আশনী ধাওর
রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা হয়েছে অযোধ্য়ায়। গোটা দেশ যখন দেখল অযোধ্য়ায় প্রাণপ্রতিষ্ঠা হল, তখনই সেই অযোধ্য়া থেকে প্রায় ৬০০ কিমি দূরে রাবণ পুজো হয় যে গ্রামে সেখানে ঠিক কী হল? বিসরাখ গ্রামে রাবণ পুজোর রীতি রয়েছে। সেই গ্রামে অবশ্য় সোমবার রামের আরাধনা করা হয়েছে। এই প্রথম ওই গ্রামে রামচন্দ্রকে আহ্বান করা হল।
গ্রামের নাম বিশরাখ। গ্রেটার নয়ডার এই গ্রামকে রাবণের জন্মস্থান বলে গণ্য় করা হয়। সেখানে রয়েছে প্রাচীন শিবমন্দির। অনেকেরই বিশ্বাস সেই মন্দিরে পুজো দিতে আসতেন খোদ রাবণ। রাবণের পিতা বিশরভও নাকি এই গ্রামেই থাকতেন। রাবণের আর সব ভাই বিভীষণ, কুম্ভকর্ণও থাকতেন এই গ্রামেই। তবে অযোধ্য়ায় যখন রামের আরাধনা করা হল তখন রাবণের গ্রামেও রামপুজো হল। এই প্রথমবার। রামচন্দ্রের সঙ্গে লক্ষণ ও সীতাকেও পুজো দেওয়া হল।
সূত্রের খবর সোমবার ১১জন পুরোহিতের উপস্থিতিতে এই রামবন্দনা করা হয়েছে। অযোধ্য়ায় যখন প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হল, তখন রাবণের আপন গ্রামেও রামচন্দ্রের প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা হল। শিবমন্দিরের প্রধান পুরোহিত রামদাস হিন্দুস্তান টাইমসকে একথা জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা বলেন, বিশরভ মুণির নাম থেকে এই গ্রামের নামকরণ হয়েছিল। তিনি ছিলেন রাবণের বাবা। তিনি এখানে শিবলিঙ্গের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এখানকার প্রধান পুরোহিত বলেন,এখানে রোজ রাবণ পুজো করা হয়। তবে তাৎপর্যপূর্ণভাবে এখান বিশরভের মূর্তির রয়েছে। কিন্তু এখানে রাবণের কোনও মূর্তি নেই।
এই মন্দিরের গর্ভগৃহে রাবণের জীবনের নানা কাহিনিকে ছবির মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। তবে সোমবার অবশ্য় অন্য ছবি দেখা গেল গ্রামে। শয়ে শয়ে মানুষ রামের নামে জয়ধ্বনি দিলেন। স্থাপিত হল রাম দরবার। এখানে সোমবার বিশেষ খাওয়াদাওয়ারও ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
প্রধান পুরোহিত জানিয়েছেন, এবারের বিজয়া দশমীতে এখানে রাবণের মূর্তিও প্রতিষ্ঠা করা হবে। রাম ও রাবণকে পাশাপাশি পুজো করা হবে। সেই সময় আরও জাঁকজমক হবে।
আসলে বিশ্বাস। বিশ্বাসকে আঁকড়ে ধরে মানুষ আবহমান কাল ধরে নানা রীতিনীতি পালন করছেন। নানা কাহিনি জড়িয়ে রয়েছে এই গ্রামের সঙ্গে, প্রাচীন শিবমন্দিরের সঙ্গে। তবে রাবণের গ্রামকেও ছুঁয়ে গেল রামলালাকে ঘিরে থাকা আবেগ।