রাজ্যে গরুদের বিষয়ে বিশেষ নজর রেখে তৈরি হয়েছে আলাদা গো-মন্ত্রক। অথচ তারপরও বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশে একের পর এক গোশালায় গরুর মৃত্যু ঘিরে নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। গোটা ঘটনার সূত্রপাত ভোপালের এক স্থানীয় বিজেপি নেতাকে ঘিরে। তাঁর গোশালায় পর পর গরুর মৃত্যু ঘিরে রীতিমতো তুঙ্গে রয়েছে পারদ।
ভোপালের ওই বিজেপি নেতার গোশালায় ৬০ টি গরুর মৃত্যু নিয়ে বিতর্ক চরমে ওঠে। এদিকে, শিবরাজ সরকার শাসিত গোটা মধ্যপ্রদেশে ১৩৯২ টি গোশালায় ২০০ টি গবাদি পশুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে নতুন করে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠছে। জানা যাচ্ছে, কিছু ক্ষেত্রে অনাহারে গরু মৃত্যুর খবর উঠে আসছে। আবার কোথাও তাপমাত্রার পতনের জেরে মৃত্যু হচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, যেখানে মধ্যপ্রদেশে আলাদা করে গরুদের দেখভালের দিকে নজর রেখে গঠিত হয়েছে গো মন্ত্রক, সেখানে এভাবে গরুদের মৃত্যু কীভাবে ঘটে যায়? মধ্যপ্রদেশে, ১৩৯২ টি গোশালার মধ্যে ১.৮ লাখ গরু প্রতিপালিত হয়। এই গোশালাগুলি রেজিস্টার্ড। আর এই সমস্ত গোশালা দেখভালের জন্য ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে সরকার। এরপরও আলাদা করে যোগ হয়েছে বাকি ৩০ কোটি। ফলে একদিনে এক একটি গরুর ক্ষেত্রে ব্যায় করা যায় ১৩ টাকা। এরপরও গরুদের অনাহারের বিষয়টি অনেককেই অবাক করেছে। এই ইস্যুতে কংগ্রেস বনাম বিজেপির বিবাদও বারবার উঠে এসেছে মধ্যপ্রদেশের রাজনীতিতে। এদিকে, গৌ সাবারধন বোর্ড মধ্যপ্রদেশে কর ছাড়ের আওতায় গো-উন্নয়নে অনুদানেরও বার্তা দিয়েছিল। তবে তাতে ২.০৯ লাখ টাকাই উঠে এসেছে সর্বমোট। পশুপালন মন্ত্রকের এক অফিসারের মতে 'সাধারণ মানুষ কোনও মতেই আগ্রহ দেখায়নি এই উদ্যোগে।' ওই অফিসারই জানিয়েছেন যে, মধ্যপ্রদেশে বর্তমানে গৌ সাবারধন বোর্ড আর্থিক কমতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে সেভাবেই রাজ্য সরকারও এই নিরিখে বেশ খানিকটা আর্থিক বাঁধার সম্মুখীন। উল্লেখ্য, ভোপালে বিজেপির যে নেত্রী এই গো-উন্নয়নের দায়িত্বে রয়েছেন, সেই নির্মলা দেবী শাণ্ডিল্য জানিয়েছেন, 'আমরা বহুদিন ধরেই আর্থিক সাহায্য পাইনি যাতে ওদের ঠাণ্ডা থেকে রক্ষা করা যায়।' উল্লেখ্য, বহু গরুর মৃত্যু কেবল ঠাণ্ডার কারণেই হয়েছে।
মধ্যপ্রদেশের দেওরিতে অশোক ভাদোরিয়ার গোশালায় ১০০ টি গরুর মৃত্যুর খবর আসছে। তিনি জানিয়েছেন, গত কয়েক মাস ধরে তিনি প্রয়োজনীয় ফান্ড পাচ্ছেন না এই ক্ষেত্রে। তিনি জানান সাড়ে তিন হাজার গরুকে রক্ষার জন্য তাঁর প্রয়োজন ৭০ হাটার টাকা। তবে পশুপালন কল্যাণ মন্ত্রক জানিয়েছে, জেলা কমিটির সুপারিশ মতো তাঁরা সময়ে সময়ে আর্থিক ফান্ড থেকে বরাদ্দও করা হচ্ছে। এদিকে, বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেস বনাম বিজেপির প্রবল বাদানুবাদ শুরু হয়েছে। কংগ্রেসের দাবি তাদের আমলে যেভাবে গো রক্ষায় যত্ন নেওয়া হত বিজেপির আমলে তা হচ্ছে না। অন্যদিকে, বিজেপির দাব লোক দেখানো আবেগ এই ইস্যুতে তৈরির চেষ্টায় রয়েছে কংগ্রেস। তবে রাজনৈতিক বাদানুবাদ ও দোষ , পাল্টা দোষারোপের মাঝেই প্রশ্ন উঠছে, কীভাবে এতগুল প্রাণ চলে গেল? নেপথ্যে আসল দোষের ভাগীদার কে ?