আজও করোনা আতঙ্ক একেবারে নির্মূল হয়নি। মাঝেমধ্যেই মাথা চারা দিচ্ছে কোভিড। এর মধ্যেই আরও এক মারণ রোগের সংক্রমণ দেখা গিয়েছে। যার নাম জম্বি ডিয়ার ডিজিজ। কিন্তু কী এই রোগ? মানুষের জন্যই বা কতোটা বিপজ্জনক? জেনে নিন-
এটি একটি প্রিয়ন ডিজিজ যা ক্রনিক ওয়েস্টিং ডিজিজ (CWD) নামেও পরিচিত। সাধারণত, হরিণের মধ্যে দেখা দেয় এই রোগ। সংক্রমিত হয় হরিণদের মধ্যেই। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) দাবি করেছে যে কানাডা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, নরওয়ে এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় হরিণ, এল্ক, বল্গা হরিণ, সিকা হরিণ এবং মুজ জাতীয় প্রাণীদের মধ্যেই এই ডিয়ার জম্বি ডিজিজটি সংক্রমিত হয়েছে।
এই রোগের লক্ষণ কী?
এই রোগ আক্রান্তের মল, লালা, রক্ত এবং প্রস্রাবের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে বলে জানা গিয়েছে। সিডাব্লুডি একটি সংক্রামক অবক্ষয়জনিত রোগ হওয়া সত্ত্বেও, মার্কিন কৃষি বিভাগের প্রাণী ও উদ্ভিদ স্বাস্থ্য পরিদর্শন পরিষেবা ব্যাকটিরিয়া এবং ভাইরাসকে এই রোগের জন্য দায়ী করেনি। এই রোগে আক্রান্ত প্রাণীর হঠাৎ করেই ওজন কমে যায়। প্রাণীটি ভীষণ দুর্বল হয়ে পড়ে, হাঁটা চলায় সমস্যা দেখা দেয়। এ ছাড়াও অন্যান্য স্নায়বিক সমস্যা দেখা দেয়।
এটি একটি মারাত্মক স্নায়বিক অসুস্থতা। এটি প্রিয়ন নামক অস্বাভাবিক প্রোটিনের কারণে ঘটে যা মস্তিষ্ক এবং স্নায়ু টিস্যুগুলিকে ক্ষতি করে। এর ফলে আক্রান্ত পশুদের মধ্যে দুর্বলতা, বিভ্রান্তি, অলসতা এবং অস্বাভাবিক আচরণ দেখা দেয় যার কারণে একে জম্বি ডিয়ার ডিজিজ বলা হয়।
আরও পড়ুন: সারমেয়র অটো রাইড! খুদে পোষ্যর কারনামা দেখলে তাজ্জব বনে যাবেন
মার্কিন গবেষণায় হরিণ ছাড়াও কাঠবিড়ালি, বানর ও ইঁদুরকেও এই রোগে সংক্রমিত হতে দেখা গিয়েছে। এই ধরনের প্রাণী সামান্য মনুষ্য জিন বহন করে। তাই এই রোগ মানুষদের মধ্যেও সংক্রমিত হতে পারে বলে মনে করেছেন বিজ্ঞানীরা।
এই রোগে এখনও পর্যন্ত কোনও মানব সংক্রমণের রিপোর্ট পাওয়া যায়নি তবে এই রোগ মানুষের জন্য কতোটা সংক্রামক হতে পারে তা নিয়ে গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। যেহেতু বানর ও ইঁদুরের মধ্যে এই রোগ প্রভাব ফেলতে পারে তাই মানুষের দেহেও প্রভাব ফেলতে পারে এই রোগ বলেই অনুমান করছেন বিজ্ঞানীরা। তবে এখনও পর্যন্ত গবেষণা থেকে কোনও চুড়ান্ত ফলাফল আসেনি।
তবে এই রোগ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য বেশ কিছু সতর্কতা অবলম্বন বলেছেন বিজ্ঞানীরা যেমন-
১) অসুস্থ বা মৃত প্রাণীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ এড়িয়ে চলতে হবে এবং মৃতদেহ ছোঁয়ার সময় গ্লাভস পরা বাঞ্ছনীয়।
২) সিডাব্লুডি-তে সংক্রামিত প্রাণীর মাংস খাওয়া একেবারেই চলবে না।
৩) এই রোগে আক্রান্ত হয়ে যদি কোনও প্রাণী মারা যায় তাহলে তার মৃতদেহের অবশ্যই সৎকার করতে হবে।
৪) হরিণ, এল্ক জাতীয় প্রজাতির শিকার করা এড়িয়ে চলতে হবে।