হৃদরোগের আশঙ্কা সাধারণত বয়সের উপর নির্ভর করে না। বয়স ২০ হোক বা ৬০, যে কারোরই হৃদরোগের জটিলতা দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞদের কথায়, মূলত রোজকার জীবনযাপন এর জন্য দায়ী। উচ্চ রক্তচাপ, নিয়মিত ব্যায়াম না করা, অস্বাস্থ্যকর খাবারদাবার খাওয়ার কারণে এই রোগের ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। এগুলোর পাশাপাশি ঋতু পরিবর্তনের কারণেও বাড়তে পারে হৃদযন্ত্রের সমস্যা।
চিকিৎসকের কথায়, শীতকালে হৃদরোগের সমস্যা আরও গুরুতর হয়। মুম্বাইয়ের গ্লোবাল হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ প্রবীণ কুলকার্নির কথায়, যাঁরা বেশিমাত্রায় ধূমপান করেন, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবিটিস রোগে ভোগেন, শীতে তাঁদের এই সমস্যার প্রবণতা বেড়ে যায়। এছাড়াও অনিয়মিত খাওয়াদাওয়ার কারণে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল বাড়তে থাকে। এই ধরনের কোলেস্টেরল ধমনীতে জমে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
বেশ কিছু সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, শীত পড়তে শুরু করলে হার্ট অ্যাটাক, কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা, হার্ট ফেইলিওর, স্ট্রোকের মতো সমস্যা বাড়তে থাকে। পারদ নামতে থাকলে শরীরের প্যারাসিম্প্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্র রক্তনালিগুলিকে সংকুচিত করে দেয়। এর ফলে রক্ত প্রবাহের পথ সরু হয়ে আসে। এর থেকেই বেড়ে যায় হৃদরোগের সমস্যা।
কীভাবে মুক্তি পাওয়া সম্ভব?
চিকিৎসক কুলকার্নির কথায়, এই সময়ে কয়েকটি নিয়ম মেনে চললে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটা এড়ানো যায়।
- শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখতে পারলে সমস্যা অনেকটাই এড়ানো যায়। এই কারণে শীত পড়তে শুরু করলে গরম জামাকাপড় পরে বাইরে বেরোনো ভালো। কোনওভাবেই যেন সর্দি কাশি না লাগে, সেদিকেও নজর রাখা জরুরি।
- নিয়মিত ব্যায়াম করা এই সময় জরুরি। শীতে নিয়মিত পেশি সঞ্চালন করলে শরীরের তাপমাত্রা সহজে কমে না। নিয়মিত ব্যায়ামে রক্ত সঞ্চালনও ঠিক থাকে। তবে ঠান্ডা আবহাওয়ার মধ্যে ব্যায়াম করা ঠিক নয়। ঘরের তাপমাত্রায় শরীরচর্চা করাই ভালো।
- অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া থেকে হৃদযন্ত্রের সমস্যা আরও বেড়ে যায়। খারাপ কোলেস্টেরল রয়েছে এমন তেল দিয়ে রান্না করা খাবার এড়িয়ে চলুন। এছাড়া ডায়েটের মধ্যে মরশুমি শাকসবজি, বেরি, গাজর, ব্রকলি ইত্যাদি রাখতে পারেন। এগুলি শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে।