বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই মণিপুর, রাজস্থানে মহিলাদের ওপর অত্যাচার নিয়ে একে অপরের দিকে আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি ও বিরোধীরা। এরই মধ্যে এবার নাবালিকা ধর্ষণ, গণধর্ষণের মতো অপরাধে কঠোরতম সাজার বিধান এনে নয়া বিল পেশ করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আগের আইপিসি এবং সিআরপিসির বিধানগুলিকে আরও শক্তিশালী করে নয়া বিচার ব্যবস্থা কার্যকর করা হবে। তার জন্য লোকসভায় আজ ৩টি বিল উত্থাপন করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ। অমিত শাহ আজ জানান, আইপিসি, সিআরপিসি এবং ভারতীয় এভিডেন্স অ্যাক্ট তুলে দিয়ে নয়া ভারতীয় ন্যায় সংহিতা কার্যকর করা হবে। তার জন্যই এই বিল পেশ করা হচ্ছে। এই বিষয়ে সংসদে অমিত শাহ আজ বলেন, ‘১৮৬০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত দেশের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা ব্রিটিশদের তৈরি আইন অনুসারে কাজ করেছিল। তবে এই তিনটি আইনে বদল আনা হবে এবং দেশের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে।’ (আরও পড়ুন: বাতিল হবে ব্রিটিশ জমানার রাষ্ট্রদ্রোহ আইন, তবে দেশের অখণ্ডতা রক্ষার্থে আসছে কঠোর বিধান)
অমিত শাহ জানান, এই তিন বিলের মাধ্যমে ৩১৩টি পরিবর্তন আনা হচ্ছে এবং দেশের আইন ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে। মহিলা এবং শিশু সুরক্ষার বিষয়ে বেশি নজর দিয়ে এই সব পরিবর্তন করা হয়েছে। অপরাধীদের সাজা নিশ্চিত করার বিষয়টি দেখা হয়েছে। অমিত শাহ আরও জানান, নয়া বিল কার্যকর হলে পুলিশ নিজেদের ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারবে না। তিনি জানান, নয়া বিধানে নাবালিকা ধর্ষণের দোষীদের মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনানো হবে। এদিকে গণধর্ষণের ক্ষেত্রে সাজা ২০ বছর থেকে আজীবন এবং গণধোলাইয়ের ক্ষেত্রে ১০ বছরের কারাদণ্ড থেকে মৃত্যুদণ্ড।
অমিত শাহ আজ বলন, 'মহিলাদের ওপর যারা অত্যাচার করবে এবং গণধোলাইয়ের আসামিদের সাজা নিশ্চিত করার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে এই বিলে। ধর্ষণের অভিযোগে ভিডিয়ো রেকর্ড করে জবানবন্দি গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রথমবারের মতো কমিউনিটি সার্ভিস চালু করা হচ্ছে। এটি খুবই প্রাসঙ্গিক। এখন এটি আইনে পরিণত করা হবে।'
আজ সংসদে অমিত শাহ বলেন, 'এই বিলের অধীনে আমাদের লক্ষ্য, দোষী সাব্যস্ত হওয়ার অনুপাত ৯০ শতাংশের উপরে নিয়ে যেতে হবে। সেজন্য, আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান নিয়ে এসেছি। যে যে ধারায় ৭ বছর বা তার বেশি কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে, সেই সমস্ত ক্ষেত্রে ফরেনসিক দলকে অপরাধস্থলে যেতেই হবে। এটি বাধ্যতামূলক করা হবে। আমরা নিশ্চিত করেছি যে ৯০ দিনের মধ্যেই যাতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। শুধুমাত্র আদালত বললে তবেই চার্জশিট দাখিল করার জন্য আরও ৯০ দিন পাবেন তদন্তকারীরা। পুলিশকে এই নতুন আইনের অধীনে ১৮০ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে। এমনকী বিচারকরাও তাদের শুনানি পিছিয়ে কোনও দোষীর আদেশ বিলম্বিত করতে পারবেন না। এখন ৩০ দিনের মধ্যেই সেই সংক্রান্ত আদেশ দিতে হবে এবং পরবর্তী সাত দিনের মধ্যে তা অনলাইনে প্রকাশ করতে হবে।'