কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবার নিজেই জানিয়ে দিলেন, লোকসভা ভোটের আগেই কেন্দ্রীয় নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকর করা হবে দেশে। ইটি নাও - গ্লোবাল বিজনেস সামিটে আজকে সিএএ নিয়ে এই ঘোষণা করেন শাহ। এর আগে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর দাবি করেছিলেন, ' ৭ দিনের মধ্যে' সিএএ কার্যকর হবে বাংলা তথা গোটা দেশে। তবে সেই ' ৭ দিন' পার হয়ে গিয়েছে। অবশ্য এর মাঝে শান্তনু দাবি করেছিলেন 'ভুল করে ৭ দিনের সময়সীমা' দিয়েছিলেন তিনি। তবে দাবি করেছিলেন, শীঘ্রই সিএএ কার্যকর হবে। এবার কার্যত তাঁর কথাতেই যেন আজ শিলমোহর দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। (আরও পড়ুন: সরকারের কাছ থেকে পাওনা ১৯ কোটি! পেট্রোল পাম্প ধর্মঘটের ডাক রাজ্যের বহু জেলায়)
আরও পড়ুন: সন্দেশখালিতে বন্ধ ইন্টারনেট, তৃণমূল নেতাদের ওপর জনরোষ আছড়ে পড়তেই জারি ১৪৪ ধারা
বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের হিন্দু সহ ৬টি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ভারতীয় নাগরিকত্ব দিতেই আনা হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন। ২০১৯ সালে এই আইনটি সংসদের অনুমোদন পেয়ে তৈরি হয়েছিল। তবে এই আইনের নিয়ম তৈরি হয়নি এতদিনে। তবে সম্প্রতি এক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, সিএএ সংক্রান্ত নিয়ম তৈরি হয়ে গিয়েছে। এই আবহে লোকসভা ভোটের আগেই তা কার্যকর করা হবে। আজ অমিত শাহের কথাতেও শোনা গেল সেই সুর।
এর আগে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উচ্চপদস্থ সরকারি আধিকারিক জানিয়েছিলেন, সিএএ-র অধীনে নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য অনলাইনেই আবেদন জানানো যেতে পারে। এর জন্য অনলাইন পোর্টালও তৈরি হয়েছে। এই গোটা প্রক্রিয়া অনলাইনেই করা হবে। সেখানে আবেদনকারীদের শুধু জানাতে হবে যে কোন সালে বিনা নথিতে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন তাঁরা। তাঁদের কাছ থেকে কোনও নথি চওয়া হবে না। এই নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক পদক্ষেপ করছে। এর আগে বিগত ৪ বছর ধরে সিএএ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার টালবাহানা করেছে। কোভিডের আগে দেশ জুড়ে সিএএ বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছিল। এই আবহে আইনটি কার্যকর হলেও তা প্রয়োগ করা হয়নি। শাহ দাবি করেছিলেন, কোভিড চলে গেলেই সিএএ-র নিয়ম তৈরি করে তা প্রয়োগ করা হবে।
এদিকে রিপোর্ট অনুযায়ী, বাড়িতে বসেই মোবাইল থেকে কোনও নথি জমা না দিয়েই সিএএ-র জন্যে আবেদন করা গেলেও সেই ব্যক্তির দাবির বিষয়টি খুব সম্ভবত খতিয়ে দেখবে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন। এই আবহে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলবে। এদিকে পোর্টালের মাধ্যমে আবেদন করার নিয়ম থাকায়, বিষয়টি স্বচ্ছ হবে বলেও আশা করা হচ্ছে। এর আগে গত ২৭ ডিসেম্বর কলকাতায় এসে অমিত শাহ বলেছিলেন, সিএএ প্রয়োগ করা হবেই। কোনও শক্তি সিএএ-কে ঠেকাতে পারবে না। উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৯-২০২০ সালে সিএএ-র বিরোধিতায় রাস্তায় নেমেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই আবহে বাংলার রাজনীতিতে নতুন করে ঝড় তুলতে চলেছে সিএএ। সম্প্রতি ঠাকুরনগরে এক ধর্মীয় সভা এবং বেশ কয়েকটি জনসভা থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরও দাবি করেছিলেন, লোকসভা ভোটের আগে সিএএ প্রয়োগ করা হবে। আর এবার ভোটের মুখে শাহ জানিয়ে দিলেন, শীঘ্রই সিএএ কার্যকর হবে দেশে।