উত্তরপূর্বের মণিপুরে হিংসার আগুন নিভছেই না। রবিবার সেরাজ্যে নতুন করে একাধিক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। এর জেরে রাজ্যজুড়ে মোট ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মৃতদের মধ্যে একজন পুলিশকর্মীও আছেন বলে জানা গিয়েছে। এছাড়াও হিংসায় গুরুতর জখম হয়েছেন আরও ১২ জন। জানা গিয়েছে, গতকাল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নিরাপত্তা বাহিনীকে গুলি চালাতে হয়েছে জঙ্গিদের ওপর। এদিকে সাধারণ মানুষের ওপরও গুলি চলেছে গতকাল। ইম্ফল উপত্যকার পরিস্থিতি থমথমে।
উল্লেখ্য, গতকালই মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং ঘোষণা করেছিলেন যে বিগত ৪ দিনে ৪০ জন সশস্ত্র কুকি জঙ্গিকে খতম করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। আর সেদিনই নতুন করে হিংসার আগুনে পুড়ল মণিপুরের একাধিক জায়গায়। উল্লেখ্য, বিগত ৩ মে থেকে জাতিগত হিংসার সাক্ষী মণিপুর। মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত ছিল। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি অবস্থা। বর্তমানে ভারতীয় সেনা এবং অসম রাইফেলসের কয়েক হাজার সেনা জওয়ান মোতায়েন রয়েছে সেরাজ্যে। এখনও পর্যন্ত কয়েক হাজার জনকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চূড়াচাঁদপুর, মোরে, কাকচিং এবং কাংপোকপি জেলা থেকে অধিকাংশ মানুষকে সরানো হয়েছে। এরই মধ্যে হিংসায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। এরই মাঝে গত ২৪ ঘণ্টায় ইম্ফল পূর্ব এবং পশ্চিম জেলাগুলিতে বিক্ষিপ্তভাবে হিংসার ঘটনা ঘটেছে নতুন করে। অভিযোগ উঠেছে কুকি ‘জঙ্গিরা’ অটোমেটিক রাইফেল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পশ্চিম ইম্ফলের ফায়েং এলাকায় গুলি চালায় কুকি জঙ্গিরা। সেই ঘটনায় এক পুলিশকর্মীর মৃত্যু হয়েছে এবং অপর এক পুলিশকর্মী জখম হন। সেই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ৬ জন সাধারণ মানুষ। রাজ্যের অন্যান্য জায়গাতেও হিংসার ঘটনা ঘটেছে।
প্রসঙ্গত, ইম্ফাল উপত্যকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হল মৈতেই জনজাতি। তবে তারা সম্প্রতি দাবি তুলেছে যে তাদের তফসিলি উপজাতির তকমা দিতে হবে। তাদের এই দাবির বিরোধ জানিয়েছে স্থানীয় আদিবাসীরা। এই আবহে মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন একটি মিছিলের আয়োজন করেছিল বুধবার। সেই মিছিল ঘিরেই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে চূড়াচাঁদপুর জেলায়। এদিকে তফশিলি উপজাতির ইস্যুর পাশাপাশি সংরক্ষিত জমি এবং সার্ভে নিয়েও উত্তাপ ছড়িয়েছে। এই আবহে গত মাসে এই চূড়াচাঁদপুর জেলাতেই মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের সভাস্থলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল ইন্ডিজেনাস ট্রাইবাল লিডারস ফোরামের সদস্যরা। এদিকে এই জেলা থেকে আদিবাসী বনাম মৈতেইদের এই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য জেলাতেও।