কেকেআর বনাম আরসিবি ম্যাচে কমেন্ট্রি বক্সে দেখা মিলেছিল সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার প্রেরণা দাসের। যার পর থেকে অকথ্য ট্রোল শুরু হয় নেটপাড়ায়। এমনিতেই বিরাটের আউট নিয়ে ক্ষিপ্ত ছিল একাংশ। সেখানে প্রেরণার উপর ট্রোলিং যেন বেড়ে যায় আরও কয়েকগুণ। অবশেষে এই নিয়ে মুখ খুললেন তিনি। ভিডিয়ো বার্তা দিলেন হেটার্সদের উদ্দেশে।
প্রেরণাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি গত পাঁচ বছর ধরে কনটেন্ট ক্রিয়েটার হিসেবে কাজ করছি। আমরা যারা এই কাজ করি, তাঁরা সকলেই ট্রোলিংয়ের সঙ্গে অভ্যস্ত। আমি বিশ্বাস করি, খারাপ বলার লোক যেমন আছে, তেমন ভালো লোকও থাকবে। তাই কখনও ট্রোলে মুখ খুলিনি। তবে কিছুদিন ধরে দেখছি ট্রোলটা যেন একটু বেশি মাত্রাতেই হচ্ছে। তাই ভাবলাম এবার একটু কথা বলা দরকার।’
এরপর তাঁর আইপিএলে উপস্থিতির প্রসঙ্গ টেনে প্রেরণা বললেন, ‘আমি ভেবেছিলাম আমি কলাকাতাকে রিপ্রেজেন্ট করছি। এটা একটা গর্বের মুহূর্ত হবে। তেমনটা হল না যদিও। প্রচণ্ড খারাপ লেগেছে। মানুষ তো, কোথাও গিয়ে মনে প্রভাব পড়েই। কোনও অশ্লীল কাজ তো করিনি। এমন কিছুও করিনি যা দৃষ্টিকটু। তার পড়েও এসব হচ্ছে। অকথ্য ভাষায় গালাগালি করছে লোক। কে ডিজার্ভিং আর কে ডিজার্ভিং না, সেটা তো এরা ঠিক করবে না। লোক তো কোহলিকেও গালাগালি দেয়।’
প্রেরণার দাবি, তিনি মেয়ে বলেই এই ট্রোলিংয়ের মাত্রাটা আকাশ ছুঁয়েছে। বললেন, ‘আমার আগেও বহু ক্রিয়েটার গেছে। রাহুল গেছে, উন্মেষদা গিয়েছে। আমার মনে হয় একটা মেয়ে বলেই এত লোকের সমস্যা। যে ও কীভাবে পৌঁছে গেল ওখানে। মুম্বই-দিল্লিতেও কিন্তু হচ্ছে, শুধু কলকাতায় নয়। এখনও অনেক লোক বোঝে না ক্রিয়েটারদের ক্ষমতা কতটা। এখন কিন্তু ক্রিয়েটারদের জাতীয় পুরস্কারও দেওয়া হচ্ছে। আমি ভেবেছিলাম, আমার কলকাতাকে রিপ্রেজেন্ট করা কলকাতাবাসীর কাছে গর্বের হবে। কিন্তু তা হয়নি। একটা শব্দ ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছি, কিছু মানুষের ফেটেছে।’
বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলের বাড়বাড়ন্ত কতটা প্রভাব ফেলে কোনও মানুষের মনে তাও উল্লেখ করতে ভুললেন না এই সুন্দরী। বলতে শোনা গেল, ‘ট্রোলিং নিয়ে ভাবব না এটা হয় না। আমরা তো মানুষ। রোবট নেই। মাথায় চলেই আসে। ঘুরতে থাকে সর্বক্ষণ। আমি অনেক চোখের জল ফেলেছি। যাই হোক সেটা নিয়ে এখানে বলব না, তাহলে অন্য ট্রোল হবে। এই ট্রোল কিন্তু মানসিকভাবে প্রভাব ফেলে। কেউ কেউ আত্মহত্যার পথও বেছে নেয়। তারপর সবাই বলে আহা রে, ছেলেটা বা মেয়েটাকে ট্রোল করা হল।’
সবশেষে কড়া ভাষায় হেটার্সদের বার্তা দিয়ে বললেন, ‘আমি একজন ফ্যানগার্ল হিসেবে গিয়েছিলাম কেকেআর-এর ম্যাচে। সেখান থেকেই আমি বসেছিলাম কমেন্ট্রি বক্সে। ভেবেছিলাম কলকাতার মানুষ গর্ব করবেন। যাই হোক, এত লোককে হিংসে করতে দেখে একটু অবাক হয়েছি। তবে অনেকে আমাকে শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন। আমার ভালোবাসার সেই মানুষগুলোকে অনেক ধন্যবাদ। এভাবেই আমার পাশে থেকো। ট্রোলারদের আমার আর আলাদা করে কিছু বলার নেই।’