'কালো টাকাকে সাদা করার ভালো উপায় ছিল নোটবন্দী'- এমনই মন্তব্য করলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিভি নাগরত্না। যিনি ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে শীর্ষ আদালতের সেই বেঞ্চে ছিলেন, যে বেঞ্চ ৪-১ ব্যবধানে নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে বহাল রেখেছিল। একমাত্র ভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বিচারপতি নাগরত্না। সেই বিচারপতি নাগরত্নাই শনিবার প্রশ্ন তোলেন যে নোটবন্দীর পরে বাতিল হওয়া ৯৮ শতাংশ নোটই যদি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (আরবিআই) কাছে ফেরত চলে আসে, তাহলে সেই সিদ্ধান্তের ফলে কালো টাকার নির্মূল হল কীভাবে? আর সেই প্রশ্ন নিয়ে লোকসভা নির্বাচনের আগে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে তোপ দেগেছে কংগ্রেস। শতাব্দীপ্রাচীন দলের অভিযোগ, নোটবাতিল আদতে মোদী সরকারের বড়সড় দুর্নীতি।
আর বিচারপতি নাগরত্নার যে মন্তব্যকে হাতিয়ার করে মোদী সরকারকে আক্রমণ শানিয়েছে কংগ্রেস, সেই মন্তব্যটা শনিবার হায়দরাবাদের নালসার আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে করেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি। তিনি বলেন, 'রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে ৯৮ শতাংশ নোটই ফেরত এসেছিল। তাহলে কালো টাকা নির্মূল করার ক্ষেত্রে আমরা কোন পথে এগিয়ে যাচ্ছিলাম? আমার মনে হয়েছিল যে কালো টাকাকে সাদা করার ভালো উপায় ছিল এটি (নোটবন্দী)। তারপর আয়কর সংক্রান্ত কী প্রক্রিয়া হল, সেটা আমরা জানি না। সাধারণ মানুষ যেভাবে দুর্দশায় পড়েছিলেন, তা নাড়িয়ে দিয়েছিল আমায়। তাই আমি (নোট বাতিলের মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ক্ষেত্রে) বিরোধিতা করতে বাধ্য হই।'
বিচারপতি নাগরত্নার মন্তব্যের পরে ঠিক কী বলেছে কংগ্রেস?
বিচারপতি নাগরত্নার মন্তব্যকে তুলে ধরে কংগ্রেসের তরফে বলা হয়, 'কালো টাকাকে সাদা করার পন্থা ছিল নোটবন্দী। নোটবন্দীর পরে যদি ৯৮ শতাংশ টাকাই ফিরে আসে, তাহলে কালো টাকা কোথায় গেল? এই কথাটা বলেছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিভি নাগরত্না। বিচারপতি নাগরত্না বলেছেন, নোটবন্দীর পরে সাধারণ মানুষকে যে দুর্দশার মুখে পড়তে হয়েছিল, সেটার জন্য উনি ব্যথিত। এই বয়ান থেকেই স্পষ্ট যে নোটবন্দী আদতে মোদী সরকারের সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। বড়সড় দুর্নীতি এটা। যে দুর্নীতির মাধ্যমে কালো টাকাকে সাদা করা হয়েছিল।'
আরও পড়ুন: TCS jobs in America: ‘মার্কিনিদের ছাঁটাই করেছে TCS! কম টাকায় চাকরি দিচ্ছে H1-B ভিসাধারী ভারতীয়দের’
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর ৫০০ টাকা এবং ১,০০০ টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন মোদী। বাজার থেকে সব ৫০০ টাকা এবং ১,০০০ টাকার নোট তুলে নেওয়া হয়েছিল। মোদী সরকারের যুক্তি ছিল যে সন্ত্রাসবাদে অর্থের জোগান রুখতে এবং কালো টাকাকে নির্মূল করার জন্য সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও বিরোধীদের দাবি ছিল যে আদতে কালো টাকাকে সাদা করার দরজা খুলে দিয়েছে মোদী সরকার। যাঁরা কালো টাকা রেখে দিয়েছিলেন, তাঁরা সেটা টাকাটা সাদা করে নিয়েছেন।