'বিয়ে পুরুষদের ক্ষেত্রে কোনও বাড়তি সুবিধা বা কোনও ক্রুড় জন্তুকে টেনে বের করে আনার লাইসেন্স দেয় না।' ঠিক এই বার্তা দিয়ে বৈবাহিক ধর্ষণ নিয়ে এদিন কর্ণাটক আদালত স্পষ্ট করেছে অবস্থান। বৈবাহিক ধর্ষণ নিয়ে আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, ধর্ষণ 'যদি এটি একজন পুরুষের জন্য শাস্তিযোগ্য হয়, তবে এটি একজন পুরুষের জন্য শাস্তিযোগ্য হওয়া উচিত, সেই পুরুষটি যদি একজন স্বামীও হন, তাহলেও...।'
বৈবাহিক সম্পর্কে স্ত্রীকে যৌনদাসী করার প্রসঙ্গে একটি বৈবাহিক ধর্ষণ মামলা গড়া নিয়ে এদিন যুগান্তকারী একটি রায় দেয় কর্ণাটক হাইকোর্ট। বুধবার হাইকোর্ট তার রায়ে জানিয়েছে, 'ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্ত্রীয়ের ওপর যৌন হামলা তাঁর স্বামীর দ্বারা হলেও, তা ধর্ষণ হিসাবেই পরিগণিত হবে। স্বামীর হাতে স্ত্রীর এই যৌন অত্যাচার স্ত্রীর মানসিক পরিস্থিতিতে গুরুতর প্রভাব ফেলে। শারীরিক ও মানসিক প্রভাব পড়বে তাঁর উপর। স্ত্রীয়ের আত্মায় এটি স্বামীর তৈরি দাগের সমান।' এখানেই শেষ নয়, আদালত বলছে, বহুযুগ পুরনো ধারণা, যে বিয়ের পর একজন স্ত্রীর শরীর,মন, আত্মাতে কেবল তাঁর স্বামীর এক্তিয়ার রয়েছে এমন ধরাণা বিলুপ্ত। আদালাত জানিয়েছে, এটি সম্পূর্ণ পশ্চাদগামী একটি ধারণা। উল্লেখ্য, বিবাহের অন্তর্গত ধর্ষণ ভারতে এখনও কোনও ফৌজদারী মামলা নয়। এই নিয়ে বহু প্রচার চালানোর পরও এই ইস্যুটি এখনও অপরাধমূলক আইনের আওতায় আসেনি।
কর্ণাটক আদালত জানিয়েছে যে, তারা এই বিষয়ে কথা বলতে রাজি নয় যে, বিবাহ অন্তর্ভূক্ত কোনও ধর্ষণ ফৌজদারী মামলার মধ্যে থাকবে কি থাকবে না। তা নিয়ে আইনসভা সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানানো হয়। তবে আদালত শুধুমাত্র স্বামীর বিরুদ্ধে আসা স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে কথা বলতে রাজি। উল্লেখ্য, যে মামলা নিয়ে এই বক্তব্য আদালতের তরফে উঠে আসে, সেই মামলায় স্বামীর বিরুদ্ধে তাঁর স্ত্রীকে যৌনদাসী করে রাখার অভিযোগ ছিল। যেখানে অভিযোগকারী স্ত্রী তাঁর স্বামীকে 'অমানবিক' বলে উল্লেখ করেছেন। মহিলার অভিযোগ, তাঁর সন্তানের সামনে তাঁর স্বামী তাঁকে বিকৃত যৌনক্রীড়ায় মত্ত হওয়ার জন্য জোর করতেন। আর তার জেরেই এই মামলা দায়ের হয়েছে, অভিযোগের কাঠগড়ায় উঠেছেন স্বামী।