ইজরায়েল ইস্যুতে রাষ্ট্রসংঘে ভোটাভুটি থেকে বিরত থেকেছে ভারত। এই নিয়ে ভারতের ঘরোয়া রাজনীতিতে বিরোধীদের তোপের মুখে পড়তে হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারকে। এরই মাঝে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর বললেন, 'সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবে ভারত। কারণ আমরা নিজেরাও এর ভুক্তভোগী।' রাষ্ট্রসংঘের ভোটের বিষয়টি সরাসরি উত্থাপন না করলেও বিদেশমন্ত্রী বলেন, 'আমরা যদি বলি যে যখন সন্ত্রাসবাদ আমাদের প্রভাবিত করছে, তখনই এটা খুব গুরুতর; আর যখন এটা অন্য কারও সাথে ঘটছে, তখন সেটা গুরুতর নয়, তাহলে আমাদের কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা থাকবে না। আমাদের একটি ধারাবাহিক অবস্থান গ্রহণ করতে হবে।' (আরও পড়ুন: কেরলে খ্রিস্টানদের সম্মেলনে বিস্ফোরণ, দিল্লিতে গাজা নিয়ে প্রতিবাদী বিজয়ন-ইয়েচুরি)
উল্লেখ্য, এর আগে গাজা ইস্যুতে ভোটাভুটিতে ভারত অংশগ্রহণ না করায় প্রিয়াঙ্কা গান্ধী তোপ দেগেছিলেন সরকারকে। আবার সিপিএম গতকাল দিল্লিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এই একই ইস্যুতে। উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে হামলা চালিয়েছিল প্যালেস্তাইনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এরপর থেকে ইজরায়েলও জবাবি হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল। এই আবহে গত পরশু রাষ্ট্রসংঘে একটি প্রস্তাব পেশ করা হয়। সেখানে বলা হয়, ইজরায়েল যেন শান্তির পথে হাঁটে। এই প্রস্তাবের পক্ষে বা বিপক্ষে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে ভারত। ভারত ছাড়াও আরও ৪৩টি দেশ এই প্রস্তাবের ভোটাভুটি থেকে বিরত থাকে। জানা গিয়েছে, জর্ডান এই প্রস্তাবের খসড়া পেশ করেছিল। তবে তাদের সেই প্রস্তাবে হামাসের কোনও উল্লেখ ছিল না। এই আবহে এই ভোটাভুটি থেকে বিরত থাকে ভারত। এদিকে পরে কানাডার তরফে প্রস্তাব পেশ করা হয়, এই খসড়ায় একটি প্যারাগ্রাফ জুড়ে দেওয়া হোক যাতে হামাসের নিন্দা জানানো হোক। কানাডার সেই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় ভারত।
ভোটদান থেকে বিরত থাকা নিয়ে নিজেদের যুক্তি দিয়েছে ভারত। এই নিয়ে রাষ্ট্রসংঘে নিযুক্ত ভারতের ডেপুটি স্থায়ী প্রতিনিধি যোজনা প্যাটেল বলেন, 'এই বিশ্বে সব বিবাদই আলোচনার মাধ্যমে মেটানো উচিত। এই আবহে হিংসা নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকা উচিত রাষ্ট্রসংঘের। হিংসার মাধ্যমে রাজনৈতিক লক্ষ্য পূরণ করলে তা দীর্ঘমেয়াদী হয় না।' ভারতীয় প্রতিনিধি আরও বলেন, 'সন্ত্রাসবাদ একটি রোগ। কোনও সীমান্ত, জাতি বা দেশ মানে না সন্ত্রাসবাদ। তাই যুক্তি যাই হোক না কেন, কোনও হিংসার পক্ষে সায় দেওয়া উচিত না বিশ্বের। আমাদের একত্রিত হয়ে সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সরব হতে হবে। আমরা কোনও ধরনের সন্ত্রাসবাদকেই যেন সমর্থন না করি।' এদিকে এই চলমান সংঘর্ষের জেরে সাধারণ মানুষের মৃত্যু নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারত। এই আবহে উভয় পক্ষকেই দায়িত্ববোধ প্রদর্শনের পরামর্শ দিয়েছিল ভারত।