বাস্তবেও এবার থ্রি ইডিয়টস সিনেমার পুনরাবৃত্তি। বাস্তব মেনেই সিনেমা, আবার সিনেমাও কখনও বাস্তবই। মধ্যপ্রদেশের সাতনা জেলা হাসপাতালের ঘটনাটা এমনটাই মনে করিয়ে দিয়ে গিয়েছে। এমনই একটি চমকপ্রদ ঘটনা ঘটে গিয়েছে, যা স্বচক্ষে দেখে হাসপাতালে তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছিল হাসপাতালে। থ্রি ইডিয়টস-এর আমির খানের মতোই বাইকে করে অসুস্থ দাদুকে নিয়ে জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পৌঁছে যান
এক আউটসোর্স কর্মচারী। সে ঘটনার ভিডিয়ো এই মুহূর্তে তুমুল ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
জানা গিয়েছে, ওই কর্মচারীর নাম দীপক গুপ্ত, হাসপাতালে রোগীদের প্রেসক্রিপশন তৈরির কাজ করেন দীপক। ঘটনাটি ঘটেছে সাতনার সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল জেলা হাসপাতালে। ভাইরাল ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে যে দীপক গুপ্তা নিজের দাদু মতি লাল গুপ্ত অসুস্থ হয়ে পড়ায়, তাঁকে বাইকে করে সরাসরি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে ঢুকে যাচ্ছেন। উল্লেখ্য, গুপ্তার দাদাকে বাইকে ধরে রেখেছিলেন আরেক ব্যক্তি। হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা সঙ্গে সঙ্গে তৎপর হয়ে চিকিৎসা শুরু করেন।
এই ঘটনার পর হাসপাতালে তোলপাড় হয়ে গিয়েছে। ডাক্তাররা গুপ্তের দাদুকে ভর্তি করার পর জরুরী বিভাগ থেকে তাঁর বাইকটি নিয়ে যান। এরপর, গুপ্তাকে নিজের দাদুর দেখাশোনা করতে হাসপাতালে ফিরে যেতে দেখা যায়। যাইহোক, ঘটনাটি জানার পরে হাসপাতালের ডাক্তাররা লোকটিকে তিরস্কার করেছেন। স্বাভাবিকভাবেই, জরুরি ওয়ার্ডে অন্যান্য রোগীদের অসুবিধা করে দীপকের এমন কাজ মেনে নেওয়া যায় না। তাই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জেলা হাসপাতালের আরএমও শরদ দুবে বলেন, 'গতকাল হাসপাতালের সিকিউরিটি আমাকে বলেছিলেন যে আমাদের বিভাগের একজন কর্মচারী তাঁর বাইক নিয়ে ক্যাজুয়ালটি বিভাগে ঢুকে গিয়েছিল। পরে জানা যায়, জরুরি অবস্থার কারণে তিনি বাড়ির এক বৃদ্ধকে নিয়ে এসেছিলেন এইভাবে। বাইক নিয়ে সোজা হাসপাতালের ভেতরে ঢুকে এসেছিলেন এই কারণেই। আগামীকাল আমি তার কাছে জবাব চাইব। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে এবং কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছে।' হাসপাতালের আরএমও জানিয়েছেন, আউটসোর্স কর্মী দীপকের অবস্থা খতিয়ে দেখা হবে এবং তাঁর কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করা হবে।
দুবে আরও বলেছিলেন যে সিএম সাহেবের অধীনে এই কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করবে সিনিয়র অফিস। ভিডিয়োতে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে তিনি তাড়াহুড়োয় ছিলেন। ইচ্ছাকৃতভাবে এটি করেননি বলেই মনে হচ্ছে। হাসপাতালে স্ট্রেচার এবং হুইলচেয়ার সুবিধা রয়েছে এবং যে কোনো সময় একসঙ্গে ৮টি স্ট্রেচারও পাওয়া যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, হাসপাতালের ভেতরে বাইক নিয়ে ছুটলে বড় ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটতে পারত। তাই দীপকের এমন কাজ মোটেও ক্ষমার যোগ্য নয়।