'-এর খ্যাতিও দিয়েছিল।
শত্রুঘ্ন এই সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেছেন যে, মনোজ কুমারও 'শোর'-এ একটি ভূমিকার জন্য তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। মনোজ একাধিকবার এসেছিলেন শত্রুঘ্নর বাড়িতে, এমনকী শ্যুটের শিডিউল সামান্য বদলাতেও রাজি ছিলেন। কিন্তু সেই সময়ও হাতে থাকা একাধিক প্রোজেক্টে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার কারণে তিনি নিতে পারেননি সেই কাজ। ফলে এই সিনেমাটিও দেখেননি।
১৯৬৯-এ বচ্চন ছবির জগতে আত্মপ্রকাশ করেন সাত হিন্দুস্তানি নামক একটি সিনেমার মাধ্যমে। শুরুর সেই সময় থেকে, ১৯৭২ সাল পর্যন্ত টানা ১১টি ফ্লপ ছবি করে একসময় তাঁর ফিল্মি কেরিয়ার একপ্রকার চলেই গিয়েছিল বাতিলের খাতায়। রপর ‘জঞ্জির’ এর মতো সুপারহিট ছবিতে অভিনয় তাঁর ভাগ্য বদলে দেয়। ১৯৭৫-এ আসে দিওয়ার, যা সেই বছরে সর্বাধিক উপার্জিত ছবির তালিকায় ছিল ৪ নম্বরে। খ্যাতি আসতে শুরু করে অমিতাভের কেরিয়ারে।
আর ১৫ আগস্ট ১৯৭৫-এ মুক্তিপ্রাপ্ত শোলে ভারতের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাণিজ্যিকভাবে সফল চলচ্চিত্র হিসেবে অভিহিত হয়েছিল। এই ছবির রোজগার হয়েছিল প্রায় ২,৩৬,৪৫,০০,০০০ টাকা (উইকিপিডিয়া থেকে প্রাপ্ত হিসেব অনুসারে) যা ৬০ মিলিয়ন আমেরিকান ডলারের সমতুল্য। ১৯৯৯-এ বিবিসি ইন্ডিয়া এই ছবিটিকে ‘Best picture of the millennium’ বলে ঘোষণা করেছিল। বক্স অফিসে শোলে-র অভাবনীয় সাফল্যর পর অমিতাভ মুম্বই ফিল্ম জগতে তাঁর জায়গা পাকা করে নেন।