রাজ্য সভা নির্বাচনে জিতলেও নয় জন বিধায়ক সমর্থন তুলে নেওয়ার পরে মহাসংকটে পড়েছে মণিপুরের বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার।
পরিস্থিতি সামলাতে শনিবার ইম্ফলে উড়ে এসে দলীয় বিধায়ক এবং শাসকজোটের বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে জরুরি আলোচনায় বসেন মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী তথা এনপিপি সভাপতি কনরাড সাংমা ও নর্থ ইস্ট ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স-এর আহ্বায়ক তথা অসমের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল জোট ভেঙে বেরিয়ে যাওয়া এনপিপি বিধায়কদের ফিরিয়ে আনা। তবে শেষ পর্যন্ত আলোচনার কী পরিণতি হয়েছে, তা জানা যায়নি।
২০১৭ সালে মণিপুরে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার গড়ার পিছনে মূল কারিগর ছিলেন হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। সরকার বাঁচাতেও তাই ফের ডাক পড়েছে তাঁরই। যদিও তাঁর আগমনে বিশেষ চিন্তিত নয় বিরোধী কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন এসপিএফ জোট।
শনিবার মণিপুর কংগ্রেসের মুখপাত্র নিংগমবাম বুপেন্দা মেইতেই বলেন, ‘শুনেছি আজ ইম্ফলের হোটেলে বৈঠকে বসেছেন মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী তথা এনপিপি সভাপতি কনরাড সাংমা ও অসমের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁদের উপস্থিতি কোনও প্রভাব ফেলবে না। মুখ্যমন্ত্রী পদে অন্য কাউকে বসালেও কিছু হবে না। মণিপুরের একমাত্র উপায় হল কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন এসপিএফ সরকার গঠন করা।’
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রে সব সময় বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে হয়। মণিপুরের রাজ্যপালের কাছে আমার আর্জি, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিধানসভায় বিশেষ অধিবেশন ডাকুন। ৫২ আসনের বিধানসভায় কী ভাবে ২৩ জন বিধায়ক নিয়ে সংখ্যালঘু সরকার চালাতে পারে বিজেপি?’
প্রসঙ্গত, গত বুধবার এন বীরেন সিং সরকারের থেকে সমর্থন তুলে নেন বিজেপির তিন জন, এনপিপির ৪ জন এবং তৃণমূল কংগ্রেসের একজন বিধায়ক। তিন বিজেপি বিধায়ক পরে কংগ্রেসে যোগ দেন। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন এসপিএফ জোটে শামিল হয়েছেন এনপিপির ৪ বিধায়কও। সপিএফ জোটকে সমর্থন করেছেন তৃণমূল সমর্থিত নির্দল বিধায়কও।
তিন বিধায়কের ইস্তফার পরে মণিপুর বিধানসভায় বিজেপির দখলে এই মুহূর্তে ১৮টি আসন। বিজেপি শিবিরের প্রতি এখনও সমর্থন দেখাচ্ছেন বাকি চার এনপিএফ বিধায়ক এবং লোক জনশক্তি পার্টির একমাত্র বিধায়ক। যার ফলে বিধানসভায় শাসকজোটের আসংন সংখ্যা এখন ২৩।
এই ডামাডোলের মাঝেই রাজ্য সভায় মণিপুরের একমাত্র আসনটি স্বল্প ব্যবধানে জেতেন মণিপুরের রাজা তথা বিজেপি সাংসদ সানাজোবা লেইশেম্বা। এই জয়ের পরে মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেন, বিধানসভায় শাসকজোটের সংখ্যাগরিষ্টতা বজায় রয়েছে।
অন্য দিকে, বার বার রাজ্যপাল নাজমা হেপতুল্লার কাছে দরবার করেও বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করতে ব্যর্থ কংগ্রেস। শোনা যাচ্ছে, এবার তাই মণিপুর হাই কোর্টে এই বিষয়ে আবেদন জানানোর কথা ভাবছে এসপিএফ।