ভাইরাল দিদি নন্দিনী গত কয়েকবছরে তরতরিয়ে উঠেছেন উন্নতির শিখরে। ডালহৌসির রাস্তার ধারের একটা দোকানে রান্না করতেন। সাধারণ পাইস হোটেল, পথচলতি মানুষ ও অফিস পাড়ার জন্য। তবে একদিন এক ইউটিউবারের চোখে পড়ে যান হঠাৎই। জিন্স-টপ, গলায় ব্লুটুথ হেডফোন পরা মেয়েটাকে নিয়ে ভ্লগ বানিয়ে নিজের চ্যানেলে ছাড়েন সেই ইউটিউবার। আর তারপর রাতারাতি আসে জনপ্রিয়তা।
একের পর এক ইউটিউব চ্যানেলে আসতে থাকেন তিনি আর তার দোকানও। এখন তো এতটাই ভিড় হয় ডালহৌসির দোকানে যে বসার জায়গা পাওয়া যায় না। মেনুতে এখন শুধু আর ভাত-ডাল-ডিম-মাছ নেই। জুড়েছে পোলাও, ফ্রায়েড রাইস, চিকেন, মটনের মতো নানা পদও।
এখানেই থেমে থাকেননি নন্দিনী। ২০২৩ সালে অভিনয়ও শুরু করে দেন। তাও আবার বাংলা জগতের খ্যাতনামা অভিনেত্রী সাবিত্রী মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। সিনেমার নাম তিন সত্যি। নিজের ইউটিউব চ্যানেল খুলেছেন। যেখানে পেইড প্রোমোশনের পাশাপাশি দিদি করে থাকেন ফুড ও ট্রাভেল ভ্লগিং।
তবে নন্দিনীর অনুরাগীদের জন্য সুখবর। বিশেষ করে যারা তাঁর হাতের রান্না খেতে ভালোবাসেন। নতুন রেস্তোরাঁ খুললেন তিনি। যার নাম রেখেছেন, ‘নন্দিনীদির হেঁশেল’। আকাঙ্খা মোড়ে থাকা দোকানটি পথ চলা শুরু করবে ১২ জানুয়ারি থেকে। সঙ্গে নিজের রেস্তোরাঁর সময়ও নির্দিষ্ট করে দিলেন, সকাল ১১টা থেকে রাত ১১টা অবধি খোলা থাকবে এটি।
বাবার স্বপ্নপূরণের জন্যই স্থায়ী মাস মাইনের চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন। করোনা লকডাউনের পরপরই বাবার পাশে এসে দাঁড়ান, হাতে হাতে শুরু করেন ডালহৌসির হোটেল সামলানো। হয়তো তখনও ভাবেননি এত জলদি বদলাবে ভাগ্যের চাকা।
দিদি নম্বর ১-এ এসে নিজের জীবন লড়াই তুলে ধরেছিলেন তিনি রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েছিলেন তাঁরা ৩ বোন। দিদি আর বোন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েছেন। তিনি নিজেও ফ্যাশন ডিজাইনিং নিয়ে পড়াশোনা করেন। একসময় বাড়ির অবস্থাও ছিল বেশ ভালো। তবে নোটবন্দির সময় বাবার ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। ডালহৌসিতে একটি দোকানে রুটি বানানোর কাজ নেন তাঁর বাবা। সেইসময় কিছু শারীরিক ও মানসিক সমস্যার কারণে বিছানায় শয্যাশায়ী হয়ে গিয়েছিলেন। ধীরে ধীরে মা-বোনদের যত্নে সেরে উঠে চাকরি নিয়ে চলে গিয়েছিলেন বাইরে। হোটেলে কাজ করতেন সেখানে। আর এখন তাঁর নিজেরই দুটো দোকান। সঙ্গে বিনোদন জগতেও বেশ নাম করেছেন। আর খুব জলদি তো আত্মপ্রকাশ করবেন অভিনেত্রী হিসেবেও।