পদত্যাগ করলেন অসমের দুঁদে আইপিএস অফিসার তথা ‘সিংঘম’ বলে পরিচিত আনন্দ মিশ্র। অসম পুলিশের ডিজি মারফত রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছে নিজের পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন এই আইপিএস অফিসার। মানুষের জন্য কাজ করার ইচ্ছে জানিয়েই পদত্যাগ করেছেন তিনি। আগামী ১৬ জানুয়ারি তাঁর পদত্যাগ কার্যকর হবে। এদিকে, পদত্যাগের পরেই এই আইপিএস অফিসারের রাজনীতিতে যোগদানের জোর চর্চা শুরু হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, আগামী লোকসভা নির্বাচনে তিনি বিজেপির টিকিটে লড়তে পারেন। আনন্দ মিশ্র আরএসএস প্রধান মহান ভগবতের সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: কথা দিলাম পিঠ দেখাব না, বুকে গুলি খাব- প্রাক্তন IPS অফিসারকে বজরং পুনিয়ার জবাব
গত ১৮ ডিসেম্বর মুখ্য সচিবের কাছে পদত্যাগের জন্য আবেদন জানিয়েছেন এই আইপিএস অফিসার। আবেদনে তিনি লিখেছেন, ‘স্বাধীন ও স্বতন্ত্র জীবনযাপনের জন্য ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিস থেকে আমি অব্যাহতি চাইছি। আমি বিভিন্ন সামাজিক পরিষেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে চাই।’ সোশ্যাল মিডিয়ায় অত্যন্ত সক্রিয় এই আইপিএস অফিসার অসমের সিংঘম নামে পরিচিত। তাঁর পদত্যাগের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে অসমে। আনন্দ মিশ্রকে সম্প্রতি মণিপুরে হিংসার ঘটনার তদন্তের জন্য বিশেষ তদন্তকারী দলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি তিনি বর্তমানে অসমের লখিমপুর জেলায় পুলিশ সুপার পদে কর্মরত আছেন। অসমের মুখ্য সচিবকে লেখা পদত্যাগ পত্রে আনন্দ মিশ্র তাঁর পদত্যাগের জন্য সামাজিক ও ব্যক্তিগত বিষয় উল্লেখ করেছেন।
বিশিষ্ট মহলের মতে, বিহারের আরাহর বাসিন্দা আনন্দ মিশ্র বক্সার লোকসভা আসন থেকে নির্বাচনে লড়তে পারেন। বর্তমানে এই আসনটি কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অশ্বিনী কুমার চৌবের দখলে রয়েছে। যদিও রাজনীতিতে আসার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন আনন্দ মিশ্র। তিনি জানিয়েছেন, ‘আমি রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছি না। আমি নিজের জন্য সময় নিতে চাই। আমি আমার মানুষদের সঙ্গে থাকার সময় পাইনি। আমি তাদের জন্য কাজ করতে চাই।’ ওয়াকিবহাল মহলের মতে, আনন্দ মিশ্র বক্সার থেকে বিজেপির টিকিটে লড়তে চাইছেন।
প্রসঙ্গত, তাঁকে যখন ধুবড়িতে পোস্ট করা হয়েছিল তখন সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর প্রচুর ফ্যান ফলোয়ার বাড়ে। সকলেই তাঁর শারীরিক ফিটনেস, দক্ষতা এবং গিটার বাজানোর ভক্ত ছিলেন। তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে কোচিং ব্যবস্থা চালু করেন। গত বছরের জানুয়ারিতে একজন প্রাক্তন ছাত্র নেতা পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার পর অসমে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। তাতে আনন্দ মিশ্রের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা। পরে ওই আইপিএস অফিসারকে সদর দফতরে বদলি করা হয়। তিনি অবৈধ মাদক পাচার থেকে শুরু করে অপরাধের বিরুদ্ধে একের পর এক পদক্ষেপ করেছিলেন। তারপরেই তিনি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন।