বাংলা নিউজ > বায়োস্কোপ > Theatre Review: ঋদ্ধির পরিচালনায় শঙ্করের শেষ ছবি, নবীন-প্রবীণের দ্বন্দ্ব নিয়ে কেমন হল সুমনের 'আজকের সাজাহান'

Theatre Review: ঋদ্ধির পরিচালনায় শঙ্করের শেষ ছবি, নবীন-প্রবীণের দ্বন্দ্ব নিয়ে কেমন হল সুমনের 'আজকের সাজাহান'

'আজকের সাজাহান'-এ নবীন-প্রবীণের জোর টক্কর!

Ajker Sahajan Theatre Review: শহরে এখন যে কটি নাটক নিয়ে জোর চর্চা চলছে তার অন্যতম হল সুমন মুখোপাধ্যায়ের আজকের সাজাহান নাটকটি। মুখ্য ভূমিকায় আছেন শঙ্কর চক্রবর্তী এবং ঋদ্ধি সেন। কেমন লাগল এই নাটক? জানাচ্ছে HT বাংলা।

যে জিনিসটা আমরা সব থেকে বেশি ভালোবাসি, কাছে ধরে রাখতে চাই ডুবে থাকতে চাই একটা সময় সেটার প্রতি এই অগাধ টান, ভালোবাসাই সেটার সঙ্গে বিচ্ছেদের কারণ হয়ে দাঁড়ায় বোধহয়! অন্তত তেমনটাই মনে হল সুমন মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘আজকের সাজাহান’ নাটকটি দেখে। এই নাটকটি মূলত উৎপল দত্তের। এখানে প্রধান ভূমিকায় দেখা গিয়েছে শঙ্কর চক্রবর্তী, ঋদ্ধি সেনকে। এছাড়া অভিনয়ে বিমল চক্রবর্তী, অসীম রায় চৌধুরী, গৌতম সরকার প্রমুখ আছেন।

এই নাটকের গল্প আবর্তিত হয়েছে কুঞ্জ বিহারী চক্রবর্তীকে ঘিরে। তিনি একজন নাট্যব্যক্তিত্ব। নাটকই তাঁর ধ্যান, জ্ঞান, পেশা, ভালোবাসা সব। নাটকের মঞ্চ থেকে এখন রিটায়ার্ড তিনি, তবুও নাটককে ছাড়েননি তিনি। তাঁর করা শেক্সপিয়রের ‘ওথেলো’ বলুন বা ‘সাজাহান’ সমস্ত নাটকের সমস্ত সংলাপ তাঁর মুখস্থ। তাঁর অভিনীত সমস্ত নাটকের পোশাক পর্যন্ত তিনি তাঁর কাছে সযত্নে রেখে দিয়েছেন। নাটকের ছবি, মেকআপ, পোশাক নিয়েই থাকেন। সঙ্গে আছে সুরা। অভাব অনটন সংসারে লেগেই আছে। তবুও নাটক নিয়েই থাকেন তিনি। এমন অবস্থায় তাঁর কাছে একটি ছবির অফার আসে। প্রাথমিক ভাবে ফিরিয়ে দিলেও পরে মেনে নেন। শুটিং শুরু হয় ছবির। আর সেটা যত এগোতে থাকে নবীন-প্রবীণের দ্বন্দ্ব তত প্রকট হতে থাকে। বাড়তে থাকে ভাবনার অমিল। যদিও পরিচালক সুব্রত জানেন কী করে কাজ হাসিল করতে হয়। তিনি তাঁর ছবিতে সবটা নিখুঁত চান। একদম রিয়েলিস্টিক। তাতে কেউ মারা গেলেও তিনি পরোয়া করেন না। নিষ্ঠুর রূপ ফুটে ওঠে তাঁর। মনে হয় সে যেন এক কোনও গোপন অভিসন্ধি নিয়েই এই ছবি করতে নেমেছেন। সেটা কি আদৌ সত্যি? নাকি সবটাই মনের ভুল? এটা এই নাটক দেখলে বোঝা যাবে।

কুঞ্জ বিহারীর চরিত্রে আছেন শঙ্কর এবং সুব্রতর চরিত্রে ঋদ্ধি। এই বয়সে এসেও এভাবে টানা দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে মঞ্চ দাপিয়ে বেড়ানো সহজ কথা নয়। তারপর সঙ্গে অভিনয় তো আছেই। সবটা মিলিয়েই শঙ্কর চক্রবর্তী নিজেই যেন নিজের তুলনা। অনবদ্য। অন্যদিকে ঋদ্ধি এই যুগের প্রতিনিধিত্ব করে চরিত্রটাকে যথাযথ ফুটিয়ে তুলেছে। কিছু দৃশ্যে তাঁর চোখে মুখের ওই ক্রুরতা, নিষ্ঠুরতা গায়ে কাঁটা দেওয়াবেই। বেশ কয়েকটি দৃশ্য আলাদা করে মন কাড়বে। সঙ্গে এই গুরু গম্ভীর নাটকে হালকা কমিক রিলিফ এনেছেন অসীম রায় চৌধুরী এবং সৌমিক মৈত্র।

এবার আসা যাক অন্য প্রসঙ্গে। সুমন মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। তবে এই নাটকের মঞ্চ সজ্জা এবং শব্দের কাজ ভীষণ ভালো। সবটাকে একটা আলাদা মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছিল। মাঝে মধ্যে এখানে সিনেমাটিক ফিল পাবেন। কেন সেটা দেখলে বোঝা যাবে।

তবে এক কথায় বলতে গেলে, সুমন মুখোপাধ্যায়ের আজকের সাজাহান বেশ ভালো। থিয়েটার নিয়ে আবারও মানুষের মধ্যে যে উন্মাদনা ফিরছে সেটা কেন সাম্প্রতিককালের এই নাটকগুলো দেখলে বোঝা যাবে।

বন্ধ করুন