সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদল আসে ছবির সাফল্যের মাপদণ্ডে। বছর দশক আগেও ১০০ কোটির ক্লাবে পা দেওয়াটাই ছিল বিরাট ব্যাপার। কিন্ত এখন ১০০ কোটি আয় করেও ডাহা ফ্লপ করছে ছবি। বাণিজ্যিক হিন্দি ছবির পুনরুজ্জীবন ঘটেছে গদর ২-এর হাত ধরে, দাবি বক্স অফিস বিশেষজ্ঞদের। সানি দেওলের ঢাই কিলোর হাতে ম্যাজিকে বুঁদ গোটা দেশ। ৪০০ কোটির ক্লাবে মঙ্গলবারই নাম লেখাবে গদর ২। ওদিকে বছরের শুরুতে মুক্তি পাওয়া পাঠান দেশের বক্স অফিসে আয় করেছে ৫৭৩ কোটি টাকা।
টাকার অঙ্কই এখন ছবির সাফল্যের খতিয়ান কিন্তু সত্তর-আশি, এমনকী নব্বইয়ের দশকেও কোনও ছবি কতদিন থিয়েটারে টিকলো সেটাই ছিল তার সাফল্যের মানদণ্ড। পাশাপাশি কত দর্শক সেই ছবি দেখতে এসেছেন সেই সংখ্যাও বিচার করা হত। জানেন কি সেই হিসাবে ‘শোলে’ আজও ভারতের সবেচেয় বড় ব্লকবাস্টার ছবি।
১৯৭৫ সালে মুক্তি পেয়েছিল জয়-বীরুর এই গল্প। ৪৮ বছর আগে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবি সেইসময় দাঁড়িয়ে ব্যবসা করেছিল ৩৫ কোটি টাকার, যা এক কথায় অকল্পনীয়। রমেশ সিপ্পি পরিচালিত শোলে ছবিতে লিড রোলে অভিনয় করেছিলেন অমিতাভ বচ্চন, ধর্মেন্দ্র, হেমা মালিনী, জয়া বচ্চন, আমজেদ খান, সঞ্জীব কুমাররা। জয়-বীরুর দোস্তি, বাসন্তীর মস্তি, রাধার সারল্য, দু-হাত কাটা ঠাকুর আর জাঁদরেল খলনায়ক গব্বর, এন্টারটেনমেন্টের সব মশালা মজুত রয়েছে শোলেতে! সেলিম-জাভেদের লেখনি অন্যমাত্রা দিয়েছিল এই ছবিকে। জানেন ২০২৩ সালে মুক্তি পেলে এই ছবি কত শো কোটি টাকা কামাই করত?
দর্শকাসন ভরানোর মামলায় শোলেই এক নম্বর ভারতীয় ছবি, এমনটা দাবি করা হয় একাধিক রিপোর্টে। বলা হয়, বিশ্বজুড়ে মোট ২৫ কোটি টিকিট বিক্রি হয়েছিল শোলের, সেই সুবাদেই ভারতীয় সিনেমা ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হিট এই ছবি। টাকার অঙ্কের মামলায় ‘শোলে’ মুক্তির পর এক দশক পর্যন্ত কোনও ছবি ৩৫ কোটির ফিগার ছুঁতে পারেনি। IMDb-র রিপোর্ট অনুযায়ী, শোলে যখন প্রথম ভারতে মুক্তি পেয়েছিল, সেই ছবির টিকিট বিক্রির পরিমাণ ছিল ১৫ থেকে ১৮ কোটি। একাধিকবার এই ছবি রি-রিলিজ হয়েছে, সঙ্গে রয়েছে বিশ্বের অনান্য দেশে রিলিজের হিসাবও। সব মিলিয়ে রমেশ সিপ্পির এই ছবি দেখতে হলে এসেছিল মোট ২৫ কোটি দর্শক।
মুক্তির পর একটানা পাঁচ বছর সিনেমাহলে টিকে ছিল শোলে। সেই সময় সিনেমা হলে টিকিটের দাম ছিল ২ থেকে আড়াই টাকা। শোলে-র বাজেট ছিল ৩ কোটির আশেপাশে। ফিল্ম সমালোচক অনুপমা চোপড়ার লেখা বই- ‘শোলে-দ্য মেকিং অফ এ ক্লাসিক’ অনুসারে মুক্তির পর ৩৫ কোটির ব্যবসা করেছিল শোলে। যদিও পরিচালক রমেশ সিপ্পি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ছবির আয় ছিল ২৫ কোটি টাকা। তাই সহজেই বলা যায়, প্রোডাকশনে যে পরিমাণ টাকা খরচ হয়েছিল তার ৮ থেকে ১০ গুণ মুনাফা কামিয়েছিল এই ছবি। কনসিউমার প্রাইস ইনডেক্স (CPI) অনুসারে এই টাকার অঙ্ক হিসাব করলে শোলে বর্তমানে মুক্তি পেলে কমবেশি ৯৮১ কোটি টাকার বিজনেস করত।