ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান নির্বিশেষে নরেন্দ্র মোদীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ রাখার জন্য। তবে সেই ভাষণ ঘিরে এবার বিতর্ক। আমেরিকার দুই ডেমোক্র্যাট তথা মুসলিম আইন প্রণেতা জানিয়ে দিলেন যে তাঁরা মোদীর ভাষণ শুনতে কংগ্রেসে উপস্থিত হবেন না। জানা গিয়েছে, মোদী বিরোধিতায় সরব হওয়া অন্যতম ডেমোক্র্যাট নেতা হলেন ইলহান ওমর। এই ইলহান এর আগে পাকিস্তান সফরকালে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে গিয়েছিলেন ভারতের আপত্তি সত্ত্বেও। তিনি পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে 'আজাদ' বলেও সম্বোধন করেছিলেন। এহেন ইলহান এবার মোদীর বিরোধিতায় সরব। টুইট করে জানান যে তিনি মোদীর ভাষণ শুনবেন না। তবে ইলহানকে যোগ্য জবাব দিয়েছেন ভারতেরই এক সংখ্যালঘু নেতা।
টুইট বার্তায় ইলহান লেখেন, 'আমি মোদীর ভাষণ শুনতে কংগ্রেসে হাজির হব না। কারণ তাঁর সরকার সেদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর নদমপীড়ন চালান।' সেই টুইটের জবাবে ভারতের সংখ্যালঘু কমিশনের প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান আতিফ রশিদ লেখেন, 'আমিও মুসলিম এবং মোদীর ভারতে আমি স্বাধীন ভাবে বসবাস করি।' রশিদ নিজের টুইটে লেখেন, ‘আমি ভারতের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভারতে আমার ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে স্বাধীনভাবে বসবাস করি। এখানকার প্রতিটি সম্পদের ওপর আমার সমান অধিকার রয়েছে। ভারতে আমি যা চাই সেটা বলার স্বাধীনতা আছে। ভারতে আমি যা চাই তা লিখতে পারি। সেই স্বাধীনতাও আমার আছে। আমি দুঃখিত যে আপনি আপনার ঘৃণামূলক এজেন্ডার কারণে ভারতের ভুল ছবি তুলে ধরছেন নিজের দেশে। আপনার মুখ থেকে বিষ ছড়ানো বন্ধ করুন।’
এর আগে এক টুইট বার্তায় ইলহান লিখেছিলেন, 'প্রধানমন্ত্রী মোদীর সরকার ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের দমন করেছে। হিংসাত্মক হিন্দু জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীগুলোকে উৎসাহিত করেছে। এবং সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের আক্রমণ করেছে। আমি মোদীর ভাষণে যোগ দেব না। মোদীর দমন-পীড়ন ও সহিংসতার রেকর্ড নিয়ে আলোচনা করার জন্য আমি মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলির সাথে একটি ব্রিফিংয়ে অংশ নেব সেই সময়।'
এদিকে মোদীর সফর ঘিরে বাইডেন প্রশাসনের জন্য অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছিলেন ৭৫ জন ডেমোক্র্যাট আইন প্রণেতা। হাউজ রিপ্রেজেন্টেটিভ প্রমীলা জয়পাল এবং ডেমোক্র্যাট সেনেটর ক্রিস ভ্যান হলেনের নেতৃত্বে ৭৫ জন সেনেটর এবং হাউজ রিপ্রেজেন্টেটিভ বাইডেনের কাছে চিঠি লিখেছিলেন। এই আইন প্রণেতাদের আবেদন ছিল, মোদীর সঙ্গে আলোচনার সময় ভারতে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়টি যেন উত্থাপিত করা হয়। এদিকে হিন্দুত্বদাবের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে মোদীকে প্রশ্ন করার দাবি তোলেন সেদেশের বর্ষীয়ান সেনেটর বার্নি স্যান্ডার্সও।