একবার নয়, গত মাসের শেষ লগ্নে দু'বার মুখ পুড়েছে। তারপরও পূর্ব লাদাখে সীমান্ত দ্বন্দ্ব শুরুর পর প্রথম সর্বোচ্চ পর্যায়ের মুখোমুখি বৈঠকে মুখ বাঁচানোর চেষ্টা করল চিন। তারই অঙ্গ হিসেবে সীমান্তে উত্তেজনার দায় ভারতের উপর চাপিয়ে দিল বেজিং।
সাংহাই কর্পোরেশন (এসসিও) সম্মেলনের ফাঁকে মস্কোর একটি বিখ্যাত হোটেলে দু'ঘণ্টা ২০ মিনিট ধরে বৈঠক করেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওয়েই ফেংঘে। ছিলেন দু'দেশের প্রতিরক্ষা আধিকারিকরাও। চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম শিহুয়ার খবর অনুযায়ী, সীমান্তে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, তার সম্পূর্ণ দায় ভারতের উপর চাপিয়েছেন চিনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, ভারত-চিন সীমান্তের বর্তমান উত্তেজনার ‘কারণ এবং সত্যি’ একেবারে স্পষ্ট এবং সেই দায় ভারতের।
ফেংঘে বলেন, ‘চিনা ভূখণ্ডের এক ইঞ্চি জমিও ছাড়া হবে না। জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার ক্ষেত্রে চিনা সেনার সংকল্প, ক্ষমতা এবং আত্মবিশ্বাস আছে।’ তবে সীমান্ত দ্বন্দ্বের ফলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে যে প্রভাব পড়েছে, তা নিয়ে দু'দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের মুখোমুখি বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন ফেংঘে।
যদিও চিনের সেই অভিযোগ বারেবারে উড়িয়ে দিয়েছে ভারত। সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, প্যাংগং সো লেকের দক্ষিণ তীরে চিনা সেনার আগ্রাসী পদক্ষেপের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারত। আলোচনার মাধ্যমেই সীমান্ত সংঘাত মিটিয়ে নেওয়ার পক্ষে সওয়াল করা হয়েছে। একইসঙ্গে প্রতিরক্ষামন্ত্রী স্পষ্ট করে দেন, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।
মান্দারিনে রাজনাথের বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে শিহুয়ার রিপোর্টে বলা হয়, ভারত আশা করেছিল যে দু'পক্ষ ‘দায়িত্বশীল মনোভাব নেবে, যত দ্রুত সম্ভব সীমান্তের (আগ্রামী) বাহিনীকে সরিয়ে নেবে, পরিস্থিতি খারাপ বা জটিল করতে পারে, এমন কোনও পদক্ষেপ এড়িয়ে চলবে এবং মতভেদকে বিবাদে পরিণত করা থেকে এড়িয়ে যাবে। যাতে যত দ্রুত সম্ভব দ্বিপাক্ষিক সামরিক সম্পর্ক উপযুক্ত পথে ফিরে আসবে।’
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, বৈঠকে দু'দেশই নিজের অবস্থানে অনড় থেকেছে। ভারত যেমন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার পক্ষে সওয়াল করেছে, তেমনই সীমান্ত উত্তেজনার জন্য ভারতের ঘাড়ে দোষ চাপিয়েছে চিন। তার জেরে মস্কোর মেট্রোপোল হোটেলে ভারতীয় ও চিনা প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠক অমীমাংসিত রইল বলেই মত সংশ্লিষ্ট মহলের।