আসন বণ্টন নিয়ে তীব্র মতপার্থক্যের জন্যই প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতে দেরি হয়েছে কংগ্রেসের। তার মধ্যেই নির্বাচনের আগেই কংগ্রেস জোর ধাক্কা খেয়েছে বলে জল্পনা ছড়িয়ে গিয়েছিল। একটি অংশের তরফে দাবি করা হয়েছিল, সর্বভারতীয় মহিলা কংগ্রেস সভাপতি সুস্মিতা দেব। যদিও শনিবার অসম কংগ্রেসের সাংসদ প্রদ্যুৎ বরদলুই স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, সুস্মিতা দেব পদত্যাগ করেননি। আসন নিয়ে তাঁর কিছু ক্ষোভ থাকতে পারে কিন্তু তা দ্রুত মিটিয়ে নেওয়া হবে। এটা সম্পূর্ণ ভুয়ো খবর।
ইতিমধ্যেই শুক্রবার বিজেপি তাদের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে দিয়েছে। সেখানে কংগ্রেসের অন্দরে এমন কোন্দল প্রকাশ্যে আসায় নির্বাচনের আগে ভাবমূর্তির ক্ষতি হল বলে মনে করা হচ্ছে। কংগ্রেসের স্ক্রিনিং কমিটির তৈরি করা তালিকা নিয়ে দলের অন্দরে ক্ষোভ চরমে উঠেছে। এমনকী জোট শরিকরা পর্যন্ত বেজায় খাপ্পা এই বিষয়টি নিয়ে।
সুস্মিতা দেবের পদত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়তেই এদিন নাগাঁও জেলার বিধায়ক প্রদ্যুৎ বরদলুই বলেন, ‘উনি (সুস্মিতা দেব) আমাদের দলের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। আমাদের দলের অত্যন্ত সম্মানীয় একজন নেত্রী। তিনি আমাদের সঙ্গেই রয়েছেন। পদত্যাগ করেননি।’ সূত্রের খবর, যে তালিকা তৈরি করা হয়েছিল বরাক অঞ্চলকে কেন্দ্র করে সেখানে কয়েকজনের নাম ঢোকাতে চেয়েছিলেন। যা না হওয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ হন।
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে হারাতে বোরোল্যান্ড পিপলস ফ্রন্ট, বামফ্রন্ট, এজিএম, আরজেডি–সহ ছয়টি আঞ্চলিক দলের সঙ্গে জোট বেঁধেছে কংগ্রেস। এদের মধ্যে অন্যতম হল এআইইউডিএফ। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা তৈরি করতে এবং মতভেদ মেটাতে আজ ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। সূত্রের খবর, কংগ্রেস–৮০টি আসন, এআইইউডিএফ–২৬টি আসন, বিপিএফ–১২টি আসন, বামফ্রন্ট–৪টি এবং এজিএম–২টি আসনে প্রার্থী দেবে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, অসমের কাচার অঞ্চল মুসলিম অধ্যুষিত হওয়ায় এআইইউডিএফের ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাইই এই অঞ্চলের কোনও আসনে প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস। তবে দলের এই সিদ্ধান্তেই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে কর্মীদের মধ্যে। গুয়াহাটির তাজ ভিভান্তা হোটেলে দলের শীর্ষনেতাদের সঙ্গে দেখা করে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন শিলচরের সাংসদ সুস্মিতা দেব বলে খবর চাউর হয়েছে। পদত্যাগ করার হুমকি দিয়েছেন সিদ্দিকি আহমেদও। বিধানসভা নির্বাচনে অসমের কাছার অঞ্চলের সমস্ত আসনই জোটসঙ্গী এআইইউডিএফের হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা কংগ্রেসের। আর এই সিদ্ধান্তেই অসন্তুষ্ট হয়েছেন সুস্মিতা দেব। যদিও পদত্যাগের জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছে কংগ্রেস।
উল্লেখ্য, ক্ষমতায় এলে অসমে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বাতিল করা হবে। সম্প্রতি অসমে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে এই আশ্বাসই দিলেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা। কংগ্রেস নেত্রী অসমে প্রচারে এসে ৫টি প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান। সিএএ ছাড়াও অন্যান্য প্রতিশ্রুতিগুলির মধ্যে রয়েছে ৫ লাখ কর্মসংস্থান তৈরি করা, গৃহবধূদের মাসে ২ হাজার টাকা করে দেওয়া, চা–বাগান শ্রমিকদের ন্যূনতম দৈনিক মজুরি ৩৬৫ টাকা করা এবং প্রতি মাসে ২০০ ইউনিট বিদ্যুৎ বিনামূল্যে সরবরাহের ব্যবস্থা করা।