চিনে আবার নতুন করে ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে করোনাভাইরাস। এই মুহূর্তে ওমিক্রন BF.7 নামে করোনাভাইরাসের একটি উপরূপ সংক্রমণ ঘটাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। চিনে যে করোনা-টিকা দেওয়া হয়ছে, সেটি থেকে পাওয়া রোগ প্রতিরোধ শক্তির বিরুদ্ধে এই ওমিক্রনটি বেশ শক্তি নিয়েই কাজ করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর সেই কারণেই চিনে এমন মারাত্মক সমস্যা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তার উপর দীর্ঘদিন ধরে চলা লকডাউনের ফলে সাধারণ মানুষের করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ শক্তিও খুব একটা জোরদার নয় ওই দেশে।
কিন্তু তার পরেও একটি অন্য কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, এই নতুন যে উপরূপ মারাত্মক ছড়াচ্ছে গোটা দেশে, সেটিই ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরির জন্য একা দায়ী নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন চিনে করোনা পরিস্থিতি আবার বিগড়ে যাওয়ার পিছনে পিছনে রয়েছে অন্য এক ধরনের করোনার অবদান। সেটি হল ‘ককটেল করোনা’। নামটি শুনে মজা লাগলেও বিষয়টি আসলে মজার নয়। একসঙ্গে অনেকগুলি রূপের সংমিশ্রণে তৈরি হয়েছে এই করোনা। বর্তমানে চিনে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তার জন্য করোনার চারটি উপরবপকে দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞরা। মিলিতভাবে একসঙ্গে সংক্রমণ ঘটাচ্ছে এই চারটি উপরূপ। BF.7 তার মধ্যে একটি। আর সেই কারণেই বহু মানুষের একসঙ্গে করোনা সংক্রমণ ঘটেছে। কোন একটি রূপ বা উপরূপের রোগ প্রতিরোধ শক্তি তাঁদের শরীরে তৈরি হলেও বাকিগুলি থেকে তাঁরা বাঁচতে পারছেন না। ফলে সকলের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে এই ভাইরাস সংক্রমণ।
এবার আসা যাক ভারতের প্রসঙ্গে। ভারতেও কি ছড়াতে পারে এই ককটেল করোনা? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেই আশঙ্কা তুলনামূলকভাবে কম। তার কারণ কী? তার কারণ হল ভারতে ইতিমধ্যেই হার্ড ইমিউনিটি ভালো মাত্রায় তৈরি হয়েছে। এছাড়া ভারতে একই সময়ে একাধিক রূপ এবং উপরূপের করোনা উপস্থিত ছিল। বহু মানুষ সেগুলির থেকে সংক্রমিত হয়েছেন। প্রাকৃতিক উপায়ে সেগুলির রোগ প্রতিরোধ শক্তি মানুষের শরীরে তৈরি হয়েছে। এর পরে আছে ব্যাপকমাত্রায় টিকাদান। সব মিলিয়ে ভারতের সাধারণ মানুষ করোনার একাধিক রূপ এবং উপরূপের সঙ্গে লড়াই করার জন্য অনেক বেশি মাত্রায় প্রস্তুত। চিনের মানুষের ক্ষেত্রে যার অভাব হয়তো কিছুটা রয়েছে। এমনই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই তথাকথিত ককটেল করোনা সংক্রমণ যদি ভারতে বৃদ্ধি পায়ও, তাহলেও বিশেষ ভয় নেই। এমনই আশা চিকিৎসকদের।