প্রথম মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হিসেবে কোনও ফৌজদারি মামলার বিচারে হাজির হয়ে লজ্জার ইতিহাস গড়লেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজের যৌন কেলেঙ্কারি ধামাচাপা দিতে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত ট্রাম্প। সোমবার নিউইয়র্কের আদালতে সেই মামলারই জুরি বাছাই পর্ব ছিল। এদিকে আর কয়েক মাসের মধ্যেই আমেরিকায় অনুষ্ঠিত হতে চলেছে মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ট্রাম্প রিপাবলিকান প্রার্থী হয়ে বাইডেনের বিরুদ্ধে লড়বেন সেই নির্বাচনে। তার আগে অবশ্য এই মামলার বিচার অস্বস্তিতে ফেলবে ট্রাম্পকে। (আরও পড়ুন: 'নিষিদ্ধ' চিনা সংস্থার সাথে হাত মেলাল মলদ্বীপ, বেজিং প্রেমে এ কী করছেন মুইজ্জু?)
আরও পড়ুন: বন্দে ভারত স্লিপার ট্রেনে বাংলার 'ছোঁয়া', ২৭০ কোটির বরাত পেল কলকাতার সংস্থা
এদিকে এই বিচারের দায়িত্বে থাকা বিচারক হুয়ান মেরচানকে মামলা থেকে সরাতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে আজকে মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হতেই বিচারক মেরচান জানিয়ে দেন, তিনি এই মামলা থেকে সরছেন না। এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগ ছিল, মেরচানের মেয়ে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির হয়ে রাজনৈতিক পরামর্শদাতা। এই আবহে বিচারকে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ করার সবার্থে বিচারক বদলের আর্জি জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে তাঁর সেই দাবি ধোপে টেকেনি।
আরও পড়ুন: গঙ্গার নীচ দিয়ে হাওড়া-এসপ্ল্যানেড মেট্রোর ১ মাস পূর্তি,এখনও কতজন চড়েছেন জানেন?
এদিকে জানা যাচ্ছে, এই মামলায় মোট চারটি অভিযোগ রয়েছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। তার মধ্যে ৫ নভেম্বরের ভোটগ্রহণের আগে একটি মাত্র অভিযোগের বিচার সম্পন্ন হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে এই মামলায় ট্রাম্প দোষী সাব্যস্ত হলেও প্রেসিডেন্ট হতে পারেন। তবে রয়টার্সের এক সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে ট্রাম্পের নির্বাচন জেতার সম্ভাবনা অনেকটা বড় ধাক্কা খেতে পারে। এদিকে ১২ জন জুরি বাছাইয়ের প্রথম দিনে কোনও জুরি সদস্যকেই বাছাই করা হয়নি। এই গোটা প্রক্রিয়াটা দুই সপ্তাহ পর্যন্ত চলতে পারে।
আরও পড়ুন: এবার ভোট প্রচারে মমতার মুখে 'ডিএ বাণী', রাজ্য সরকারি কর্মীদের দিলেন 'খুশির খবর'
প্রাথমিক ভাবে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নিউ ইয়র্ক দণ্ডবিধির ১৭৫ ধারা অনুযায়ী ব্যবসায়িক রেকর্ড জালিয়াতির একাধিক অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছিল এই মামলা। এদিকে জালিয়াতির অভিযোগে ট্রাম্প যদি দোষী সাব্যস্ত হন, তবে প্রতিটি অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ চার বছর করে কারাদণ্ডের মুখোমুখি হতে পারেন তিনি। তবে এই অভিযোগগুলির ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক কারাদণ্ডের বিধান নেই। এই আবহে দোষী সাব্যস্ত হলেও, ট্রাম্পকে জেলে যেতে নাও হতে পারে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারের সময় পর্নস্টার স্টর্মির মুখ বন্ধ করতে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছিল এই মামলা। স্টর্মির দাবি, ২০০৬ সালে নেভেদায় সেলেব্রিটিদের একটি গলফ প্রতিযোগিতায় ট্রাম্পের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল। এরপর ২০০৭ সালে একটি শো'তে অংশগ্রহণ করে লস অ্যাঞ্জেলসে বেভারলি হিলসে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বাংলোয় দেখা করেছিলেন স্টর্মি। এরপর ২০১১ সালে ইন টাচ ম্যাগাজিনে স্টর্মি দাবি করেন যে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল। সেই সংক্রান্ত একাধিক তথ্যও দিয়েছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন যে ট্রাম্প তাঁর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত ছিলেন। এই বিতর্কের পর ২০১৬ সালে রিপাবলিকানদের হয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়ান ট্রাম্প। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬ সালের অক্টোবরে ট্রাম্পের সঙ্গে 'সম্পর্কের' বিষয় নিয়ে মুখ না খোলার জন্য স্টর্মিকে ১৩০,০০০ মার্কিন ডলার দিয়েছিলেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্টের আইনজীবী। এরপর ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসে ট্রাম্পের আইনজীবী দাবি করেছিলেন যে স্টর্মিকে নিজের থেকে অর্থ দিয়েছিলেন। ট্রাম্প ওই বিষয়ে কোনও নির্দেশ দেননি।