নিরাপত্তার কথা উঠলে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ – কথাটা সবার আগে মাথায় আসে। ছোট হলেও এর অর্থ গভীর। পথ দুর্ঘটনা এড়াতে বাংলাজুড়ে পুলিশের তরফে এইভাবেই মানুষকে সচেতন করার কাজ চলছে। তবে শুধু একটা ক্যাপশন তৈরি করাই নয় সমসাময়িক প্রাসঙ্গিকতাকে টেনে এনে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের মাধ্যমে ট্রাফিক এবং আইনের নিয়ম সংক্রান্ত একাধিক বার্তা দেওয়াও রাজ্য পুলিশের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠেছে। তারই নবতম সংযোজন ইরানি গান ‘জামাল কুদু’। বলিউডে এই গান তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ায় জুড়েও নতুন মোড়কে ‘জামাল কুদু’র আকর্ষণ তুঙ্গে। সেই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’-র প্রচারে বিশেষ চমক দিল রাজ্য পুলিশ। ফেসবুকে এই গানকে হাতিয়ার করেই নয়া ক্যাপশন ‘বাড়িতে চলতে পারে, গাড়িতে নয়।’
গত ১১ জানুয়ারি ওয়েস্ট বেঙ্গল পুলিশ ফেসবুকে অ্যানিম্যাল ছবির এই গান পোস্ট করে সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ-এর প্রচার শুরু করে। যার ভিউয়ার্স ইতিমধ্যেই ৮.৮ মিলিয়ন ছাড়িয়ে গিয়েছে। জনপ্রিয় গানের সঙ্গে রাজ্য পুলিশ পথ নিরাপত্তায় ওই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের বিষয়কে জুড়ে দেওয়ায় নেটিজেনরাও প্রশংসায় পঞ্চমুখ। টপ লিস্টে থাকা ওই গানের দৃশ্যকে মোচড় দিয়ে যেভাবে পথ নিরাপত্তায় সচেতনতার প্রচারে প্রাসঙ্গিক করে তুলেছে রাজ্য পুলিশ, সেই উদ্ভাবনী ভাবনাকেই কুর্নিশ জানাচ্ছেন সবাই।
ওই গানের সুরে মাথায় মদের গ্লাস নিয়ে ববি দেওল যখন দুলছেন, তখন ওই ভিডিয়োতে ওয়েস্ট বেঙ্গল পুলিশের লোগো দিয়ে নিচে দুটি মদের বোতলের ইমোজি দিয়ে ভেসে আসছে ‘বাড়িতে চলতে পারে’। তার কিছুক্ষণ বাদেই একটি গাড়িতে স্টিয়ারিং-র সামনে চালকের হাতে মদের বোতল। এবার নিচে ভেসে আসছে ‘গাড়িতে নয়!’ সেইসঙ্গে ক্রস চিহ্ন। পোস্টের শিরোনামেও লেখা একই কথা। হ্যাসট্যাগে ‘নো ড্রানকেন ড্রাইভিং’।
আর এতেই হিট ওই সরকারি প্রকল্পের প্রচার। তাই ওয়েস্ট বেঙ্গল পুলিশের ওই প্রচার রাজের একাধিক জেলা পুলিশও তাঁদের সামাজিক প্ল্যাটফর্মে একইভাবে প্রচার শুরু করেছে। আসলে হবেই বা না কেন। পঞ্চাশের দশকে ফরাসি ভাষায় লেখা এই গান ঘিরে ইতিমধ্যেই পোস্ট, রিলস, স্টোরি, শর্টস সব হয়ে গিয়েছে । সামাজিক মাধ্যম খুললেই ভেসে আসছে, ‘জামাল জামালেক জামলো জামাল কুদু।’
ইরানের জনপ্রিয় কবি বিজান সামানদারের লেখা এই গান যা ‘জামাল জামাল’ নামে পরিচিত ছিল, তার বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায়, ‘ও আমার প্রিয়, আমার ভালোবাসা, আমার মিষ্টি ভালোবাসা।’ প্রেমিকের প্রতি প্রেয়সীর আকুতি, ‘ও আমার প্রিয়, আমার হৃদয় নিয়ে খেলো না তুমি। তুমি নিজের জীবনের নতুন শুরু করতে চলেছ, আমি যেন পাগল হয়ে উঠেছি আরও।’ এমন রোমান্সের গান যদি সরকারি প্রকল্পের প্রচারেও জুড়ে যায় তাহলে তার সুফল তো মিলবেই মিলবে। এমনই বলছেন রাজ্য পুলিশের এক কর্তা।