'নাক্কু নাকুর না যাও ঠাকুর...' নবমী নিশি ফুরিয়েছে। আজ উমার ফিরে যাওয়ার দিন। আর বাঙালিদের আরও এক বছর প্রতীক্ষা করার পালা। আজই ফুরোচ্ছে এবারের মতো বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। এবার নতুন বছরের অপেক্ষা যবে হাতে ক্যালেন্ডার পেলেই সকলে টুক করে দেখে নেবে পুজো কবে, শনিবার রবিবার পড়ল নাকি তার মধ্যে...? কিন্তু এগুলো তো এখনও ঢের দেরি, আপাতত আজকে সবারই মন খারাপ, মায়ের থেকে মন ভরে আশীর্বাদ চেয়ে নেওয়ার, মনের কথা জানানোর পালা। তবে জানেন কি আজকে কেন নীলকণ্ঠ পাখি আকাশে উড়িয়ে দেওয়া হয়?
আশ্বিন মাসে নয়দিন ধরে চলা নবরাত্রির পর আসে বিজয়া দশমী। মনে করা হয় এদিনই দেবী দুর্গার হাতে বধ হয়েছিলেন মহিষাসুর। কেউ কেউ আবার মনে করেন রাম রাবণের যুদ্ধে এদিনই রাবণকে হত্যা করে রাম বিজয়লাভ করেছিলেন। ফলে যে যে ঘটনাই মানুক না কেন এটুকু স্পষ্ট যে এদিন ভালোর হাতে খারাপের নিধন হয়েছিল। একই সঙ্গে উমা তাঁর শ্বশুরবাড়ি ফিরে যান। ফলে সবটা মিলিয়েই যে এই দিনটি বিশেষ এবং তার একাধিক নিয়ম কানুন আছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
নীলকন্ঠ পাখি ওড়ানোর রেওয়াজ
দশমীর দিন যে নিয়ম নীতি মানা হয় সেগুলোর অন্যতম হল নীলকণ্ঠ পাখি উড়িয়ে দেওয়া। কিন্তু কেন এদিন নীলকণ্ঠ পাখি ওড়ানো হয়? রাবণকে বধ করার সময় রাম নীলকন্ঠ পাখি দেখতে পেয়েছিলেন। তাই পুরাণ মতে নীলকণ্ঠ পাখি শুভর প্রতীক। তাই দশমীর দিন যদি কেউ নীলকণ্ঠ পাখি দেখেন তাহলে মনে করা হয় তাঁর পাপমুক্তি ঘটল এবং মনের সব সাধপূরণ হবে।
আরও পড়ুন: পরের বছর ২০২৪-এ কবে দুর্গাপুজো, ক’টা ছুটি নষ্ট হচ্ছে? জেনে নিন বিশদে
আরও পড়ুন: দুর্গাপুজোর আমেজে মাতোয়ারা সুস্মিতা, মেয়ের সঙ্গে সারলেন প্যান্ডেল হপিং, করলেন ধুনুচি নাচও!
নীলকণ্ঠ পাখি উড়িয়ে দেওয়া নিয়ে আরও একটি মত প্রচলিত আছে। শিব যেহেতু গরল পান করেছিলেন, সেহেতু তাঁকে নীলকণ্ঠ বলা হয়ে থাকে। তাই মনে করা হয় এদিন নীলকণ্ঠ পাখি যদি উড়িয়ে দেওয়া হয় তাহলে সেটা উড়ে গিয়ে মহাদেবকে খবর দেবে যে তাঁর ঘরণীর ফিরে আসছেন।
কিন্তু বর্তমানে সরকারি ভাবে নীলকণ্ঠ পাখির কেনাবেচা বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। এই পাখির সংখ্যা এতটাই কমে গিয়েছে যে এই নিয়ম আনা হয়েছে। তবুও আজও অনেক জায়গাতেই লুকিয়ে হোক বা প্রকাশ্যে এই পাখি উড়িয়ে দেওয়া হয় আকাশে।