ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যসভার সাংসদ বিপ্লব দেবের পৈতৃক বাড়িতে ভাঙচুর এবং আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। ত্রিপুরার উদয়পুরে অবস্থিত সেই বাড়িতে বুধবারই যাওয়ার কথা ছিল বিল্পবের। তার আগে এই ধরনের ঘটনায় সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীদের দিকে আঙুল তুলেছে বিজেপি। অভিযোগ, হামলাকারীরা কয়েকটি গাড়িতেও ভাঙচুর করেছে। ঘটনার খবর পেয়েই সেখানে যান পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্তারা।
বাবা হিরুধন দেবের স্মরণে আজ একটি জজ্ঞ আয়োজন হওয়ার কথা ছিল উদয়পুরে বিপ্লবের আদি বাড়িতে। তার আগেই মঙ্গলবারের এই ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পরিস্থিতি। অভিযোগ উঠেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা নাগাদ প্রথমে বিপ্লব দেবের পৈতৃক বাড়িতে দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছিল। সেখানে ভাঙচুর করা হয়। এরপর সেই বাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। যদিও অগ্নিকাণ্ড বা ভাঙচুরের ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর মেলেনি। এদিকে উদয়পুরের স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বর অভিযোগ, এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তারা সকলেই স্থানীয় সিপিএম সমর্থক। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করার জন্য তল্লাশি শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, আগামী মাসেই অনুষ্ঠিত হতে পারে ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচন। ২০২৩ সালে সেই রাজ্যে চতুর্মুখী লড়াই হওয়ার একটা সম্ভাবনা রয়েছে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের লক্ষ্যে ত্রিপুরায় সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস। এদিকে সিপিএম, কংগ্রেস বহুকাল ধরেই ত্রিপুরায় রাজনৈতিক ভাবে দাপট দেখিয়ে এসেছে। তবে এবার বাম-কংগ্রেস জোটের একটা আভাস মিলেছে। এই আবহে রাজ্য রাজনীতির সমীকরণ পুরোপুরি পালটে যেতে পারে। এদিকে ২০১৮ সালের নির্বাচনে ৬০ আসনের ত্রিপুরায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছিল বিজেপি। গত বিধানসভা নির্বাচনে গেরুয়া শিবির জিতেছিল ৩৬টি আসন। প্রধান প্রতিপক্ষ বামফ্রন্ট জিতেছিল মাত্র ১৬টি আসন। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন বিপ্লব কুমার দেব। তবে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তাঁকে সরিয়ে দিয়েছিল বিজেপি। ২০২২ সালের মে মাসে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে বিপ্লব দেবকে সরিয়ে দেওয়া হয়। মানিক সাহাকে ত্রিপুরার নয়া মুখ্যমন্ত্রী করেছিল বিজেপি। যেকোনও মূল্যে বিজেপি যে ত্রিপুরায় ক্ষমতা ধরে রাখতে চাইছে, মুখ্যমন্ত্রী বদলেই সেই প্রমাণ মিলেছে। এদিকে নিজেদের ফের প্রাসঙ্গিক করে তুলতে মরিয়া বাম, কংগ্রেসও। তৃণমূলের কাছেও এ এক নতুন লড়াই। সব মিলিয়ে ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে উত্তেজনায় ফুটছে ছোট্ট এই বাঙালি অধ্যুষিত রাজ্য।