একটি ফোন লহমায় শোকে পাথর করে দিয়েছিল গোটা পরিবারকে। বিষন্ন রাতের শেষে দ্বিতীয় ফোনে ফের প্রাণ ফিরে পেলেন বাড়ির সকলে।
বুধবার সকালে ভারতীয় সেনাবাহিনীর থেকে পাওয়া একটি ফোনের দৌলতে অন্ধকার নেমে আসে বিহারের সারন জেলার পারসা ব্লকের দিঘরা গ্রামের এক পরিবারে। খবর পাওয়া যায়, সোমবার পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চিনা ফৌজের সঙ্গে সংঘর্ষে মারা গিয়েছেন সেই পরিবারের ছেলে, সেনা জওয়ান সুনীল কুমার।
খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাহাকার ওঠে বাড়িতে। শোকসংবাদ সারা গ্রামে ছড়িয়ে পড়তে সময় লাগেনি। প্রতিবেশীরা সকলেই সুনীলের ছটফটে হাসিখুশি মেজাজের স্মৃতিচারণ শুরু করেন। পরিবারের সদস্যদের স্বান্তনা দিতে থাকেন অনেকে। বাড়িতে উপস্থিত হয়ে সমবেদনা জানান স্থানীয় বিধায়ক চন্দ্রিকা রাইও।
এর মধ্যেই শহিদের দেহ কী ভাবে বাড়িতে ফেরত পাঠানো হবে, সেই সমস্ত খুঁটিনাটি সেনার তরফে পরিবারে ফোন করে জানানো হয়। শোকের গভীরতা তাতে আরও বাড়তে থাকে। এ ভাবেই কেটে যায় বুধবারের দিন-রাত।
বৃহস্পতিবার দিনের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে ফের ফোন আসে লাদাখ থেকে। কিন্তু সেই ফোনে মুহূর্তের মধ্যে দূর হয়ে যায় সমস্ত গ্লানি ও শোক। পরিবার জানতে পারে, সুনীল নন, রেজিমেন্টের অন্য এক জওয়ান সংঘর্ষে মারা গিয়েছেন এবং তাঁর সঙ্গে সুনীলকে গুলিয়ে ফেলেছেন কর্তৃপক্ষ আর সে কারণেই পরিবারকে তাঁর মৃত্যুসংবাদ পাঠানো হয়েছে। আদতে সুস্থ ও অক্ষতই রয়েছেন সুনীল।
এই ফোনে বাড়ির সকলে আনন্দিত হয়ে উঠলেও শঙ্কা কাটে না সুনীলের স্ত্রী মেনকার। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পরে স্বয়ং সুনীল যখন ফোন করে নিজের সুস্থতার কথা জানান, তখনই আনন্দাশ্রুতে ভাসেন মেনকা। হিন্দুস্তান টাইমস-কে তিনি জানান, ‘গলা শুনেই বুঝতে পারি এ রোশনির বাবা ছাড়া কেউ নয়!’
সুনীল জীবীত আছেন জেনে হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন গ্রামবাসীও। সকলেই মেতে ওঠেন আনন্দে। খবর পেয়ে খুশি হন বিধায়ক চন্দ্রিকা রাইও।